ক্লান্ত হাইনরিখ ক্লাসেন
ক্লান্ত হাইনরিখ ক্লাসেন

ক্লাসেন জানতেন, ইংলিশরা ভেঙে পড়বে

সংস্করণটা ওয়ানডে। কিন্তু ২০২৩ সালে ৫০ ওভারের এই খেলাটাকেই টি-টোয়েন্টির মতো খেলছেন হাইনরিখ ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান এ বছর ওয়ানডেতে ১৪ ইনিংস ব্যাট করে ৭২৫ রান করেছেন ১৪৫ স্ট্রাইক রেটে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪ শতকের ৩টিই এসেছে এ বছর।

তবে ৩২ বছর বয়সী এই প্রোটিয়া ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসটি এসেছে আজ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৪০ বলে অর্ধশত করা ক্লাসেন কাল শতক পেয়েছেন ৬১ বলে। তার মানে ক্লাসেনের পরের ৫০ রান এসেছে মাত্র ২১ বলে।

তাঁর ৬৭ বলে ১০৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংসের সৌজন্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় গড়ে। সেই বিশাল রানের চাপে ইংল্যান্ডের ইনিংস থেমে যায় ১৭০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৯ রানের বড় জয়ের দিন স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কারটা উঠেছে ক্লাসেনের হাতে।

সেই পুরস্কার নিতে এসে ক্লাসেনও আজকের ইনিংসটিকে তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা বলেছেন, ‘আমি আজ ভালো মারছিলাম। এটাকে আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস বলতেই হয়।’

সেঞ্চুরির পর ক্লাসেন

ব্যাটসম্যানদের জন্য মুম্বাইয়ের উইকেটও ছিল আদর্শ। তবে লম্বা ইনিংস খেলার জন্য ব্যাটসম্যানদের লড়াই করতে হয়েছে মুম্বাইয়ের প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতার সঙ্গে। ক্লাসেনকে কাল ব্যাটিংয়ের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হচ্ছিল। গরম ভুগিয়েছে ইংলিশদেরও। বোলিং ইনিংসের সময় ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের পানিশূন্যতায় পেশিতে টান পড়ে। বিষয়টি লক্ষ করছিলেন ক্লাসেনও। তাই ডেথ ওভারে হাত খুলে খেলার আগে তিনি ইংলিশদের গরমে কাবু হয়ে পড়ার অপেক্ষা করছিলেন।

ম্যাচ শেষে এই কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গে ক্লাসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচণ্ড গরম। এতটাই যে আপনার সব শক্তি শুষে নেয়। আমরা ১ রানের জন্য বেশি জোরে দৌড়াতে চাইনি। শক্তি জমিয়ে রাখতে চাচ্ছিলাম। একেবারে নিশ্চিত না হলে দৌড়ে ২ রান নিইনি। এতটাই গরম।’

পরে যোগ করেন, ‘আমি আর এইডেন (মার্করাম) নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম। আমরা চাচ্ছিলাম আরও দুই-তিন ওভার ক্রিজে পড়ে থাকতে। দেখে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডও অনেকটা চাপে আছে। মনে হচ্ছিল, আমরা যদি আরও দুই-তিন ওভার টিকে থাকি, তাহলে ওদের ভেঙে ফেলতে পারব। এরপর দুটি উইকেট পড়ে যায়। ওরা খেলায় ফিরে আসে। চাঙাও হয়ে ওঠে। তখনো আমি মার্কোকে একই কথা বলছিলাম। দুজন শুধু কিছুক্ষণ টিকে থাকলেই হবে। ওরা শারীরিকভাবে ভেঙে পড়বে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে।’

প্রোটিয়াদের রান বাড়াতে সাহায্য করেছে মার্কো ইয়ানসেনের ব্যাটিংও। ক্লাসেনের সঙ্গে ৭৭ বলে ১৫১ রানের জুটি গড়েন তিনি, ৪২ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। শুধু তা–ই নয়, অন্য প্রান্ত থেকে সতীর্থ ক্লাসেনকে শতক পূর্ণ করতে অনুপ্রাণিতও করছিলেন এই তরুণ পেসার। ক্লাসেনই বললেন, ‘সে যা করেছে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য। নিজের ব্যাটিং নিয়ে সে অনেক পরিশ্রম করেছে, সেটার ফলই পাচ্ছে। সে আমাকে চাঙা করছিল বারবার। বলছিল, “তুমি সেঞ্চুরি না করে এই মাঠ ছাড়বে না।”’

ইয়ানসেনের কথা রেখেছেন ক্লাসেন।