পাকিস্তানের জন্য জয়ের লক্ষ্যটা ছিল বেশ বড়। ৫০ ওভারে ৪০২ রান। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকায় যা একপর্যায়ে নেমে আসে ৪১ ওভারে ৩৪১ রানে। কিন্তু আরেক দফা বৃষ্টি নামায় এই খেলাও হয়নি।
তবে বৃষ্টির আগে নিজেদের কাজটা ভালোমতোই এগিয়ে রেখেছিলেন ফখর জামান–বাবর আজমরা। আর এগিয়ে থাকাতেই বৃষ্টি আইনে ২১ রানে ম্যাচ জিতে গেছে পাকিস্তান।
টুর্নামেন্টে এটি বাবরদের চতুর্থ জয়। এ জয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের আশা বেঁচে রইল পাকিস্তানের। হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের সম্ভাবনাও অবশ্য মিলিয়ে যায়নি। দুই দলেরই ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। রান রেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট তালিকায় নিউজিল্যান্ড চারে, পাকিস্তান পাঁচে। সমান পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান নেমে গেছে ছয়ে।
বৃষ্টি বাগড়া দেওয়ার আগপর্যন্ত পাকিস্তানের সামনে ছিল রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। বিশ্বকাপে সাড়ে তিন শর বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই, কিন্তু ওভারপ্রতি ৮–এর বেশি রান তুলে ৪০১ পেরিয়ে যেতে হতো বাবরদের। আর সেটি করা না গেলে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত আজই।
এমন অসীম চাপের রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই কেইন উইলিয়ামসনের দারুণ ক্যাচের শিকার হন আবদুল্লাহ শফিক। তিনে নামা বাবর আর ফখর জামান প্রথম দিকে দেখেশুনে খেলায় মনোযোগ দেন। তবে রান রেট বেড়ে যেতে থাকায় খুব বেশি ওভার ঝুঁকিবিহীন শট খেলার সুযোগ ছিল না।
পঞ্চম ওভার ট্রেন্ট বোল্টকে চার ও ছয় মেরে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের শুরুটা করেন ফখর। একই ওভারে চার মেরে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে যোগ দেন বাবরও। এই জুটিই পাকিস্তানের রান অষ্টম ওভারে ৫০ আর ১৫তম ওভারে ১০০–তে নিয়ে যান। ২০তম ওভারের মধ্যে ব্যক্তিগত শতক পূর্ণ করে নেন ফখরও। ৬৩ বলে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে ছয়ই হাঁকান ৯টি।
রান তাড়ায় পাকিস্তান যখন ভালো ছন্দ পেয়ে গেছে, তখনই বৃষ্টি নামে ঝমঝমিয়ে। দুই ঘণ্টা খেলা বন্ধের পর যখন শুরু হয়, পাকিস্তানের সামনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪১ রানের। ফখর–বাবর মিলে ৪ ওভারে ৪০ রান তুলে নেওয়ার পর আবারও বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় পাকিস্তানের রান ছিল ২৫.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২০০, যা ডিএলএস পদ্ধতি অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডের ২১ রান বেশি। ফখর অপরাজিত ৮১ বলে ১২৬ রানে, বাবর ৬৩ বলে ৬৬ রানে।
শেষ পর্যন্ত খেলা আর শুরু না হওয়ায় ২১ রানেই ম্যাচ জিতে যায় পাকিস্তান। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ৪০০ রান তুলেও নিউজিল্যান্ডকে মাঠ ছাড়তে হয় হার নিয়ে। এ নিয়ে সর্বশেষ চার ম্যাচেই হারল কিউইরা।
অথচ রাচিন রবীন্দ্রের তৃতীয় শতক (১০৮) আর চোট কাটিয়ে ফেরা উইলিয়ামসনের ৯৫ রানের ইনিংসে ভর করে ভালো সংগ্রহই গড়েছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ১৪১ বলে ১৮০ রান। ১১ থেকে ৪০—মাঝের এই ৩০ ওভারে এ দুজনের সৌজন্যে ৩ উইকেটে ২৪১ রান তোলে নিউজিল্যান্ড, যা এবারের আসরে দলটির সর্বোচ্চ। শেষ ১০ ওভারে গ্লেন ফিলিপস আর মিচেল স্যান্টনারদের সৌজন্যে যোগ হয় আরও ৯৪ রান।
দিন শেষে ব্যাটিংয়ের এই অর্জন নিউজিল্যান্ডের রান রেটই শুধু বাড়াতে পেরেছে। ম্যাচ জিতে দুই পয়েন্ট নিয়ে গেছে পাকিস্তান।
নিউজিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৪০১/৬ (রবীন্দ্র ১০৮, উইলিয়ামসন ৯৫, মিচেল ৪১, চ্যাপম্যান ৩৯; ওয়াসিম ৩/৬০)।
পাকিস্তান: ২৫.৩ ওভারে ২০০/১ (ফখর ১২৬*, বাবর ৬৬*; সাউদি ১/২৭)।
ফল: পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী (ডিএলএস পদ্ধতি)
ম্যাচসেরা: ফখর জামান