দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে আফগানিস্তান
দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে আফগানিস্তান

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাট করে ১০৬ রানে অলআউট হওয়ার পরই মূলত নিশ্চিত হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। এর আগে কখনোই ১২৯ রানের নিচে রান তাড়া করতে গিয়ে ম্যাচ হারেনি আফগানিস্তান, একইভাবে এত কম সংগ্রহ নিয়ে ম্যাচ জিততে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকাও। আজও ব্যতিক্রম হয়নি।

শারজায় প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৬ রানে থামিয়ে অনেকটা হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলেছে আফগানিস্তান। জয়ের সময় ৬ উইকেটের পাশাপাশি আফগানদের হাতে ছিল ১৪৪ বলও। এর ফলে ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর স্বাদ পেল আফগানরা।

আফগানিস্তানকে এ দিন শুরুতেই জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই বোলার পেসার ফজলহক ফারুকি ও স্পিনার মোহাম্মদ গজনফর। এ দুজন মিলেই মূলত গুঁড়িয়ে দেন প্রোটিয়াদের টপ অর্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৬ রান তুলতেই হারায় ৭ উইকেট। এরপর চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান এগিয়ে গেছে ১–০ ব্যবধানে।

ফজলহক ফারুকির উইকেট উদ্‌যাপন

লো স্কোরিং ম্যাচে ১০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই কোনো রান না করে ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এরপর দলীয় ১৫ রানে রহমত শাহও (৮) ফিরে গেলে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু এর পরই সতর্ক হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন দুই আফগান ব্যাটসম্যান রিয়াজ হাসান ও হাশমতউল্লাহ শহীদি। দলীয় ৩৮ রানে ফিরে যান রিয়াজ (১৬)।

তবে অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই দলকে ধীরে ধীরে নিরাপদ অবস্থানে নিতে শুরু করেন। দলীয় ৬০ রানে হাশমতউল্লাহ ফিরলে ভাঙে এ জুটি। তবে এরপর আফগানিস্তানকে আর বিপদে পড়তে দেননি ওমরজাই ও গুলবাদিন নাইব। দুজন মিলে অবিচ্ছিন্ন থেকে আফগানিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। আজমতউল্লাহ ২৫ ও নাইব ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে শারজায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফারুকি ও গজনফরের বোলিংয়ের কোনো জবাবই যেন ছিল না প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের। দলীয় ১৭ রানে রিজা হেনড্রিকসকে (৯) ফিরিয়ে ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা করেন ফারুকি। এরপর প্রোটিয়া টপ অর্ডার ছিল কেবলই আসা–যাওয়ার মিছিলে। দক্ষিণ আফিকার প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন কেবল টনি দে জর্জি (১১) ও কাইল ভেরেন্নে (১০)।

১০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ৭ উইকেটে ৩৬। এই ৭ উইকেটের ৬টিই ভাগ করে নেন ফারুকি ও গজনফর। এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ৫০ রান করাও মনে হচ্ছিল এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার মতো কঠিন কাজ। সেই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলেন উইয়ান মাল্ডার ও বিয়র্ন ফরচুইন। এ দুজন মিলে দলকে নিয়ে যান ৭৫ রানে। এরপর ১৬ রানে ফেরেন ফরচুইন। এক প্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও, অন্য প্রান্তে দলকে আগলে ১০০ রান পার করান মাল্ডার। তাঁর ৫২ রানেই শেষ পর্যন্ত ১০৬ রানের পুঁজি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানিস্তানের হয়ে ফারুকি নেন ৪ উইকেট, ৩ উইকেট নেন গজনফর।

দুর্দান্ত এই জয়ে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাসও পেল আফগানিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শুক্রবার দুপুর ১২টায়।