ইমিগ্রেশন অফিসার প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা শুনলেন। হাসলেন। কিছুক্ষণ পাসপোর্টের পাতা উল্টে দেখলেন। এরপর ক্রিকেটের আলাপ জুড়ে দিলেন। চেন্নাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে বেশি ভিড় না থাকায় আলাপটাও বেশ জমে উঠল। বাংলাদেশ থেকে নাজমুল-মিরাজদের ভারত সফর কাভার করতে আসা ক্রীড়া সাংবাদিকের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনাটা বেশি হওয়ার কথা।
ওই ইমিগ্রেশন অফিসার চেন্নাই টেস্ট দেখতে মাঠে যেতে চান। শনি কিংবা রোববার খেলা দেখতে চিপকে (এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়াম) যাওয়ার ইচ্ছা তাঁর। কিন্তু খেলা তৃতীয় দিনে যাবে তো? এটা নিয়ে তাঁর বিরাট দুশ্চিন্তা। দেখে মধ্যবয়স্ক মনে হওয়া লোকটা নাকি চেন্নাইয়ে খুব কম টেস্টই চতুর্থ দিনে যেতে দেখেছেন।
তাই স্পিনারদের স্বর্গ চিপকে অশ্বিন-জাদেজাদের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে খুব আশাবাদী মনে হলো না। বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান–কীর্তির কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পর অবশ্য একটু মত পাল্টালেন। সাকিব আল হাসানের খোঁজখবর নিলেন। জানতে চাইলেন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের উঠে আসার গল্প।
পেস বোলিংয়ের আলাপে এল মোস্তাফিজুর রহমানের প্রসঙ্গ। সর্বশেষ আইপিএলে মোস্তাফিজ খেলেছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন চেন্নাইয়ের মানুষের মনে। ইমিগ্রেশন অফিসার মাথা ডানে–বাঁয়ে ঘুরিয়ে মোস্তাফিজের বোলিং নিয়ে শুধু এটুকুই বললেন, ‘সুপার বোলার!’ যেতে যেতে একটু সাকিবের প্রশংসাও করলেন। সঙ্গে এটাও বললেন, ‘কিন্তু আমাদের পছন্দ দ্য ফিজ।’
‘আমাদের’ দিয়ে অবশ্যই চেন্নাইয়ের মানুষের কথা বুঝিয়েছেন। চেন্নাইয়ের মানুষের কাছে আরও একজন ক্রিকেটার বেশ প্রিয়। তাঁর নামটা তো অনুমান করার দরকার নেই। চেন্নাইয়ের রাস্তায় নামলেই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দেখতে পাবেন বিলবোর্ডে, দেয়ালে, এমনকি দোকানের নামে! তামিলনাড়ুর ‘থালা’ হচ্ছেন ধোনি। ভারতের সাবেক অধিনায়ককে যে এমন অনেক নামে ডাকেন চেন্নাইয়ের মানুষ, তা তো সবাই জানেন।
তবু প্রথমবার এলে এই শহরের মানুষের ‘থালা-প্রেম’ দেখে আপনি অবাক হবেন। শুধু এই শহরের আইপিএল দলটাকে পাঁচবার শিরোপা এনে দিয়েছেন, সে জন্য নয়; শহরটাকে ধোনি যে আপন করে নিয়েছেন। হোটেলের রিসেপশনে বসা এক লোকের হাতে ধোনির ট্যাটু আঁকা দেখলে তো তা–ই মনে হবে!