মাত্র ৪ টেস্ট দিয়েই কোনো ওপেনারকে বিচার করা ঠিক হবে না। কিন্তু ব্যাটসম্যানের নাম যখন স্টিভেন স্মিথ, তখন তাঁর কাছ থেকে যেকোনো পজিশনে বড় ইনিংস প্রত্যাশা করাই স্বাভাবিক। স্মিথ এখন পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।
বন্ধুপ্রতিম সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর টেস্টে সদিচ্ছায় তাঁর জায়গা নিয়েছেন স্মিথ। মানে, ব্যাটিং অর্ডারের যে পজিশনে তিনি সবচয়ে সফল (গড় ৬১.৫০), সেই ৪ নম্বর জায়গা ছেড়ে হয়ে গেছেন ওপেনার। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করতে নেমে স্মিথ ৮ ইনিংসে করেছেন ১৭১ রান, ব্যাটিং গড় ২৮.৫০; যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ার গড়ের (৫৬.৯৭) প্রায় অর্ধেক।
সদ্য সমাপ্ত নিউজিল্যান্ড সফরের টেস্ট সিরিজে স্মিথ ওপেনিংয়ে নেমে আরও ভুগেছেন। মাত্র ১২.৭৫ গড়ে করেছেন ৫১ রান। স্বাভাবিকভাবেই তাই ওপেনার স্মিথের সমালোচনা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও স্মিথের একসময়ের সতীর্থ টিম পেইন তো তাঁকে খোঁচাই মেরেছেন। নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব হারানো ও দল থেকে চিরতরে বাদ গড়া পেইন ইএসপিএনের ‘অ্যারাউন্ড দ্য উইকেট’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে ভেবেছি, যদি আমি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতাম, তাহলে স্টিভ স্মিথকে কোন পজিশনে ব্যাটিংয়ে দেখতে চাইতাম? আমি প্রতিপক্ষ হলে স্মিথকে ওপেনিংয়েই চাইতাম।’
স্মিথকে খোঁচা দিলেও ওপেনিংয়ে তাঁর সাফল্যও কামনা করেছেন পেইন। একই সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষ দলে খেললে কেন স্মিথকে ওপেনিংয়ে দেখতে চাইতেন, ‘আমি ওকে সফল ওপেনার হিসেবে দেখতে চাই। আমি মনে করি, ও পারবে (সফল হবে)। যেকোনো পজিশনে ওর ভালো ব্যাটিং করার সামর্থ্য আছে। কিন্তু বিপক্ষ দলে খেললে আমি ওকে ওপেনার হিসেবে চাইতাম। কারণ, ওকে আউট করার সেরা সুযোগ থাকত। শুরুতেই আমি আমার সেরা বোলারদের পুরোপুরি চাঙা অবস্থায় পেতাম। একদম নতুন বলে ওদের (স্মিথের সামনে) নিয়ে আসতাম।’
স্মিথ ওপেনিংয়ে উঠে আসায় বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ৪ নম্বর পজিশনে ব্যাট করছেন ক্যামেরন গ্রিন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টে চারে নেমে ১৭৪ রানের অসাধারণ এক ইনিস উপহার দিয়েছেন গ্রিন।
স্মিথকেও এই পজিশনে এমন ব্যাটিং করতে দেখেছেন জানিয়ে ২০১৯ অ্যাশেজের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন পেইন, ‘২০১৯ অ্যাশেজে আমিও ছিলাম, ওর (স্মিথের) সঙ্গে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম। ৪ নম্বর পজিশনে ও তখন সেরা ছন্দে ছিল। মনে হচ্ছিল, ওকে কেউ আউট করতে পারবে না।’
আগামী আট মাস অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ক্রিকেট থেকে দূরে থাকবে। দলটির পরবর্তী টেস্ট ম্যাচ আগামী নভেম্বরে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে। যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ শামি, মোহাম্মদ সিরাজদের নিয়ে গড়া ভারতের দুর্দান্ত পেস বিভাগও স্মিথকে শুরুতে বেকায়দায় ফেলতে চাইবে।
তবে স্মিথকে চারে ফিরে না গিয়ে ওপেনিংয়েই থাকার পরামর্শ পেইনের। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো কিছু বদলে গেছে। স্মিথ সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা এমন তিন বা চার খেলোয়াড়ের একজন, যে যখন যা করতে চায়, সেটা করতে পারে। আমার মতে, ও যেখানে চায় সেখানে ব্যাট করার অধিকার অর্জন করেছে এবং অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ওপেনার হিসেবে দারুণ কিছু করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আমার মনে হয়, ও সুযোগটা কাজে লাগাবে এবং পরবর্তী গ্রীষ্মে ওকে প্রভাব বিস্তার করে খেলতে দেখা যাবে।’