এই মেঘ, এই রোদ— আজ দুপুরে চট্টগ্রামের আবহাওয়া ছিল এমন। সাকিব আল হাসান ও পল স্টার্লিং এমন আকাশের নিচেই আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির টস করেছেন। কিন্তু এরপর নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হয়নি বেরসিক বৃষ্টির কারণে। দুই দফা বৃষ্টিতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট পরে খেলা শুরু হয়। তাতে ম্যাচের দৈর্ঘ্যও কমে আসে ১৭ ওভারে, পাওয়ার প্লে ৫ ওভারের।
খেলা শুরুর পরেও বৃষ্টি নেমেছে। তবে সেটা চার-ছক্কার বৃষ্টি। আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে আরও একবার ঝড় তুললেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে রেকর্ড ১২৪ রান। লিটন বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডও করেছেন আজ। সে মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাত খুলে খেলেছেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। তাতে বাংলাদেশের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২০২।
আইরিশ বোলারদের ওপর ওয়ানডে সিরিজ থেকেই দাপট দেখিয়ে আসছেন লিটন। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও সেটি অব্যাহত ছিল। ২৩ বলে ৪৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আউট হন সেদিন। আজ আরও দ্রুতগতিতে এগিয়েছে লিটনের ইনিংস। আইরিশ বোলারদের পাত্তাই দেননি, মাত্র ১৮ বলে করেন ফিফটি। মেরেছেন ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটিই এখন বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। লিটন ভেঙেছেন মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৬ বছরের পুরোনো ২০ বলে ফিফটির রেকর্ড, ২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।
ভাগ্যও লিটনের পক্ষে ছিল। মার্ক এডেয়ারের লেংথ বলে ডিপ মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জর্জ ডকরেলের হাতে ক্যাচ তোলেন লিটন। কিন্তু জোরের ওপর মারা পুল শটটি ধরতে পারেননি ডকরেল, উল্টো হাত ফসকে বল উড়ে যায় বাউন্ডারির ওপারে। ১৬ রানে পাওয়া জীবন কাজে লাগিয়ে লিটন খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৪১ বলে ৮৩ রানের ঝলমলে ইনিংস। ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানোর ছিল ইনিংসটি।
লিটনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে চাপা পড়েছে রনির ২৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটি। আইরিশ বোলারদের বিপক্ষে লিটনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন তিনিও। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৯১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটিও ছিল চোখে পড়ার মতো। দুজনের বেধড়ক পিটুনিতে নিজেদের পরিকল্পনা থেকে দ্রুত সরে আসে আইরিশরা। সার্কেল ফিল্ডাররা বাউন্ডারি ঠেকানোর চিন্তায় একদম ৩০ গজেই দাঁড়িয়ে ছিল। লিটনরা সেই সুবিধাটা নিয়েছেন দ্রুত পায়ে সিঙ্গেল নিয়ে। বাউন্ডারি মারার জন্য বাজে তো পেয়েছেনই, আর ভালো বলেও রান এসেছে সহজেই।
রানের গতিটা কমেনি দুজন থিতু ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পরও। সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয় শেষের দিকে এসে ২৯ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৮ রান, ৩টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ২৪ রান। ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। দুজনের সৌজন্যে বাংলাদেশের রান হয় ২০২। প্রথমবারের মতো টানা দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই শ ছাড়ানো স্কোর করল বাংলাদেশ।