শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রায় বাঁচামরার ম্যাচে ৩৩.২ ওভারে ১৫৬ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। বেঙ্গালুরুতে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, লাহিরু কুমারা, কাসুন রাজিতাদের তোপে আরেকটি ভুলে যাওয়ার মতো ব্যাটিং পারফরম্যান্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এটিই আগে ব্যাটিং করা কোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোর। ইংল্যান্ডের মতো প্রায় একই অবস্থা থেকে ম্যাচ শুরু করা শ্রীলঙ্কার ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ সম্ভাবনা এখন। বোলিং-ফিল্ডিংয়েও দারুণ উজ্জীবিত ছিল তারা।
টসে জিতে এবার ব্যাটিং নিয়েছিল ইংল্যান্ড, যদিও তাদের পথ হারানোর শুরুটা হতে পারত ইনিংসের প্রথম বলেই। দিলশান মাদুশঙ্কার বলে এলবিডব্লু হতে পারতেন জনি বেয়ারস্টো, রিভিউ না নেওয়াতে সে সুযোগ হারায় শ্রীলঙ্কা। সেটি বাদ দিলে ম্যালানের সঙ্গে বেয়ারস্টোর শুরুটা ভালোই হয়েছিল, প্রথম ৬ ওভারে আসে ৯টি বাউন্ডারি। সপ্তম ওভারে ২০২০ সালের মার্চের পর প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে আউট হন ডেভিড ম্যালান।
সে উইকেটে বাড়ে চাপ, প্রথম পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জো রুটের রানআউট সেটি বাড়িয়ে দেয় আরও। প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে ওই সময়ে ২২ বলে আসেনি কোনো বাউন্ডারি, সেটির চেষ্টায় কাসুন রাজিতাকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে ধরা পড়েন বেয়ারস্টো।
লাহিরু কুমারার ফুল লেংথে চার মেরে শুরুটা ইতিবাচক করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে জস বাটলার, কিন্তু ইংল্যান্ড অধিনায়কের দুঃসময় ফুরায়নি এ দিনও। কুমারার পঞ্চম/ষষ্ঠ স্টাম্প লাইনে ব্যাক অব লেংথের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটকিপার ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন বাটলার। দলে ফেরা লিয়াম লিভিংস্টোন কুমারার লেংথ বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে হন এলবিডব্লু, বাটলার আউট হওয়ার ১২ বল পর।
৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ড তখন ধুঁকছে, এর মধ্যে পরপর ২ ওভারে বাঁচেন স্টোকস। কুমারার বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাদিরা সামারাবিক্রমা আরেকটু হলেই নিয়েছিলেন দুর্দান্ত এক ক্যাচ। তিকশানাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লু হলেও রিভিউ নিয়ে বাঁচেন। স্টোকস ও মঈনের জুটি অবশ্য একটু আশা জুগিয়েছিল তাদের। হিসাব করে সে সময় দুজন শট খেলেছেন, ২১ থেকে ২৩তম ওভারে আসে ৫টি চার। কিন্তু ফিরতি স্পেলে ফেরা ম্যাথুসকে আলগা শট খেলে মঈন আউট হলে সে জুটি ভাঙে আগেভাগেই।
পরের ওভারে ক্রিস ওকসের উইকেট ইংল্যান্ডকে নিয়ে যায় খাদের কিনারে। সে উইকেট নিয়ে অবশ্য খুশি ছিলেন না ইংলিশরা। রাজিতার বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলেছিলেন ওকস, বাঁদিকে ঝুঁকে সেটি নেন সামারাবিক্রমা। মাঠের আম্পায়াররা নিশ্চিত ছিলেন না, রিপ্লে তেমন পরিষ্কার না হলেও বলের নিচে সামারাবিক্রমার আঙুল ছিল মনে করে আউটই দেন টেলিভিশন আম্পায়ার আহসান রাজা। ইংল্যান্ডের তখন আরেকটি স্টোকস-মিরাকলের আশা, কিন্তু সেটি আসেনি। কুমারার শর্ট বলে আগেভাগেই পুল করেছিলেন, মিড উইকেটে ছোট বাউন্ডারিও পার হয়নি তাতে। ৭৩ বলে ৪৩ রান-ইংল্যান্ডকে ওই খাদ থেকে টেনে তোলার সামর্থ্য ছিল না সে ইনিংসের।
ইংল্যান্ডের অবস্থা কেমন এলোমেলো, সেটি ফুটে ওঠে আদিল রশিদের রানআউটে। তিকশানার বল মিস করেছিলেন উইলি, যেটি যায় মেন্ডিসের হাতে। রশিদ তখন নন স্ট্রাইক প্রান্তে ক্রিজের বাইরে, মেন্ডিস যে থ্রো করতে পারেন, সেটি যেন মাথাতেই আসেনি তার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ উইকেট জুটিতে তবুও কিছু রান করেছিল ইংল্যান্ড, আজ হয়নি সেটিও।