বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা পেতে গতকাল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলও হেঁটেছে সেই পথে। আজ বিকেলে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুশীলন বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা। দিল্লির বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা পেতে দলীয় চিকিৎসকের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সোমবার এই মাঠেই মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।
দিল্লির কিছু জায়গায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী দূষণের স্কোর ৪০০ টপকে গেছে। আইসিসিও এই দূষণ পর্যবেক্ষণ করছে। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির এক মুখপাত্র ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘অংশ নেওয়া সব দলকে ভালো রাখার ব্যাপারটি দেখভাল করছে আইসিসি এবং আমাদের আয়োজক বিসিসিআই। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বিশেষজ্ঞ মতামত নিচ্ছি।’
ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিন বায়ুদূষণকে আবহাওয়ার মতোই আমলে নেওয়া হবে। মানে বৃষ্টি কিংবা অন্য কারণে ম্যাচ যেমন বন্ধ থাকে কিংবা বাতিল হয়, তেমনি বায়ুদূষণের ব্যাপারটিও একইভাবে বিবেচনা করা হবে। ম্যাচ অফিশিয়ালরা আগে বুঝবেন, বায়ুদূষণের মধ্যে কন্ডিশন খেলার উপযোগী কি না।
ভারত সরকারের এয়ার কোয়ালিটি ট্র্যাকিং ওয়ার্নিং সিস্টেম জানিয়েছে, শনিবার একিউইআইয়ের মাত্রা অনেক বেশি হবে এবং এই মাত্রা শঙ্কাজনক জায়গায় থাকতে পারে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ছয়টায় অনুশীলন সেশন রয়েছে বাংলাদেশের। রোববার অনুশীলনের সূচি ঠিক করা আছে স্থানীয় সময় বেলা দুইটা থেকে।
বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা পেতে গতকাল বাংলাদেশ দল এই স্টেডিয়ামে অনুশীলন বাতিল করে। এ নিয়ে বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেছিলেন, ‘আমাদের আজ অনুশীলন ছিল। কিন্তু কন্ডিশন বাজে হয়ে আসায় আমরা ঝুঁকি নিইনি। অনুশীলনের জন্য আমরা আরও দুই দিন পাব। কারও কারও কাশি হয়েছে। তাই ঝুঁকি তো থাকেই। আমরা কেউ অসুস্থ হতে চাই না। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে কি না, সেটাও জানি না। তবে আগামীকাল অনুশীলন আছে। ৬ নভেম্বরের ম্যাচের জন্য আমরা সব খেলোয়াড়কে ফিট চাই।’
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বায়ুদূষণের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। শহরটির কিছু জায়গায় একিউআই অনুযায়ী দূষণের স্কোর ৪০০ টপকে যাওয়ায় স্কুল দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নির্মাণকাজ এবং রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচলেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
শ্রীলঙ্কা দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় এর আগে দিল্লির বায়ুদূষণের মধ্যে ক্রিকেট খেলেছেন। ২০১৭ সালে এই মাঠে টেস্ট খেলেছে শ্রীলঙ্কা। সে ম্যাচে কয়েকজন খেলোয়াড় বমি করতে করতে মাঠ ছেড়েছিলেন। অন্যদের শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় মাঠেই চিকিৎসাসেবা নেন। শ্রীলঙ্কা দলের অন্তত পাঁচ ক্রিকেটার মাস্ক পরে ফিল্ডিং করেছিলেন।
বিশ্বকাপে বায়ুদূষণের প্রভাব অবশ্য এটিই প্রথম নয়। এর আগে মুম্বাইয়ের বায়ু নিয়ে কথা বলেছিলেন ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান জো রুট, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে নিশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
দিল্লি ও মুম্বাইয়ের বায়ুদূষণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ‘কোনো ভয় ছাড়া’ বাঁচতে পারে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেন রোহিত। ভারতের ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিসিআই) জানিয়েছে, বায়ুদূষণ রোধে মুম্বাই ও দিল্লিতে বাকি থাকা ম্যাচগুলোতে আলোক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে না।