বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের রোমাঞ্চটা কেমন, তা নিউজিল্যান্ডের ভালোই জানা। প্রথম চক্রের শিরোপাটা তো তাদের ঘরেই উঠেছে। দ্বিতীয় চক্রে অবশ্য নিউজিল্যান্ডের পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত ছিল না।
বাংলাদেশ বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ দিয়ে নিউজিল্যান্ড তাদের তৃতীয় চক্র শুরু করেছে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে। সে জন্য বিদেশের মাটিতে তাদের কিছু ম্যাচ জিততেই হবে। পাশাপাশি ঘরের মাঠেও দেখাতে হবে আধিপত্য।
বিদেশের মাটিতে কিউইদের নিশ্চিত জেতা ম্যাচের তালিকায় বাংলাদেশের মাটিতে দুটি টেস্টও ছিল। নাজমুল হোসেনের বাংলাদেশ দল সেটি হতে দেয়নি। সিলেট টেস্ট জিতে নিউজিল্যান্ডের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে নিউজিল্যান্ড দলের ড্রেসিংরুমের ছবিটা ছিল হতাশায় মাখা। এমন ম্যাচ হারের পর নিজেদের ভুল নিয়েই বেশি আলোচনা হওয়ার কথা। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদি সেটি না করে উল্টো বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসে হারের ব্যাখ্যায় সাউদি বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের হারের কারণ অবশ্যই আলোচনা করব। তবে আপনাকে আগে দেখতে হবে বাংলাদেশের বোলাররা কীভাবে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে, লম্বা সময় ধরে। আমরাও তা করেছি কিছু কিছু সময়। তবে সেটা লম্বা সময় ধরে করতে পারিনি। ব্যাটিংয়ের কথা যদি বলি, আপনি চাইবেন জুটি গড়তে। শান্তর ইনিংস দেখুন, সে দারুণ খেলেছে। ইনিংসটা এসেছেও দারুণ সময়ে। সুতরাং আমাদের দেখার আছে অনেক কিছু। আগামী কয়েক দিন সে জন্য সময় আছে।’
বাংলাদেশ দলের বোলারদের প্রসঙ্গটা আরও একবার এসেছে সংবাদ সম্মেলনে। বোলিংয়ে তাইজুল-মিরাজদের নিয়ন্ত্রণের প্রশংসা করতে গিয়ে সাউদি বলেছেন, ‘ওরা খুব ভালো বোলিং করেছেন, দারুণ নিয়ন্ত্রণ তাদের। আমরা জানি যে এই অঞ্চলে যত সময় গড়ায় ব্যাটিং তত কঠিন হয়। ওদের কিছুটা বাঁক দরকার ছিল, কিছু বাউন্সের অধারাবাহিকতাও। আমরা এটা জানতাম। এসব ক্ষেত্রে জুটি গড়তে হয়। আমাদের হয়তো দুই-একটি জুটি দরকার ছিল। আর নিজেরা লম্বা সময় চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট হার সাউদির জন্য অবশ্য নতুন নয়। মাউন্ট মঙ্গানুইতে সাউদি, বোল্ড, জেমিসন ও ওয়াগনারে সাজানো চার পেসারের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেও গত জানুয়ারিতে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। নিজেদের মাটিতে কিউইদের হারিয়েছে নাজমুলের দল।
বাংলাদেশ টেস্ট দল যে ধীরে ধীরে উন্নতি করছে, এই দুটি জয় তার প্রমাণ। সাউদিও বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের মাটিতে সব সময় কঠিন দল। এই কন্ডিশনে খেলে ওরা অভ্যস্ত। আর নিউজিল্যান্ডে আমরা লম্বা সময় ধরেই ভালো করছিল। কন্ডিশন যেমনই হোক, কোনো হারই আদর্শ নয়। তবে এই জয় বাংলাদেশের উন্নতির একটা লক্ষণ।’