ভারতের মাটিতে কখনো টেস্ট সিরিজ জয় দূরে থাক, গত ৩৫ বছরে কোনো টেস্ট ম্যাচেও জয় ছিল না নিউজিল্যান্ডের। সেই নিউজিল্যান্ড সম্প্রতি ভারত সফরে রোহিত-কোহলি-বুমরাদের ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দিয়েছে।
ভারতে কিউইদের ইতিহাস গড়া সিরিজে বড় অবদান রাখেন উইল ইয়াং। এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩ ম্যাচে ৪৮.৮০ গড়ে করেন ২৪৪ রান। সিরিজের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ইয়ংয়ের হাতেই ওঠে সিরিজসেরার পুরস্কার। তবে এক মাসও পার হয়নি, এর মধ্যেই নিউজিল্যান্ডের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন ইয়াং।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগামীকাল ভোরে শুরু হতে যাওয়া ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে খেলা হচ্ছে না ইয়াংয়ের। ভারত সফরের আরেক নায়ক মিচেল স্যান্টনারেরও খেলার সম্ভাবনা কম। ওই সিরিজে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এজাজ প্যাটেলকে তো এই সিরিজেই স্কোয়াডেই রাখা হয়নি।
এজাজকে বাদ দেওয়ার বড় কারণ নিউজিল্যান্ডের পিচ পেসবান্ধব হওয়ায় স্কোয়াডে বেশি স্পিনারের দরকার নেই। একই কারণে ক্রাইস্টচার্চে দর্শক হয়ে থাকতে হতে পারে বাঁহাতি স্পিনার স্যান্টনারকে। তবে ইয়াংয়ের না থাকার কারণ কেইন উইলিয়ামসনের ফেরা।
গত সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজে কুঁচকিতে চোট পান উইলিয়ামসন। চোট নিয়ে ভারতে গেলেও খেলতে পারেননি কোনো ম্যাচ। এক যুগের বেশি সময় ধরে কিউই ব্যাটিং লাইনআপে আস্থা হয়ে থাকা উইলিয়ামসন এখন পুরোপুরি সুস্থ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবেন তাঁর পছন্দের পজিশন তিনে, ভারত সফরে যে পজিশনে খেলেছেন ইয়াং। তাই সিনিয়রকে জায়গাটা ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
ক্রাইস্টাচার্চ টেস্টের একাদশে ইয়াংয়ের না থাকার বিষয়টি আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম, ‘সে (ইয়াং) ভারতে অসাধারণ খেলেছে এবং আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সে সর্বশেষ সিরিজে যা করেছে, তা এখানে বিবেচনায় নেওয়া যাচ্ছে না।’
ল্যাথাম আরও বলেন, ‘কেইনের (উইলিয়ামসনের) মতো একজনের ফেরা স্বাভাবিকভাবেই দলকে অনুপ্রাণিত করে, বিশেষ করে তাঁর সামর্থ্যের ব্যাপারটা। তার (ইয়াংয়ের) দলের প্রতি নিবেদন অনেক। সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন ছিল। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আপনাকে যখন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন বুঝবেন আপনার দল ভালো অবস্থানে আছে। ইয়াংয়ের জন্য খুব খারাপ লাগছে। তবে কেইন ফেরায় রোমাঞ্চিত।’
এই ম্যাচ দিয়ে নাথান স্মিথের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে, সেটাও নিশ্চিত করেছেন ল্যাথাম। ২৬ বছর বয়সী পেসার স্মিথ নিউজিল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত দুটি ওয়ানডে খেলেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪৪ উইকেট।
নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের নামকরণ করা হয়েছে দুই দেশের অকালপ্রয়াত দুই ব্যাটসম্যান মার্টিন ক্রো ও গ্রাহাম থর্পের নামে—ক্রো-থর্প ট্রফি। সেই ট্রফি বানানোও হয়েছে ক্রো ও থর্পের ব্যাটের অংশবিশেষ দিয়ে।
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট তালিকার চারে আছে নিউজিল্যান্ড। ৩ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই করতে পারলে আগামী বছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা থাকবে কিউইদের। এই সিরিজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরে যাবেন অভিজ্ঞ পেসার টিম সাউদি।
টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে, কেইন উইলিয়ামসন, রাচিন রবীন্দ্র, ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস, টম ব্লান্ডেল (উইকেটকিপার), নাথান স্মিথ, টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি ও উইল ও’রুরক।