মোহাম্মদ নেওয়াজের বলটি কি ‘নো’ ছিল, বিরাট কোহলি ফ্রি হিট বলে বোল্ড হওয়ার পর দৌড়ে ৩ রান নিলেন কীভাবে?
মেলবোর্নের ভারত-পাকিস্তান রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচ ঘিরে এমন প্রশ্ন অনেকের। সমর্থকেরা শুধু নন, নো বল আর ফ্রি হিট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ব্র্যাড হগ, পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতারও।
প্রথম ঘটনা ছিল ২০তম ওভারের তৃতীয় বলের পর। ভারতের তখন ৩ বলে প্রয়োজন ১৩ রান। নেওয়াজের উঁচুতে আসা ফুলটসকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারেন কোহলি। ছক্কার সঙ্গে আম্পায়ারের নো বলের সংকেতে ওই বলেই আসে ৭ রান। তবে ‘নো’ বলের সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি বাবর আজম।
আম্পায়ারদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে এগিয়ে যান পাকিস্তান অধিনায়ক। তবে ‘নো’ বলের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
আইসিসির নিয়ম যা বলে: আইসিসির রুল বুকের ৪১.৭.১ ধারা বলছে, ‘যদি কোনো ডেলিভারি পিচ না করে পপিং ক্রিজে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্রাইকারের কোমর উচ্চতার ওপরে ওঠে, আম্পায়ার তাৎক্ষণিকভাবে “নো” বলের সংকেত দেবেন।’
রিপ্লেতে দেখা গেছে, শট খেলতে কিছুটা এগিয়ে গেলেও কোহলির পেছনের পা পপিং ক্রিজে ছিল।
‘নো’ বলের সূত্র ধরে পরের বলটি ছিল ফ্রি হিট। এই বলে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি কোহলি। বল আঘাত হানে স্টাম্পে—বোল্ড। নাটকীয়তার অবশ্য সেখানেই শেষ নয়। স্টাম্পে লেগে বল চলে যায় থার্ড ম্যানে, সেখান থেকে শাহিন শাহ আফ্রিদি ফিল্ডিং করে পাঠানোর আগেই দৌড়ে ৩ রান নেন কোহলি-কার্তিক।
এই বল নিয়ে বিতর্ক দুই ধরনের। কোহলি কি আউট হয়েছিলেন? আউট যদি না–ও হন, স্টাম্পে আঘাত হানার মাধ্যমেই তো বল ‘ডেড’ হয়ে গেছে; রান কীভাবে হয়েছে?
প্রথমে দেখা যাক আউট কি না।
আইসিসির নিয়ম যা বলে: প্লেয়িং কন্ডিশনের ২১.১৯.২ ধারা বলছে, ‘ফ্রি হিটে ব্যাটসম্যান আউট হবেন, যদি “নো” বলে যেসব আউট হয়, সে ধরনের উপাদান পাওয়া যায়। এমনকি ফ্রি হিটটি যদি ওয়াইডও হয়।’
‘নো’ বলে ব্যাটসম্যান আউট হতে পারেন তিনভাবে। রানআউট, অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড বা ফিল্ডিংয়ে বাধা এবং বলে ডাবল বা ট্রিপল হিটে।
কোহলি এসবের কিছুই হননি।
এবার দেখা যাক ফ্রি হিটে বোল্ড হওয়ার পর বাই রান নেওয়া বৈধ ছিল কি না?
ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এমসিসির বিধি বলছে, ‘একটি বল “ডেড” ঘোষণা করা হবে যখন বলটি উইকেটকিপার বা বোলারের হাতে যাবে অথবা বাউন্ডারি হবে। ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও বলটি ডেড হবে।’
ফ্রি হিট হওয়ায় এই বলে আউট হননি কোহলি। বল উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান বা বোলার নেওয়াজের কাছেও যায়নি। যে কারণে স্টাম্পে লেগে থার্ড ম্যানে চলে যাওয়ায় সেখান থেকে ফিরে আসার আগেই ৩ রান নিয়ে নিতে পেরেছেন ব্যাটসম্যানরা।