রেকর্ড–ছোঁয়া সেঞ্চুরির পর সূর্যকুমার যাদব
রেকর্ড–ছোঁয়া সেঞ্চুরির পর সূর্যকুমার যাদব

আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি

সেঞ্চুরির রেকর্ডে রোহিত–ম্যাক্সওয়েলের পাশে সূর্যকুমার, ভারতের বড় জয়

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রোহিত শর্মা নিজের চতুর্থ ও সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন ২০১৮ সালের নভেম্বরে। ১৬ দিন আগেও এককভাবে রেকর্ডটি উপভোগ করেছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান। গত মাসের ২৮ তারিখে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেই রেকর্ডটিতে ভাগ বসান অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে রেকর্ড আরেকজন সঙ্গীও পেয়ে গেলেন রোহিত। রোহিতেরই সতীর্থ সূর্যকুমার যাদবও পেয়ে গেছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সেঞ্চুরি।

২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রোহিতের সর্বশেষ সেঞ্চুরির প্রায় আড়াই বছর পর যার অভিষেক সেই সূর্যকুমার ৬০ ম্যাচ খেলেই পেয়ে গেলেন চতুর্থ সেঞ্চুরি। রোহিত চার নম্বরটা পেয়েছিলেন ৮৬ ম্যাচে, ম্যাক্সওয়েল শততম ম্যাচেই পেয়েছেন চতুর্থ সেঞ্চুরিটি।

সূর্যকুমারের রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে বড় ব্যবধানে জিতেছে তাঁর দল ভারতও। জোহানেসবার্গে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিটা ভারত জিতেছে ১০৬ রানে। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজটা ড্র হলো ১-১-এ। প্রথম ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচটা জিতেছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা

সিরিজের ট্রফিটা ভাগাভাগি করেই হাতে নিলেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার ও দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম

ভারত করেছিল ৭ উইকেটে ২০১ রান। রান তাড়ায় ১৩.৫ ওভারেই অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৬ রানের জয়টি টি-টোয়েন্টিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ভারতের সবচেয়ে বড় জয়।

বৃহস্পতিবার টসে হেরে ব্যাটিং পায় ভারত। প্রথম দুই ওভারে ২৯ রান উঠলেও তৃতীয় ওভারে দারুণভাবে ফিরে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে শুবমান গিল (৬ বলে ৮ রান) ও তিলক বর্মাকে (১ বলে ০) ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ।

জোড়া আঘাতের পর উইকেটে আসেন সূর্যকুমার। ওপেনার যশস্বী জয়সোয়ালকে নিয়ে এরপর ১১.৩ ওভারে ১১২ রানের জুটি ভারত অধিনায়কের। ১৪তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়া জয়সোয়াল ৪১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬০ রান।

ছক্কা মারছেন যশস্বী জয়সোয়াল

জয়সোয়ালের বিদায়ের পর রিংকু সিংকে নিয়ে ৪৭ রান যোগ করেন সূর্যকুমার। ১০ বলে ১৪ রান করেছেন রিংকু। ৩২ বলে ৫০ ছোঁয়া সূর্যকুমার পরের ৫০ রান করেন আর মাত্র ২৩ বলেই। ৫৫তম বলে চতুর্থ সেঞ্চুরিটা করার পরের বলেই আউট সুর্যকুমার। তাঁর ৫৬ বলের ইনিংসটা সাজানো ৭টি চার ও ৮টি বিশাল ছক্কায়। লিজাড উইলিয়ামসের করা শেষ ওভারটায় ভারত ৩ উইকেট হারালেও ৯ রান তুলে ২০০ পেরিয়ে যায়।  

রান তাড়ায় মোহাম্মদ সিরাজের করা প্রথম ওভারে কোনো রান নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দশম ম্যাচে এসেই প্রথম মেডেন পেলেন এই ভারতীয় পেসার।

ডেভিড মিলারকে ফেরানোর পর বোলার কুলদীপ যাদবকে (ডান থেকে দ্বিতীয়) ঘিরে সতীর্থদের উদ্‌যাপন

দ্বিতীয় ওভারেই ভারতকে প্রথম উইকেটটি এনে দেন মুকেশ কুমার। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৩.৫ ওভারেই থেমে যায় প্রোটিয়া ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২৫ বলে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন ডেভিড মিলার।

১৪তম ওভারে পাঁচ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেওয়া কুলদীপ যাদব এর আগেও নেন ২ উইকেট। ২.৫ ওভারে ১৭ রানে ৫ উইকেট—আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় স্পিনারের এটিই সেরা বোলিং। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকবার ৫ উইকেট নিলেও সেদিন কুলদীপ রান খরচ করেছিলেন ২৪টি।

এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দুদল। ১৭ ডিসেম্বর প্রথম ম্যাচটি হবে হবে জোহানেসবার্গেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ২০ ওভারে ২০১/৭ (সূর্যকুমার ১০০, জয়সোয়াল ৬০, রিংকু ১৪; মহারাজ ২/২৬, উইলিয়ামস ২/৪৬)।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩.৫ ওভারে ৯৫ (মিলার ৩৫, মার্করাম ২৫, ফেরেইরা ১২; কুলদীপ ৫/১৭, জাদেজা ২/২৫)।

ফল: ভারত ১০‍৬ রানে জয়ী।

সিরিজ: ৩–ম্যাচ সিরিজ ১–১ ড্র।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সূর্যকুমার যাদব