হারমানপ্রীতের শাস্তি কম হয়েছে, মনে করেন আফ্রিদি

বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে ভারতেই ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছেন হারমানপ্রীত কৌর। আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তুষ্টির জেরে ম্যাচের ভেতরে ও ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণীতে তিনি যেসব আচরণ করেছেন, সেসবের দায়ে আইসিসি শাস্তিও দিয়েছে। আচরণবিধির দুটি ধারা ভঙ্গের দায়ে হারমানপ্রীতকে ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা ও পরবর্তী দুটি ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা যথাযথ হলেও আর্থিক জরিমানা কম হয়ে গেছে বলে মনে করেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। তাঁর মতে, হারমানপ্রীত যেসব আচরণ করেছেন, মেয়েদের ক্রিকেটে এ ধরনের ঘটনা দেখা যায় না। আর্থিক শাস্তি হিসেবে ম্যাচ ফির পুরোটা জরিমানা করা যথাযথ হতো।

হারমানপ্রীতের যে আচরণ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানা, সেটি গত শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত তৃতীয় ওয়ানডের। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর ভারতীয় অধিনায়ক তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন। এরপর আম্পায়ারের উদ্দেশে ক্ষোভ ঝাড়েন। এমনকি মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দর্শকদের দিকে তাকিয়েও কিছু একটা বলেছেন। সেখানেই শেষ হয়নি। পরে ম্যাচের পুরস্কার বিতরণীতেও তাঁর শরীরী ভাষায় ছিল তাচ্ছিল্যভাব।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা করেন হারমানপ্রীত

আম্পায়ারিংকে ‘পীড়াদায়ক’ উল্লেখ করে ভবিষ্যতে খেলতে এলে বিষয়টি মাথায় রেখে আসবেন বলে মন্তব্য করেন হারমানপ্রীত। শেষ ম্যাচ টাই হওয়ায় তিন ম্যাচের সিরিজটি ১-১ সমতায় শেষ হয়। দুই দলের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ফটো সেশনের সময় আরও ঔদ্ধত্য দেখান হারমানপ্রীত। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানাকে উদ্দেশ্য করে আম্পায়ারকে ডাকতে বলেন। তাঁর মতে, আম্পায়ারের কারণেই বাংলাদেশ ম্যাচ টাই করতে পেরেছে। ফটো সেশনে আম্পায়ারেরও থাকা উচিত।

অস্বস্তিকর সেই পরিবেশে বাংলাদেশ দল ছবি না তুলে ড্রেসিংরুমে চলে যায়। ভারতীয় অধিনায়কের এমন দৃষ্টিকটু আচরণের সমালোচনা করেন দলটির সাবেক ক্রিকেটার আনজুম চোপড়া, ভারতের বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড় মদন লাল।

হারমানপ্রীতের এই আচরণের প্রসঙ্গ উঠে আসে পাকিস্তানের সামা টিভির ‘গেম সেট ম্যাচ’ অনুষ্ঠানে। সেখানে উপস্থিত সঞ্চালক পুরো ঘটনা তুলে ধরলে আফ্রিদি বলেন, এখানে শাস্তি হওয়া উচিত। পরে এরই মধ্যে ৭৫ শতাংশ ম্যাচ ফি শাস্তি ঘোষণা হয়েছে জানালে আফ্রিদি ‘কম হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক যোগ করেন, ‘আমি ঘটনাটা দেখিনি। তবে আপনার কাছে যা শুনলাম তাতে ১০০ ভাগ ম্যাচ ফি জরিমানা হয়, সঙ্গে ১-২টা ম্যাচ সাসপেন্ড।’

হারমানপ্রীতের মতো আচরণ মেয়েদের ক্রিকেটে নজিরবিহীন উল্লেখ করে আফ্রিদি এটিকে সীমা-ছাড়ানো বলেও অভিহিত করেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমরা অতীতেও দেখেছি। তবে মেয়েদের ক্রিকেটে এ ধরনের ঘটনা দেখা যায় না। এটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। এটা আইসিসির আয়োজনে বড় টুর্নামেন্ট ছিল। এই শাস্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য একটা উদাহরণ তৈরি করা হলো। ক্রিকেটে আগ্রাসী হওয়া যায়, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনই ভালো। তবে এখানে ব্যাপারটা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’