এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জেতে ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল
এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জেতে ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল

দল নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট

দল নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির (এআই) সাহায্য নিচ্ছে ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট দল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের কোচ জন লুইস পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি সিরিজের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। এ সময় তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ মেয়েদের অ্যাশেজ সিরিজ থেকে দল নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ২২ জুন থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত একাধিক সংস্করণের সেই সিরিজে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড নারী দল। তবে একমাত্র টেস্টটি হেরেছিল হিদার নাইটের দল।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগে (ডব্লিউপিএল) ইউপি ওয়ারিয়র্জের কোচের দায়িত্বে থাকার সময় প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসেন লুইস।

মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে পড়েছে ইংল্যান্ড

সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে হতে যাওয়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতিতে আধুনিক এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মনে করেন লুইস, ‘এটা এমনকিছু যেটা আমি দেখেছি এবং এটা নিয়ে ভেবেছিও। ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলে এটা (এআই) গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছু যোগ করতে পারে। যেটা বলতে চাচ্ছি, আমরা এটা দিয়ে দল নির্বাচন করি না, তবে এটা নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটা অংশ, যা ভবিষ্যতে কী হতে পারে, সেটা বুঝতে সাহায্য করে।’

লুইস এরপর বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে ম্যাচ–আপের ক্ষেত্রে আমরা গত অ্যাশেজে খুব সফলভাবে এটা ব্যবহার করেছি। তবে একটি বিষয়ের অভাব অনুভব করি, সেটা হলো মেয়েদের ক্রিকেটে ঐতিহাসিক তথ্য–উপাত্তের অনুপস্থিতি। তবে অনেক অনেক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেহেতু আমরা আরও সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, বিশেষ করে ফ্র্যাঞ্চাইজি পর্যায়ে, আশা করি, সামনে আরও নিখুঁত তথ্য–উপাত্ত পাওয়া যাবে।’

খেলাধুলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার বৈশ্বিকভাবেই শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এরই মধ্যে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। গত মাসে অলিম্পিকের আয়োজকেরা তাদের পরিকল্পনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা জানিয়েছিলেন। বিচারকদের সাহায্য করতে এবং প্রতিভা খুঁজে বের করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা জানানো হয়। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) চেয়ারম্যান টমাস বাখ এই প্রযুক্তিকে ‘খেলাধুলায় বিপ্লব’ বলেছিলেন।

অনুশীলনে ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল

লন্ডনের ক্রীড়াভিত্তিক তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান ‘প্রসপেক্ট’ লুইস এবং তাঁর কোচিং স্টাফের সঙ্গে কাজ করছে। প্রসপেক্ট এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘ওভাল’ রাগবিতে নেতৃত্বস্থানীয় তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান। ইংল্যান্ড রাগবি দলের কোচ স্টিভ বোর্থউইকের সঙ্গে কাজও করেছে ওভাল। প্রসপেক্ট এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্য কীভাবে নেওয়া হয়, সেটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লুইস বলেন, ‘আমি একাধিক আলাদা আলাদা স্কোয়াড প্রতিষ্ঠানটির কাছে পাঠাই। একাদশের সমন্বয় কী কী ছকে হতে পারে, সেগুলোও পাঠাই। এটার ওপর নির্ভর করে ওরা প্রতিটি স্কোয়াডকে আড়াই লাখ পরিস্থিতিতে (সিম্যুলেশনস) ফেলে পর্যালোচনা করে দেখে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এটা পরিচিত এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হয়।’

লুইস জানিয়েছেন, দুটি স্বল্প ব্যবধানের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি উপকারী। তবে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে তিনি মানুষের মতামতকেই প্রাধান্য দেন। ‘ক্রিকেটীয় চোখ’ এর বিকল্প কিছু নেই বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন লুইস। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে তিনি সরাসরি বলেছেন, ‘এটা কি কখনো এমন কিছু হবে, যা দল নির্বাচন করবে? আমার মতে, না। অন্য কোচেরা ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারত নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, সামনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে শুরু হবে মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

বার্মিংহামে ১১ মে থেকে শুরু হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ২৩ মে থেকে শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে এ দুটি সিরিজ ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেটারদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে শুরু হবে মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।