দ্বিশতকের পর রাচিন রবীন্দ্র
দ্বিশতকের পর রাচিন রবীন্দ্র

আগের সর্বোচ্চ ১৮*, এরপর রবীন্দ্রর ২৪০

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রাচিন রবীন্দ্রর স্বপ্নযাত্রা চলছেই। ২০২৩ সালের আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন ২৪০ রানের ইনিংস। মাউন্ট মঙ্গানুইতে গতকাল সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ১১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন রবীন্দ্র, আজ পেয়েছেন দ্বিশতক। টেস্ট ক্যারিয়ারেরই রবীন্দ্রর এটি প্রথম শতক। প্রথম শতকে সর্বোচ্চ রান করা নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান এখন তিনিই।

২০২১ সালের সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত রবীন্দ্র খেলেছিলেন তিনটি টেস্ট। ওই ৩ ম্যাচে করেছিলেন ৭৩ রান, সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ১৮ রান। দুই বছরেরও বেশি সময় ফিরে রবীন্দ্র যেন ভিন্ন এক ব্যাটসম্যান। ফেরার ম্যাচেই করলেন দ্বিশতক। মানে রবীন্দ্রর সর্বোচ্চ ইনিংসটি ১৮ থেকে গিয়ে ঠেকল ২৪০ রানে!

গতকাল রবীন্দ্র তাঁর আদর্শ কেইন উইলিয়ামসনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেছিলেন। আজ উইলিয়ামসন বেশিক্ষণ টেকেননি। তবে রবীন্দ্র খেলে গেছেন। ২৭০ বলে পূর্ণ করেন ১৫০ রান। তাঁর ডাবল সেঞ্চুরিটি আসে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিষিক্ত অধিনায়ক নিল ব্র্যান্ডকে কাট করে নেওয়া সিঙ্গেলে। ৩৪০ বলে ২০০-তে পৌঁছান তিনি।

ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটি ২৪০ পর্যন্ত টেনেছেন রবীন্দ্র

নিউজিল্যান্ডের ১৯তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দ্বিশতকের দেখা পেলেন রবীন্দ্র। আর দেশের মাটিতে ২০০ রানের ইনিংস খেলা ১৪তম কিউই ব্যাটসম্যান তিনি। তবে এ ইনিংসে রবীন্দ্র ঢুকে গেছেন নিউজিল্যান্ডের আরও একটি সংক্ষিপ্ত তালিকায়। ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটিকেই ২০০ পর্যন্ত টানতে পেরেছেন এর আগে মাত্র তিনজন নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে প্রথম এ কীর্তি ছিল মার্টিন ডন্নেলির। ক্যারিয়ারে ডন্নেলি খেলেছিলেন মাত্র ৭টি টেস্ট। তবে এ বাঁহাতি তাতেই রেখে গেছেন ছাপ। ৭ টেস্টে ডন্নেলির গড় ছিল ৫২.৯০। ১৯৩৭ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে আবার ইংল্যান্ড সফরে যান, এবার অধিনায়ক হয়ে। লর্ডসে ৩৫৫ মিনিট ব্যাটিং করে খেলেছিলেন ২০৬ রানের ইনিংস। ক্যারিয়ারে ওই একবারই তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন ডন্নেলি।

তালিকায় ডন্নেলির পরের নামটি ম্যাথু সিনক্লেয়ার। ১৯৯৯ সালে ওয়েলিংটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকেই ২১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সিনক্লেয়ার। সে সময় অভিষেকে দ্বিশতক করা মাত্র চতুর্থ ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি।

টেস্ট অভিষেকেই ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন কনওয়ে

সিনক্লেয়ারের ওই কীর্তির ২২ বছর পর সেটির পুনরাবৃত্তি করেন ডেভন কনওয়ে। প্রায় ৩০ পেরিয়ে অভিষেক, নেমেই দ্বিশতক—দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া কনওয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন শুরুতেই। এর পর থেকে নিউজিল্যান্ডের ওপেনিংয়ে ভরসাও হয়ে উঠেছেন এ বাঁহাতি। ডন্নেলির মতো কনওয়ের ইনিংসটিও এসেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসেই। কনওয়ে অবশ্য থেমেছিলেন ২০০ রানেই।

তাঁদের ছাড়িয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি ইনিংসকে রবীন্দ্র নিয়ে গেছেন ২৪০ রান পর্যন্ত। ট্রিপল সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে—একসময় মনে হচ্ছিল সেটিও। তবে দ্বিতীয় দিন চা-বিরতির আগেই রবীন্দ্র থেমেছেন ব্র্যান্ডের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে। ইনিংসে ২৬টি চারের সঙ্গে তিনি মেরেছেন ৩টি ছক্কা।