টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র দুটি। যে সেন্ট ভিনসেন্টে টানা ৩ ম্যাচে পারফর্ম করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজসেরা হলেন, বিশ্বকাপে সেখানে বাংলাদেশ দল ৩টি ম্যাচ খেললেও একটিতেও সুযোগ পাননি মেহেদী হাসান।
নিজের পারফরম্যান্স ও দলের সমন্বয় দুটোই এর পেছনের কারণ। তবে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সেই অধ্যায় ভুলে যাওয়ার মতো পারফর্ম করলেন এই স্পিনার। ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরার পুরস্কার হাতে পেয়ে মেহেদী কথা বলেছেন বিশ্বকাপসহ নানা প্রসঙ্গে।
মেহেদী বিশ্বকাপেও খারাপ বোলিং করেননি। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে ২ ম্যাচ খেলে ৮ ওভার বোলিং করে রান দিয়েছেন ৫০। তবে উইকেট পাননি। এই সিরিজের আগে অবশ্য টানা ৫ ম্যাচেই উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে উইকেটই সব না, তবে প্রতিপক্ষকে আটকাতে উইকেট নেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
আর মেহেদী নতুন বলে নিয়মিত বোলিং করেন। তাঁর উইকেট পাওয়া মানেই প্রতিপক্ষ টপ অর্ডারে ফাটল। সদ্য শেষ হওয়া এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও প্রতি ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো না কোনো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে আউট করেছেন মেহেদী।
১ম ম্যাচ: ৪-০-১৩-৪
২য় ম্যাচ: ৪-১-২০-২
৩য় ম্যাচ: ৩-০-১৩-২
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া বিশ্বকাপে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়া মেহেদী সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেই কীভাবে সফল হয়েছেন, শুনুন তাঁর মুখে, ‘বিশ্বকাপের সময় দলে অনেক বিকল্প ও সমন্বয় ছিল। এর জন্য আমি খেলিনি। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে এলাম, গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি সিরিজেই আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, এই সিরিজের জন্য সেখানে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই ধরনের উইকেটে বোলিং করতে উপভোগ করি, বিশ্বকাপের সময়েও দেখেছি এই উইকেটে বল নিচু হয়, টার্ন করে। তাই এই সিরিজের আগে উইকেট সোজা বোলিং করার পরিকল্পনা করেছি।’
মেহেদীর জন্য বাড়তি পাওয়া টানা ৩ ম্যাচে নিকোলাস পুরানকে আউট করা। চলতি বছর সব ধরনের টি-টোয়েন্টিতে পুরান রান করেছেন (২৩৩১), যা এক পঞ্জিকাবর্ষে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সেই পুরানকে পুরো সিরিজে এক ম্যাচেও জ্বলে উঠতে দেননি।
সিরিজে তাঁর সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল মাত্র ১৫। সব মিলিয়ে করেছেন ২১ রান। এর কারণটা মেহেদীই, ‘এই উইকেটে অ্যাকুরেসি গুরুত্বপূর্ণ। আমি পুরান সম্পর্কে জানি, একসঙ্গে বিপিএলসহ কয়েকটি লিগে খেলেছি। ডানহাতি স্পিনারদের বিপক্ষে ওর দুর্বলতা আছে সেটা জানতাম। এটাই পরিকল্পনা ছিল এবং আমরা সফলও হয়েছি।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে ওয়ানডে সংস্করণের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো কিছুর আশা করছেন মেহেদী, ‘আমাদের টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট সিরিজ ভালো গেছে, তবে ওয়ানডেতে ভালো করতে পারিনি। ছেলেরা টি-টোয়েন্টি সিরিজে অনেক ক্ষুধার্ত ছিল। আমার সতীর্থদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখেছেন নিশ্চয়। আশা করছি, আমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করতে পারব।’