দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আগের দিন শতক তুলে নেওয়া বেন ডাকেট ছিলেন উইকেটে। ছিলেন ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান জো রুটও। ২ উইকেটে ২০৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে লিড নিতে পারে কি না, প্রশ্ন ছিল সেটি নিয়েই। কিন্তু রাজকোটে আজ দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন ভারতীয় বোলাররা। মায়ের অসুস্থতার কারণে বাড়ি চলে যাওয়া মূল স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ছাড়াই খেলা ভারতীয়রা আর মাত্র ১১২ রানের মধ্যেই অলআউট করে দেয় ইংল্যান্ডকে। তাতে প্রথম ইনিংসে ১২৬ রানের লিড পেয়ে যায় ভারত। দিন শেষে যা বেড়ে হয়েছে ৩২২ রান।
ভারত তৃতীয় দিনটা শেষ করেছে ২ উইকেটে ১৯৬ রান তুলে। বিশাখাপট্টনমে ঠিক আগের টেস্টের প্রথম ইনিংস ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল আরেকটি শতক পেয়ে গেছেন আজ। সাত টেস্টের ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক পাওয়া ভারতীয় ওপেনার করেছেন ১০৪ রান। দিনের শেষভাগে পিঠের ব্যথার কারণে মাঠ ছেড়ে উঠে যান ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। ১৫৫ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জয়সোয়ালের সঙ্গী শুবমান গিল অপরাজিত আছেন ৬৫ রানে। জয়সোয়াল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ার পর উইকেটে আসা রজত পাতিদার ফিরেছেন কোনো রান না করেই। নাইটওয়াচম্যান কুলদীপ যাদব অপরাজিত ৩ রানে।
গিলের সঙ্গে জুটি বাঁধার আগে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৩০ রান যোগ করেন জয়সোয়াল। ২৮ বলে ১৯ রান করে জো রুটের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন রোহিত। সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন রোহিত। বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে ধারণা করে আম্পায়ার জোয়েল উইলসন আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে উইকেটটি পেয়েছে ইংলিশরা। এরপর ইংলিশদের হতাশ করে তরতরিয়েই ভারতের ইনিংস এগিয়ে নিয়েছেন জয়সোয়াল ও গিল। ৩৯তম ওভারের শেষ বলে মার্ক উডকে কাভার দিয়ে চার মেরে তিন অঙ্ক ছোঁয়া জয়সোয়ালই ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। ১২২ বলে ১০০ পাওয়া জয়সোয়াল ১৩৩ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা।
দিনের শেষ দেড় সেশন জয়সোয়াল-গিলের, আর প্রথম দেড় সেশন ভারতীয় বোলারদের। ৪ উইকেট নিয়ে যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ। আগের দিন ওলি পোপকে ফেরানো ভারতীয় পেসার আজ ৩ উইকেট নিয়েছে ছেঁটে দিয়েছেন ইংলিশ-লেজ। ফিরিয়েছেন বেন ফোকস, রেহান আহমেদ ও জেমস অ্যান্ডারসনকে।
ইংল্যান্ড প্রথম উইকেট হারায় দিনের পঞ্চম ওভারে। যশপ্রীত বুমরাকে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে জয়সোয়ালের হাতে ক্যাচ তোলেন ১৮ রান করা জো রুট।
পরের ওভারেই জনি বেয়ারস্টোকে ‘হাঁস’ উপহার দেন কুলদীপ যাদব। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি বেয়ারস্টো।
১৩৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা ডাকেট ফিরেছেন এরপর। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়বার ১৫০ পেরোনোর পর কুলদীপের করা অফ স্টাম্পের বাইরের এক বল তাড়া করে কাভারে গিলের হাতে ক্যাচ তোলেন ডাকেট। ১৫১ বলে ১৫৩ রান করা ইংলিশ ওপেনারের ইনিংস সাজানো ২৩টি চার ও ২ ছক্কায়।
ডাকেট যখন ফেরেন ইংল্যান্ডের স্কোর ২৬০/৫। সেখান থেকে ফোকসকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে কাজ শুরু করেছিলেন স্টোকস। তবে জুটিতে ৩৯ রান ওঠার পর রবীন্দ্র জাদেজাকে কাউ কর্নার দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ওয়াইড লং অনে বুমরার হাতে ক্যাচ দেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। স্টোকসের বিদায়ের এক বল পরেই সিরাজ ফেরান ফোকসকে। ইংলিশরা শেষ ৫ উইকেট হারায় ৭ ওভারের মধ্যে।
ভারত: ৪৪৫ ও ৫১ ওভারে ১৯৬/২ (জয়সোয়াল আহত অবসর ১০৪, গিল ৬৫; হার্টলি ১/৪২, রুট ১/৪৮)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭১.১ ওভারে ৩১৯ (ডাকেট ১৫৩, স্টোকস ৪১, পোপ ৩৯; সিরাজ ৪/৮৪, জাদেজা ২/৫১)।