ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল জি নিউজের ‘স্টিং অপারেশন’-এর ফাঁদে পড়েছেন ভারতের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা। গোপন ক্যামেরায় ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহলের বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন সাবেক এই পেসার। তাতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাচক হিসেবে তাঁর চাকরি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বিসিসিআইয়ে চেতন শর্মা প্রধান নির্বাচক পদে থাকার অধিকার রাখেন কি না, সেটাও এখন ভাবা হচ্ছে।
সম্প্রতি জি নিউজ নিজেদের যে স্টিং অপারেশন প্রকাশ করেছে, তাতে চেতন শর্মার মুখে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী বিরাট কোহলিকে পছন্দ করেন না, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব অথবা ভারতীয় ক্রিকেট দলের অনেক সদস্যের ‘পুরোপুরি ফিট’ হতে ‘ইনজেকশন’ নেওয়ার বিষয়েও গোপন ক্যামেরায় কথা বলেছেন চেতন। এসব স্পর্শকাতর বিষয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় প্রধান নির্বাচকের প্রতি সবার আস্থা ও বিশ্বাস থাকবে কি না, সেটিই বড় প্রশ্ন।
শিগগিরই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দল নির্বাচনসংক্রান্ত বৈঠক রয়েছে বিসিসিআইয়ের। এই বৈঠকে চেতন শর্মার যোগ দিতে দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিসিসিআইয়ের একটি অংশ অবশ্য মনে করে, স্টিং অপারেশনে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা কথাবার্তার বিষয়ে চেতন শর্মাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেওয়া উচিত।
বিসিসিআইয়ের এক সূত্র বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘চেতন শর্মা যেসব কথাবার্তা গোপন ক্যামেরার সামনে বলেছেন এরপর আর বিশ্বাস বলতে কিছু থাকে না। খেলোয়াড়-নির্বাচক সম্পর্ক, নির্বাচক-সাংবাদিক সম্পর্ক এরপর হুমকির মুখে পড়তে বাধ্য।’
ভারতের সাবেক পেসার চেতন হালকা মেজাজে কথাগুলো বলেছেন। অনেকটা আড্ডায় যেভাবে মানুষ কথাবার্তা বলে, সেভাবে। যেগুলো তিনি বলেন, সেগুলোও খুব যে নতুন কিছু, তা–ও নয়। আগেও এসব নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে কথা উঠেছে। তবে চেতন মুখ খোলায় খেলোয়াড়দের সঙ্গে প্রধান নির্বাচকের আস্থার সম্পর্ক নিশ্চিতভাবেই হুমকির মুখে পড়েছে।
চেতন শর্মা স্টিং অপারেশনে ফেঁসে যাওয়ার আগে থেকেই তাঁকে নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলে। চেতনের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, তিনি ‘অতিরিক্ত কথা’ বলেন। সংবাদমাধ্যমে তাঁর বলা কিছু কথা পছন্দ করেনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়েরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় চেতন শর্মা অস্ট্রেলিয়া থাকলেও কখনোই অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে তাঁকে দলের কোনো বিষয় নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়নি। প্রতিটি অনুশীলন সেশনেই তাঁকে দেখা যেত, মাঠের এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন। জি নিউজের স্টিং অপারেশনের পর রোহিত শর্মারা তাঁর সঙ্গে এক টেবিলে মুখোমুখি বসতে চাইবেন কি না, সে প্রশ্নও আছে।