৪৮ বলে ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন ট্রাভিস হেড
৪৮ বলে ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন ট্রাভিস হেড

হেডের ঝড়ে ধবলধোলাই দক্ষিণ আফ্রিকা

ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল—কেউ চোটের কারণে ছিটকে গেছেন, কেউ নিজ থেকে ছুটি চেয়েছেন। শীর্ষ সারির খেলোয়াড়দের বাদ দিয়েই তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় টি–টোয়েন্টি দল পাঠিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। সিরিজ শুরুর আগে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির দলটাকে নিয়ে বাজি ধরার লোকও হয়তো খুব বেশি ছিল না।

তবে মিচেল মার্শের নেতৃত্বাধীন নতুন রূপের অস্ট্রেলিয়া দলটাই এক ম্যাচ বাকি রেখে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে। আর আজ এমন কীর্তি গড়ল, যা আগে দেখা যায়নি। তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধবলধোলাই হলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ট্রাভির হেডের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে প্রোটিয়াদের ৫ উইকেটে হারাল সফরকারীরা। এর মধ্য দিয়ে সিরিজ জিতল ৩–০ ব্যবধানে।

নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এমন সিরিজ হার দ্বিতীয়বার দেখল দক্ষিণ আফ্রিকা; দুবারই ঘরের মাঠে। ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের কাছেও ৩–০ ব্যবধানে হেরে ধবলধোলাই হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

ডারবানের কিংসমিডে আজ শেষ টি–টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯০ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিকদের বড় সংগ্রহও ‘মামুলি’ হয়ে গেছে হেডের ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রানের ইনিংসে। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে নিয়েছে ১৩ বল বাকি থাকতেই। শুধু এটাই নয়; ডারবানে আগের দুই টি–টোয়েন্টিও হয়েছে একপেশে। বুধবার প্রথমটিতে ১১১ রানে, শুক্রবার দ্বিতীয়টিতে ৮ উইকেটে জিতেছিল সফরকারীরা।

নিয়মরক্ষার ম্যাচ হওয়ায় আজ দুজনকে অভিষেক করিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা—টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ম্যাথু ব্রিটজকি ও উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ডোনোভান ফেরেইরা। ব্রিটজকি (৫) ভালো করতে না পারলেও ব্যাট হাতে ফেরেইরার অভিষেকটা মনে রাখার মতো হয়েছে। রানআউট হওয়ার আগে ১টি চার ও ৫টি ছক্কায় ২১ বলে করেছেন ৪৮ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে আজ এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।

তিন ম্যাচ সিরিজের দুটিতেই ‘ডাক’ মেরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার টেম্বা বাভুমা

এ ছাড়া ওপেনার রিজা হেনড্রিকস ৪২ ও অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ৪১ রান করেছেন। ১২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকা বড় ইনিংস গড়তে পেরেছে এই তিনজনের চল্লিশোর্ধ রানের সুবাদে। ৩১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার শন অ্যাবোট।

ধবলধোলাই এড়াতে নেমে শুরুতেই নিজ হাতে বল তুলে নেন অধিনায়ক মার্করাম। আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া ম্যাথু শটকে প্রথম বলেই এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে চমকেও দেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এর পরের গল্পটা শুধুই হেডের।

দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক মার্শের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন হেড। এরপর জশ ইংলিস ও মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে গড়েন দুটি পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি। ৮টি চার ৬টি ছক্কায় ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রান করে যখন আউট হন, অস্ট্রেলিয়া তখন জয় থেকে নিশ্বাস দূরত্বে। হেডের পর টিম ডেভিডও আউট হলে তাই কোনো ক্ষতি হয়নি সফরকারীদের। বাকি কাজ অনায়াসে সারেন স্টয়নিস ও অ্যাশটন টার্নার।

রানের জন্য ছুটছেন হেড ও মার্শ

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ ওভারে ১৯০/৮

(ফেরেইরা ৪৮, হেনড্রিকস ৪২, মার্করাম ৪১; অ্যাবোট ৪/৩১, স্টয়নিস ২/৩৯, সাংহা ১/৩৯)

অস্ট্রেলিয়া ১৭.৫ ওভারে ১৯১/৫

(হেড ৯১, ইংলিস ৪২, স্টয়নিস ৩৭; ফোরটুইন ২/৩৬, কোয়েটজি ২/৩৬, মার্করাম ১/৩৭)

ফল অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ ট্রাভিস হেড।

ম্যান অব দ্য সিরিজ মিচেল মার্শ।

সিরিজ অস্ট্রেলিয়া ৩–০ ব্যবধানে জয়ী।