তৃতীয় বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুটি হ্যাটট্রিক ফারিহার
তৃতীয় বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দুটি হ্যাটট্রিক ফারিহার

আবার হ্যাটট্রিক ফারিহার, এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে

আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং সব মিলিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক নারী টি-টোয়েন্টিতে দুটি হ্যাটট্রিক করলেন ফারিহা ইসলাম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজ মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের শেষ ওভারে এলিস পেরি, সোফি মলিনু ও বেথ মুনিকে আউট করে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার।

এর আগে ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। ফারিহা ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে হ্যাটট্রিক আছে শুধু ফাহিমা খাতুনের। মেয়েদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ফারিহা ছাড়া দুটি করে হ্যাটট্রিক আছে উগান্ডার কনসিলেট আওয়েকো ও হংকংয়ের কা ইং চ্যানের।

ফারিহার হ্যাটট্রিকের পরও অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ২০ ওভারে ১৬১ রান। তবে সফরকারীদের এ রানের মধ্যে আটকে রাখতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম ১১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ১ উইকেটে ১০৫ রান।

ফারিহার হ্যাটট্রিকের উল্লাস

ব্যাটিং অর্ডারে ‘প্রমোশন’ পেয়ে ওপেনিংয়ে আসা গ্রেস হ্যারিসের ৩৪ বলে ৪৭ ও তিনে আসা জর্জিয়া ওয়ারেহামের ৩০ বলে ৫৭ রানের ইনিংস এবং দুজনের ৫৪ বলে ৯১ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়া এগোচ্ছিল বিশাল সংগ্রহের পথে। সেখান থেকে ফাহিমা ও নাহিদা আক্তারের সঙ্গে ফারিহার বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ফারিহা বোলিং শেষ করেন ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে, ফাহিমা ও নাহিদা নেন ২টি করে উইকেট।

টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। হ্যারিসের সঙ্গে ওপেন করতে আসেন ফিবি লিচফিল্ড। আট বছর আগে দুবার ওপেন করেছিলেন হ্যারিস (রান করতে পারেননি কোনো), লিচফিল্ড ক্যারিয়ারে ওপেন করেছিলেন মাত্র একবার। তাঁদের ওপেনিং জুটি অবশ্য টেকেনি বেশিক্ষণ। ফারিহার বলে কাভারে লিচফিল্ড ক্যাচ তুললে সেটি ভাঙে ১৫ রানে।

ইনিংসে ৪ উইকেট নেন ফারিহা

মিরপুরে এরপর চলে হ্যারিস ও ওয়ারেহামের শো। প্রথম ৬ ওভারে উঠেছিল ৪০ রান, এরপর থেকে গতি বাড়ে আরও। স্বর্ণা আক্তারের করা অষ্টম ওভারে ওঠে ২০ রান, ৭-১০ ওভারের মধ্যে ওঠে ৫৪ রান। এর আগে কখনোই সাতের ওপরে না খেলা ওয়ারেহাম ফিফটি করেন মাত্র ২৬ বলেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৯ রানের স্কোর তো বটেই, ২০০-ও সম্ভব মনে হচ্ছিল তখন। তবে ১২তম ওভারে নাহিদাকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ওয়ারেহাম ধরা পড়ার পর থেকেই ছন্দপতন হয় অস্ট্রেলিয়ার। পরের ওভারে ফাহিমা করেন জোড়া আঘাত—চারে আসা অ্যাশলেই গার্ডনারের পর ফেরেন হ্যারিস।

মাঝে এলিস পেরি ও তালিয়া ম্যাকগ্রা যোগ করেন ৩৯ রান, যদিও তাতে লেগে যায় ৩৪ বল। মাঝে ব্রেকথ্রুয়ের খোঁজে বারবার বোলার পরিবর্তন করা বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার ব্যবহার করেন সাতজনকে।

প্রথম ৩ ওভারে ১৩ রান দেওয়া ফারিহাকে শেষ ওভারের প্রথম বলে চার মারেন পেরি। চতুর্থ বলে গিয়ে স্বর্ণার হাতে ওয়াইড লং অফে ক্যাচ তোলেন তিনি, পরের বলে মলিনু ধরা পড়েন পয়েন্ট। শেষ বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে অ্যারাউন্ড দ্য লেগে বোল্ড হন মুনি। নয়ে নামা মুনিকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিক—ফারিহার হ্যাটট্রিক আরও স্মরণীয় হয়ে ওঠে তাতে।