৪ উইকেট নিয়ে আফগান ইনিংসে ধস নামিয়েছেন শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (ডান থেকে দ্বিতীয়)
৪ উইকেট নিয়ে আফগান ইনিংসে ধস নামিয়েছেন শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (ডান থেকে দ্বিতীয়)

১০ রানে শেষ ৮ উইকেট নেই আফগানিস্তানের, বড় জয়ে সিরিজ শ্রীলঙ্কার

২৯তম ওভারটা যখন শেষ হলো, ৩০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা আফগানিস্তানের রান ২ উইকেটে ১৪৩। ২৯ বল পর সেই আফগানিস্তান অলআউট ১৫৩ রানে!

আজ রোববার এমন ব্যাটিং-বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছে পাল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১০ রানের মধ্যে আফগানদের শেষ ৮ উইকেট তুলে নিয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেটা শ্রীলঙ্কা জিতেছে ১৫৫ রানে। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজটাও জিতে গেল প্রথমে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে ৩০৮ রান তোলা স্বাগতিকেরা।

রান তাড়া করতে নেমে সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ৩১ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। আসিতা ফার্নান্ডোর বলে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরান শ্রীলঙ্কার উইকেটকিপার-অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস।

৯৭ রানের জুটি গড়েছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ

এরপর ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ ৯৭ রানের জুটি গড়ে দলের রানটাকে নিয়ে যান ১২৮-এ। আরেকটি ফার্নান্ডো-মেন্ডিস যুগলবন্দী তে ইব্রাহিম জাদরানের বিদায়ে ভাঙে ওই জুটি। ৭৬ বলে ৫৪ রান করেছেন আফগান এই ওপেনার।

৫০ ছাড়িয়েছেন রহমত শাহও। ৬৯ বলে ৬৩ রান করেন তিনে নামা রহমত। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে তাঁকে এলবিডব্লু করেই ধসের সূচনা করেন লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ওই ওভারের পঞ্চম বলে হাসারাঙ্গা বোল্ড করেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদিকে।

পরের ওভারে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ফেরান প্রমোদ মাদুশান। ৩২তম ওভারে আরও ২ উইকেট নেই আফগানদের। হাসারাঙ্গা আগের ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান নবীকে ফেরানোর পর রানআউট হন ইকরাম আলীখিল। ৩৩তম ওভারে টানা দুই বলে কায়েস আহমেদ ও নুর আহমেদকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান বাঁহাতি পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা। ফজলহক মাদুশঙ্কার হ্যাটট্রিক ঠেকালেও পরের ওভারে গুলবদিন নাইবকে এলবিডব্লু করে দলকে জিতিয়ে ইনিংসে চতুর্থ উইকেট পেয়ে যান হাসারাঙ্গা।

১০
ওয়ানডেতে ১০ বা এর কম রানে শেষ ৮ উইকেট হারানোর উদাহরণ তিনটি। ২০২০ সালে নেপালের বিপক্ষে সর্বনিম্ন ৮ রানে শেষ ৮ উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। শ্রীলঙ্কা ১৯৮৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারায় ১০ রানে শেষ ৮ উইকেট।

১০ রানে শেষ ৮ উইকেট—ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচটির চেয়ে কম রানে শেষ ৮ উইকেট হারানোর উদাহরণ আছে মাত্র একটি। সে রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের। ২০২০ সালে কীর্তিপুরে নেপালের বিপক্ষে ৮ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫ রানে অলআউট হয় মার্কিনিরা। তাতে ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডে জিম্বাবুয়ে সঙ্গী পেয়ে যায়।

আফগানিস্তানের মতো ১০ রান তুলতে শেষ ৮ উইকেট হারানোর ‘কীর্তি’ ছিল শ্রীলঙ্কারও। ১৯৮৬ সালে শারজায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৫/২ থেকে মুহূর্তেই ৫৫ রানে অলআউট লঙ্কানরা। সেদিন ৪.৩ ওভারে ১ রান দিয়েই ৫ উইকেট নেন ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার কোর্টনি ওয়ালশ।

পাল্লেকেলেতে আজ শ্রীলঙ্কার ৩০৮ রানের সর্বোচ্চ ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন চারিত আসালাঙ্কা। ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৭৪ বলে এই রান করেন পাঁচে নামা আসালাঙ্কা।
এ ছাড়াও শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ৫০ ছাড়িয়েছেন আরও তিনজন—মেন্ডিস (৬১), সাদিরা সামারবিক্রমা (৫২), জানিত লিয়ানাগে (৫০)। আগের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া পাতুম নিশাঙ্কা আজ ফিরেছেন ১৮ রান করে।

সিরিজের শেষ ওয়ানডে বুধবার পাল্লেকেলেতেই।

শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ৯৭ রানে অপরাজিত ছিলেন চারিত আসালাঙ্কা

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ৩০৮/৬ (আসালাঙ্কা ৯৭*, মেন্ডিস ৬১, সামারাবিক্রমা ৫২, লিয়ানাগে ৫০; ওমরজাই ৩/৫৬)।
আফগানিস্তান: ৩৩.৫ ওভারে ১৫৩ (রহমত ৬৩, ইব্রাহিম ৫৪; হাসারাঙ্গা ৪/২৭, আসিতা ২/২৩, মাদুশঙ্কা ২/২৮)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ১৫৫ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: চারিত আসালাঙ্কা।