ম্যাচটা শেষ হয়েছে পাকিস্তান ইনিংসের ৪৪তম ওভারে, ক্রিস ওকসের বলে হারিস রউফের আউটে।
তবে বাবর আজমদের জন্য ম্যাচের সমাপ্তিটা হয়ে গেছে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের শুরুর দিকেই। সেমিফাইনালে উঠতে হলে ইংল্যান্ডকে ১০০ রানে অলআউট করে পাকিস্তানকে তিন ওভারের মধ্যে জিততে হতো। কিন্তু টসে জেতা ইংলিশরা পুরো পঞ্চাশ ওভার ব্যাট করে তুলে ফেলে ৯ উইকেটে ৩৩৭ রান। যার পেছনে ছুটতে গিয়ে বাবরদের ইনিংস থেমে যায় ২৪৪ রানে। পাকিস্তানকে ৯৩ রানে হারিয়ে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করেছে ইংল্যান্ড। এই জয়ে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত হয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। আর পাকিস্তানের প্রাপ্তি— আফগানিস্তানের ওপরে থেকে পঞ্চম হয়ে বিশ্বকাপ শেষ করা।
প্রথম আট ম্যাচের ছয়টিতে হারায় কলকাতা ইডেন গার্ডেনের ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের খুব বেশি কিছু পাওয়ার ছিল না। তবে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল। চারে থাকা নিউজিল্যান্ডকে টপকে যেতে দুটি পথ ছিল বাবরদের সামনে। আগে ব্যাট করলে ইংল্যান্ডকে প্রায় ৩০০ রানে হারানো, আর পরে ব্যাট করলে ইংল্যান্ডকে এক শর ভেতরে বেঁধে রেখে ৩ ওভারের ভেতর তাড়া করা। দুটির মধ্যে আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে বড় একটা সংগ্রহ গড়াই তুলনামূলক কম কঠিন ছিল। তবে সেই ‘কম কঠিন’ পথে হাঁটার জন্য টস-ভাগ্যই পাশে পাননি পাকিস্তান অধিনায়ক। টসে জিতে ইংল্যান্ড অধিনায়কই ব্যাটিং বেছে নেন।
পাকিস্তানের সেমিফাইনালের আশা বাস্তবিকভাবে শেষ হয় ইংল্যান্ডের রান এক শ পেরিয়ে গেলে। কারণ ওই রান তাড়া করার জন্য যে পরিমাণ বল পাওয়া যাচ্ছিল, তাতে চার-ছয় মেরেও জেতার সুযোগ নেই। ইংল্যান্ড ৩৩৭ রান তুলে ফেলার পর সমীকরণটা দাঁড়ায় এ রকম— পাকিস্তানকে ৬.৪ ওভার বা ৪০ বলের মধ্যে জিততে হবে। সব বলে ছয় মারলেও তিন শ পার হবে না। তবু ওয়াইড, নো-সহ নানা ফাঁকফোকরে বাড়তি রান ওঠা সম্ভব বলে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পাকিস্তান আউট’ বলা যাচ্ছিল না। ওই কয়েক বলের মধ্যে পাকিস্তান ২ উইকেট ৩০ তুললে আনুষ্ঠানিকভাবে লিগ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় পাকিস্তানের।
ম্যাচের পরের অংশটুকু ছিল ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিতের। যেখানে তৃতীয় উইকেটে বাবর-রিজওয়ানের ৫০ রানের জুটিই যা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছে। বাবরকে গাস অ্যাটকিনসন আর রিজওয়ানকে মঈন আলী তুলে নিলে পাকিস্তানের জয়ের আশাও মিলিয়ে যেতে শুরু করে।
এর আগে ইংল্যান্ডের ইনিংসেও বড় জুটি ছিল তৃতীয় উইকেটে। জো রুটের সঙ্গে বেন স্টোকসের জুটিটি থেকে ইংল্যান্ড পায় ১৩২ রান। ১০ রানে শাহিন আফ্রিদির বলে তাঁর হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া স্টোকস খেলেন ৭৬ বলে ৮৪ রানের ইনিংস। রুট করেন ৭২ বলে ৬০ রান। ইংল্যান্ডের ইনিংসের অন্য অর্ধশতকটি ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর (৬১ বলে ৫৯)।
পাকিস্তানের হয়ে ৬৪ রানে ৩ উইকেট নেন রউফ।
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩৭/৭ (স্টোকস ৮৪, রুট, ৬০, বেয়ারস্টো ৫৯, ম্যালান ৩১; রউফ ৩/৬৪, শাহিন ২/৭২, ওয়াসিম ২/৭৪)।
পাকিস্তান: ৪৩.৩ ওভারে ২৪৪ (সালমান ৫১, বাবর ৩৮, রিজওয়ান ৩৬; উইলি ৩/৫৬)।
ফল: ইংল্যান্ড ৯৩ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ডেভিড উইলি।