অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের প্রথম সিরিজ জয়ের নায়ক শোয়েব আখতার
অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের প্রথম সিরিজ জয়ের নায়ক শোয়েব আখতার

এবার হারিস রউফের গতির ঝড়, সেবার ছিলেন শোয়েব আখতার

৬০ বছর। তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২০টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। মাত্র দুটি সিরিজ জয়।

অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ, মোহাম্মদ রিজওয়ানের দলের কীর্তিটা কত বড়।

মজার ব্যাপার, ২০০২ সালে পাকিস্তান যখন প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জেতে, সেটি ছিল ডাউনআন্ডারে দলটির দশম সিরিজ। সেই সিরিজ থেকে হিসাব করলে আবার দশম সিরিজে এসেই সিরিজের ট্রফি হাতে নিতে পারল পাকিস্তান

কাকতাল তো আছে আরও। ২২ বছর আগেও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা পাকিস্তান জিতেছিল প্রথম ম্যাচ হারার পর পরের দুটি ম্যাচ জিতে। এবারও তা–ই। সেবারও গতির ঝড়ে অস্ট্রেলীয় ব্যাটিং লাইনআপকে উড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান, এবারও সেই গল্পই। এবার যেমন হারিস রউফ, সেবার ছিলেন শোয়েব আখতার। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ–সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন হারিস। ২২ বছর আগে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন শোয়েব। তাতে ৭ উইকেট নিয়েই ম্যান অব দ্য সিরিজ।

১০ উইকেট নিয়ে এবার সিরিজসেরা পাকিস্তানের হারিস রউফ

২২ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া সফরের পাকিস্তান দলটাকে নামের ভারে আপনি দেশটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল হিসেবেও চালিয়ে দিতে পারেন। ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতার, মোহাম্মদ সামি, আজহার মেহমুদ, শহীদ আফ্রিদি—বোলিং লাইনআপটা তো তারায় তারায় খচিতই ছিল।

ইনজামাম-উল-হক, সাঈদ আনোয়ার, মোহাম্মদ ইউসুফ, শোয়েব মালিক, ইউনিস খান, ইমরান নাজির—ব্যাটিং লাইনআপটাও তো কম ঝলমলে ছিল না। উইকেটের পেছনে ছিলেন রশিদ লতিফের মতো কিপার।

এবারের মতো সেই সিরিজেও রান করাটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল! মেলবোর্নের ছাদে আটকানো ডকল্যান্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার খেলে পাকিস্তান করতে পারে ৮ উইকেটে ১৭৬ রান। পাকিস্তানের বোলাররা খারাপ করেছিলেন সেই ম্যাচটিতেই। রান তাড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৩তম ওভারেই জয় পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়াসিম-ওয়াকাররা সেই ম্যাচে উইকেট পাননি, একাদশে ছিলেন না শোয়েব আখতার।

২০০২ সালে পাকিস্তানের সিরিজ জয়ে বড় ভূমিকা ছিল ইউনিস খানেরও

ডকল্যান্ডসেই দ্বিতীয় ম্যাচে নামলেন শোয়েব আখতার, পাকিস্তানও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পেয়ে গেল জয়। অস্ট্রেলিয়া অলআউট ১৬৭ রানে। ৮ ওভারে ৩০ রান দিয়ে শোয়েব উইকেট পান ২টি, সমান ওভারে ৩ উইকেট নিতে ওয়াসিম খরচ করেন মাত্র ১৮ রান। আফ্রিদিও নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। তবে বোলারদের কেউ নন, সেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে ইউনিস খানের হাতে। ১৬৮ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৬৫ রানে ৪ উইকেট খোয়ানোর পর ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন ইউনিস। ইউনিস ব্যাটিংয়ে নামার পরও আরও ৪টি উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান।

অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র দ্বিতীয়বার দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় করলেও পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় গৌরবগাথা অস্ট্রেলিয়াতেই লেখা। ১৯৯২ বিশ্বকাপটা তো অস্ট্রেলিয়াতেই জিতেছিল পাকিস্তান।

ব্রিসবেনে সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান করে ৭ উইকেটে ২৫৬ রান। শোয়েবের গতির ঝড়ে এরপর ১৬৫ রানেই অলআউট অস্ট্রেলিয়া। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলেই ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৮৩/৬ বানিয়ে দিয়েছিলেন শোয়েব। পরে আরেকটি উইকেট।

ইমরান খানের অধিনায়কত্বে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান

অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র দ্বিতীয়বার দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় করলেও পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় গৌরবগাথা অস্ট্রেলিয়াতেই লেখা। ১৯৯২ বিশ্বকাপটা তো অস্ট্রেলিয়াতেই জিতেছিল পাকিস্তান।

চার বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় আরেকটি ট্রফি জেতে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে সে সময় ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।