বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের মধ্যে একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা আছে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থানটা কিছুদিন বাবরের দখলে থাকে, কিছুদিন রিজওয়ানের। এবারের এশিয়া কাপে বাবর বড় রান পাননি। অন্যদিকে রিজওয়ান আছেন ছন্দে, যার পুরস্কার হিসেবে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও উঠে গেছেন তিনি। তারপরও আজ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে বাবরের ওপর।
পাকিস্তানের টপ অর্ডারের আরেক দুশ্চিন্তার নাম ফখর জামানের ফর্ম। বাবরের মতো ঘুমিয়ে আছে তাঁর ব্যাটও। তবে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের নকআউট ম্যাচে ফখরের জ্বলে ওঠার অতীত ইতিহাস আছে। ফাইনালেও পাকিস্তানি সমর্থকদের সে রকমই আশা। সে ক্ষেত্রে রিজওয়ানের চাপ কিছুটা হলেও কমবে। গ্রুপ পর্ব থেকে সুপার ফোর, পাকিস্তানের টপ অর্ডারে রান করেছেন শুধু রিজওয়ানই। এবার শিরোপা জয়ের ম্যাচে বিশ্বসেরা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
পাকিস্তানের এই তিন ব্যাটসম্যানের ওপর প্রত্যাশার চাপও বেশি। এরপর যে আর বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানই নেই দলে! টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের পর সবাই-ই মারকাটারি ব্যাটিং করেন। চার-ছক্কা মারাটাই তাঁদের প্রধান কাজ। বাবররা শুরুতে ‘অ্যাংকর ইনিংস’ খেলেন, এরপর অন্যরা ‘ইমপ্যাক্ট ইনিংস’। এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ব্যাটিংটা চলছে এই নীতি মেনেই।
এবারের এশিয়া কাপ দিয়ে পাকিস্তান পিঞ্চ হিটারদের ফিরিয়ে এনেছে। নব্বইয়ের দশকের পিঞ্চ হিটিং কৌশল আধুনিক ক্রিকেটের ব্যাটিং থেকে প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। সুপার ফোরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মোহাম্মদ নেওয়াজকে পাঁচে নামানো হয়। সুযোগ পেয়ে ২০ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে তিনি ম্যাচের ছবিটাই পাল্টে দেন।
পরের ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে শাদাব খানকে দিয়েও একই দায়িত্ব পালন করায় সাকলায়েন মুশতাকের দল। দুবাইয়ের ফাইনালে আজ শ্রীলঙ্কাকে চমকে দিতে এমন কৌশল বেছে নিতে পারে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের বোলিং শক্তির কথা তো সবারই জানা। শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ ওয়াসিম চোটের কারণে ছিটকে পড়লেও হারিস রউফ, নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ হাসনাইন সে শূন্যতা বুঝতে দেননি।
নতুন বলে গতির ঝড়ের সঙ্গে সুইং মেশাচ্ছেন নাসিম ও হাসনাইনরা। পরে হারিস এসে আরও গতি যোগ করছেন। আর মাঝের ওভারে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার কাজটা করছেন শাদাব খান ও নেওয়াজ।
পাঁচ বোলারের বোলিং আক্রমণের একটা ঝুঁকিও আছে। একজনের জন্য দিনটা খারাপ গেলেই বিপদ। দু-এক ওভার হাত ঘোরানোর মতোও যে আর কেউ নেই! তবে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের ফাঁকফোকর বের করতে পারেনি কেউই। শ্রীলঙ্কা আজ নিশ্চয়ই শেষবারের মতো চেষ্টাটা করে দেখবে।