টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটিও শুরু হয়েছিল ১-১ সমতায়। ওয়ানডে সিরিজেও তাই। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে পারবে?
চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। প্রথম আলো লাইভে আপনাকে স্বাগত।
আবার টসে জিতেছেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
লিটন দাস বাদ পড়েছেন এ ম্যাচের আগে। তবে তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া জাকের আলী সুযোগ পাননি। খেলবেন আরেক ওপেনার এনামুল হক। চোটে ছিটকে যাওয়া তানজিম হাসানের জায়গায় দলে ফিরেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের জায়গায় নেওয়া হয়েছে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে।
একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ হোসেন।
চোটে ছিটকে যাওয়া পেসার দিলশান মাদুশঙ্কার জায়গায় শ্রীলঙ্কা খেলাচ্ছে স্পিনার মহীশ তিকশানাকে। শ্রীলঙ্কা দলে একটিই পরিবর্তন।
একাদশ: আভিস্কা ফার্নান্ডো, পাতুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিত আসালাঙ্কা (সহ-অধিনায়ক), জানিত লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিত ভেল্লালাগে, মহীশ তিকশানা, প্রমোদ মাদুশান ও লাহিরু কুমারা।
লিটনের অভিজ্ঞতা সবসময়ই মূল্যবান, এমন একজন খেলোয়াড় যে কোনো সময় নেমে ম্যাচ জেতানোর মতো ইনিংস খেলতে পারে। তবে এটাও বলা দরকার, কিছু সময় সে ফর্মে নেই। ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের তাকে বাদ দিয়ে ভাবতে হচ্ছে।চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, বাংলাদেশ কোচ
ওভার দ্য উইকেট থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পাতুম নিশাঙ্কাকে ঝামেলায় ফেলেছেন শরীফুল ইসলাম। বল ভেতরের দিকেও নিয়েছেন, নিশাঙ্কা তাতেও স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। পঞ্চম বলে গিয়ে নিতে পারেন সিঙ্গেল। শরীফুলের প্রথম ওভারে আসে ওই ১ রানই।
আরেক প্রান্ত থেকে শুরু করেছেন তাসকিন, তাঁর বল গ্লাভসে নিতে গিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে আঘাত পেয়েছেন মুশফিক। ফিজিও বায়েজিদুল ইসলামের শরণাপন্ন হতে হয়েছে তাঁকে। ম্যাজিক স্প্রের পর টেপ পেঁচাতে হয়েছে। মুশফিক কিপিং শুরু করেছেন আবার।
সে বিরতির পরই এলবিডব্লু নিশাঙ্কা। একটু ফুললেংথের বল, ডিফেন্ড করতে গিয়ে মিস করে গেছেন তিনি। আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবোরোর সিদ্ধান্ত রিভিউ করারও প্রয়োজন বোধ করেননি।
তবে বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, বল মিস করে যেত লেগ স্টাম্প। মানে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন নিশাঙ্কা!
শ্রীলঙ্কা ১/১, ১.৩ ওভার
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি জুটি গড়েছিলেন আভিস্কা ফার্নান্ডো ও পাতুম নিশাঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরুটা ফিফটি দিয়ে করলেও পরের ২ ম্যাচে শুরুতেই ভাঙল তাঁদের জুটি।
শরীফুলের দ্বিতীয় ওভারে এসেছে ইনিংসের প্রথম চার, পয়েন্ট দিয়ে পাঞ্চ করে মেরেছেন কুশল মেন্ডিস। ১ বল পর মেরেছেন আরেকটি—এবার প্যাডের ওপর পেয়ে ফাইন লেগ দিয়ে।
৩ ওভারে ১১/১
এবার রিভিউ নিলেও কোনো কাজে আসবে না!
তাসকিনের দারুণ লাইন, দারুণ লেংথ। সামনে না পেছনে করতে গিয়ে ক্রিজে আটকে থাকলেন আভিস্কা ফার্নান্ডো। একটু বেরিয়ে যাওয়া বলে শরীর থেকে আগবাড়িয়ে খেলতে গিয়ে শুধু খোঁচা দিতে পেরেছেন। নিজের প্রথম ২ ওভারে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে ফেরালেন তাসকিন। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের দারুণ শুরু!
৩.৫ ওভারে ১৫/২
আগের দুই ম্যাচের মতো এ ম্যাচের উইকেটও আছে ঘাস। সবুজাভ উইকেটে আছে ফাটলও। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছেন, ভবিষ্যতে চোখ রেখে এমন উইকেটে খেলতে চান তাঁরা।
আগে আমরা ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে চেয়েছি, কিন্তু এখন ভাবছি… নিকট ভবিষ্যতে তেমন কিছু নেই, ফলে আমরা ২০২৭ সাল (বিশ্বকাপের) লক্ষ্য রেখে এগোনোর উপায় ভাবছি। এমন উইকেটে খেলার চেষ্টা করছি, যেখানে ব্যাটসম্যান ও বোলার উভয়ই সমানভাবে ম্যাচে থাকে।চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, বাংলাদেশ কোচ
এমন উইকেটে বোলিংটা উপভোগই করছেন তাসকিন। সর্বশেষ কুশল মেন্ডিসকে পরাস্ত করেছেন দারুণ ওই লাইন ও লেংথের সমন্বয়ে।
৬ ওভারে ২৩/২
সাদিরা সামারাবিক্রমা খেলতে চেয়েছিলেন উচ্চাভিলাষী ড্রাইভ। কপাল ভালো, শরীফুলের ভেতরের দিকে ঢোকা বলে ব্যাটের কানায় লাগেনি তাঁর। তবে বাংলাদেশ তাতেই নিয়েছে রিভিউ। বল ও ব্যাটের মধ্যে ফাঁক ছিল স্পষ্ট, আল্ট্রা-এজেও ধরা পড়েনি কিছু।
৭ ওভারে ২৫/২
প্রথম ওয়ানডে: ৭১/১
দ্বিতীয় ওয়ানডে: ৬০/৩ (দ্বিতীয় ইনিংস)
তৃতীয় ওয়ানডে: ৩৯/২
অফ স্টাম্পের বাইরে জায়গা দিয়েছিলেন শরীফুল, সামারাবিক্রমা সে সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি। নবম ওভারের শুরুর মতো শেষও হয়েছে চার দিয়ে। প্রথম ৫ ওভারে ২৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য শরীফুল। হয়তো এ স্পেলে নিজের শেষ ওভার করে ফেললেন।
অন্য প্রান্তে তাসকিনকে টানা পঞ্চম ওভারে এনেছেন নাজমুল। ওই লাইন লেংথ ধরে রেখেছেন বাংলাদেশ পেসার। মেন্ডিস আবার ড্রাইভ করতে গিয়ে মিস করেছেন।
প্রথম পাওয়ারপ্লের পর ষষ্ঠ ওভার করতে দেখা যাবে তাসকিনকে?
১০ ওভারে ৩৯/২
অনুমিতভাবেই বোলিংয়ে পরিবর্তন। শরীফুলের জায়গায় মোস্তাফিজ। দলে ফেরা মোস্তাফিজ সফল প্রথম ওভারেই। ভেতরের দিকে ঢোকা বলে পেছনের পায়ে ভর করে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন সামারাবিক্রমা। সফল হননি। ব্যাট ছুঁয়ে বল গেছে মুশফিকের হাতে। এ জুটি ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করছিল। সামারাবিক্রমার আউটে সেটি থামল ২৬ রানেই।
১০.২ ওভারে ৪১/৩
পানি-পানের বিরতির পরই মিরাজকে এনেছেন নাজমুল। প্রথম ওভারে এ অফ স্পিনার দিয়েছেন ৭ রান। আরেক প্রান্তে চালিয়ে যাচ্ছেন মোস্তাফিজ। এবার আসালাঙ্কাকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা কুশল মেন্ডিসের।
আসালাঙ্কা অবশ্য সুযোগ দিয়েছিলেন। আউটসাইড-এজড হয়েছিলেন তিনি। তবে স্লিপে কেউ ছিলেন না, ডাইভ দিয়েও নাগাল পাননি মুশফিক। স্লিপ না রাখার আফসোস অবশ্য নাজমুলের একটু কমই হওয়ার কথা, মোস্তাফিজের সে বলটি ছিল নো।
ফ্রি হিটে আবার ওয়াইড করেছেন মোস্তাফিজ। দ্বিতীয় ফ্রি হিটে ১ রানের বেশি আসেনি।
১৫ ওভারে ৬৭/১
ম্যাচের ১৮তম ওভারে সিরিজে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এলেন রিশাদ। উইকেটের দেখা পেলেন প্রথম বলেই! ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তাঁর প্রথম উইকেট (আগের ২ ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য)। টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে মেন্ডিস খোঁচা দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার আরেকটি জুটি ভাঙল অসময়ে। বাংলাদেশ আরেকবার পেল গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট। মেন্ডিস থেমেছেন ৫১ বলে ২৯ রান করে।
১৭.১ ওভারে ৭৪/৪
রিশাদ ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কাকে আরও চাপে ফেলার সুযোগ দেখেছেন তাতে নাজমুল, ফিরিয়েছেন প্রথম স্পেলে ২ উইকেট নেওয়া তাসকিনকে। জানিত লিয়ানাগের বিপক্ষে তাঁর বলে রিভিউও নিয়েছিল বাংলাদেশ। সামনে ঝুঁকে খেলেছিলেন লিয়ানাগে। বাংলাদেশের ভাবনায় ছিল উচ্চতা। তবে টেলিভিশন আম্পায়ারের মতে, পরিষ্কার ইনসাইড-এজ ছিল। ১৯তম ওভারে দ্বিতীয় রিভিউটিও হারিয়েছে বাংলাদেশ।
১৯ ওভারে ৮১/৪
দ্বিতীয় স্পেলে ২ ওভার করলেন তাসকিন। সফল হননি। তবে যে বোলিং করেছেন, তাতে উইকেটের কলামে ২-এর বেশি থাকতেই পারত তাঁর। ৭ ওভার শেষে তাঁর বোলিং ফিগার ৭-১-১৯-২।
২২ ওভারে ৯৬/৪
রিশাদের বলে সামনে এগিয়ে ফুলটস পেয়েছেন, লং অফের ওপর দিয়ে লিয়ানাগে মেরেছেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। মেন্ডিস ফেরার পর আরেকটি জুটির চেষ্টা শ্রীলঙ্কার। আসালাঙ্কার সঙ্গে লিয়ানাগের এ জুটি অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রানে।
২৪ ওভারে ১১৩/৪
আগের বলে শর্ট লেংথ থেকে টেনে চার মেরেছিলেন। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে করলেন। কাট করতে গিয়ে এজড হয়েছেন আসালাঙ্কা। মোস্তাফিজ সফল দ্বিতীয়বারের মতো। শ্রীলঙ্কার আরেকটি জুটি আশা জাগিয়ে শেষ আগেভাগেই।
২৫ ওভারে ১১৭/৫
ব্রেকথ্রুর পর এবার শরীফুলকে ফিরিয়েছেন নাজমুল। লিয়ানাগে সিঙ্গেল নেওয়ার পর ভেল্লালাগেকে ঝামেলায় ফেলেছেন শরীফুল। যদিও উইকেট পাননি এখনো। বলের মুভমেন্ট এখনো উল্লেখযোগ্য, শরীফুলের বোলিংয়েও নাজমুল রেখেছিলেন স্লিপ।
২৮ ওভারে ১২৬/৫
১৬তম বলে প্রথম রান নিতে পেরেছেন ভেল্লালাগে। মিরাজের বলে সিঙ্গেল নিয়ে।
মাঝে ৩ ওভারে এসেছিল মাত্র ৩ রান। শরীফুলের বলে পুল করতে গিয়ে এরপর ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ তুলেছিলেন লিয়ানাগে। ডিপে থাকা মাহমুদউল্লাহ অবশ্য লাফ দিয়েও অল্পর জন্য নাগাল পাননি।
কিন্তু সফল হলেন মিরাজই। প্রথম রান নেওয়ার পর এবার স্লগ করেছিলেন ভেল্লালাগে। ডিপ মিডউইকেটে সৌম্যর হাতে ধরা পড়েছেন তিনি ১৮ বলে ১ রান করে। শ্রীলঙ্কা হারিয়ে ফেলল ষষ্ঠ উইকেট। আরেকটি জুটির অপমৃত্যু।
৩১ ওভারে ১৩৬/৬
৩৩তম ওভারে ১৫০ পূর্ণ করল শ্রীলঙ্কা। ৭৫ বলে এসেছিল প্রথম ৫০, দ্বিতীয় ৫০ করতে লেগেছিল ৬১ বল। সর্বশেষ ৫০ রানও এল ৬১ বলে।
৩৪ ওভারে ১৫৪/৬।
মিরাজ করেছিলেন ফুললেংথে। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। অলআউট হওয়ার পথে আরেকটু এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। ১৫৪ রানে নেই ৭ উইকেট।
প্রথম ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ফিফটি করেছিলেন, যদিও দল জেতেনি শেষ পর্যন্ত। আজও ফিফটি পেলেন লিয়ানাগে। ৭৪ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর নেমেছিলেন। তাঁকে রেখে এরপর ফিরে গেছেন আরও ৩ জন। লিয়ানাগে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, ৬৫ বলে পূর্ণ করলেন ৫০। শ্রীলঙ্কা কত দূর যেতে পারবে, প্রশ্ন সেটিই।
৩৯ ওভারে ১৬৬/৭
১১-৪০ ওভারে শ্রীলঙ্কা—
প্রথম ম্যাচ: ১৪৯ রান, ৪ উইকেট
দ্বিতীয় ম্যাচ: ১৮৭ রান, ২ উইকেট
আজ: ১৩৫ রান, ৫ উইকেট
আগের দুই ম্যাচে মাঝের ওভারে বেশ গতিশীল ছিল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। তবে আজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে গেছে তারা।
এবার শেষ ১০ ওভারের পালা।
চতুর্থ বলে ওয়াইড লং অন দিয়ে চার মেরেছেন লিয়ানাগে। মিরাজ শেষ করলেন তাঁর ১০ম ওভার। ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন এ অফ স্পিনার।
৪৩ ওভারে ১৮৫/৭
১৫৪ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তিকশানাকে নিয়ে এরপর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন লিয়ানাগে। ৪৬তম ওভারে ২০০ ছুঁয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। এরপর অষ্টম উইকেট জুটিতে ৫০ রানও হয়ে গেছে। শর্ট বলে ব্যাট ধরে রেখে র্যাম্প শট খেলেছেন লিয়ানাগে, হয়েছে বাউন্ডারি। তাসকিনের নবম ওভারে রেসেছে ৯ রান।
৪৬ ওভারে ২০৫/৭
প্রথম বলটা করেছিলেন ওয়াইড। দ্বিতীয় বল করতে গিয়ে রান আপের মধ্যেই আটকে গেলেন মোস্তাফিজ। পরে আবার চেষ্টা করেও আর পারেননি। জাকের আলী ও এনামুল হকের কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, এরপর স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়লেন। ঠিক কোথায় সমস্যা, তা বোঝা যায়নি। ৯ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন এ ম্যাচ দিয়ে দলে ফেরা এ বাঁহাতি পেসার।
মোস্তাফিজ উঠে যাওয়াতে সৌম্য এসেছেন। তাঁর প্রথম বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে বদলি ফিল্ডারে তানজিদ হাসানের হাতে ধরা পড়েছেন ৪০ বলে ১৫ রান করে তিকশানা। লিয়ানাগের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ রানের জুটির অংশ ছিলেন তিনি।
৪৭.১ ওভারে ২১৪/৮
লিয়ানাগে পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।
এরপর শর্ট বলে ক্যাচ তুলেছিলেন প্রমোদ মাদুশান। সেটি নেওয়ার পথে সংঘর্ষ হয়ে গেল এনামুল ও বদলি ফিল্ডার জাকেরের। এনামুল অবশ্য ক্যাচ নিয়েছেন ঠিকই। জাকের এবার স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়েছেন। এর আগে ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট পেয়ে উঠে গেছেন সৌম্য সরকারও।
শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভারে ২৩৫ অলআউট (লিয়ানাগে ১০১*; তাসকিন ৩/৪২)
তাসকিনকে কাভার দিয়ে মারা চার। হেলমেটটা খুলে এনে ব্যাটটা তুলে ধরলেন জানিত লিয়ানাগে। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি উদ্যাপন শ্রীলঙ্কা ব্যাটসম্যানের! সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ইনিংসের হাইলাইটস তিনিই।
শেষ ২ বলে এসে ২ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয়েছে ২৩৫ রানে। তবে লিয়ানাগে তাদের লড়াই করার মতো একটা স্কোর এনে দিয়েছেন।
দিনের ম্যাচ বলে শিশিরের প্রভাব থাকার কথা নয়। তবে সকালে পিচে থাকার কথা ময়েশ্চার। টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে সবুজাভ উইকেটে বাংলাদেশ পেসারদের শুরুটা ছিল দারুণ। নিজের প্রথম ২ ওভারেই দুই ওপেনারকে ফেরান তাসকিন। শ্রীলঙ্কা সে-ই যে পিছিয়ে পড়ে, এরপর শুধু হামাগুড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা বেশ কিছুক্ষণ।
বেশ কয়েকটি জুটি শুরু পেলেও বড় হয়নি। যখনই মনে হয়েছে, ইনিংস মেরামতের পথে এগোচ্ছে তারা, তখনই বাংলাদেশ পেয়েছে ব্রেকথ্রু। তাসকিনের পর মোস্তাফিজ, রিশাদ, মিরাজরা এনে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট। মিডল অর্ডারে শ্রীলঙ্কার কেউ সে অর্থে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, এক লিয়ানাগে ছাড়া।
৭৪ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার নেমেছিলেন। আসালাঙ্কা, ভেল্লালাগের পর হাসারাঙ্গা—বেশিক্ষণ লিয়ানাগেকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। ১৫৪ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তিকশানাকে নিয়ে লিয়ানাগে তোলেন ৬০ রান—ইনিংসে প্রথম ফিফটি জুটি সেটি।
বোলাররা দারুণ করেছেন। তাঁদের দারুণভাবে ব্যবহার করেছেন অধিনায়ক নাজমুল। এবার ব্যাটসম্যানদের পালা।
এনামুল হকের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছেন তানজিদ হাসান। এনামুল দলেই ছিলেন। তবে তানজিদ এসেছেন সৌম্যর কনকাশন বদলি হিসেবে।
ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়েছিলেন সৌম্য। তখন পায়ে লেগেছে মনে হলেও মাঠ থেকে আমাদের প্রতিনিধি তারেক মাহমুদ বিসিবির সূত্রে জানিয়েছেন, সে সময় কাঁধে লাগার পর কনকাশনের লক্ষণ আছে তাঁর। মাঠে নামার পর শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের অবশ্য আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে।
এদিকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে ফিল্ডিংয়ের সময় এনামুলের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মাঠ ছাড়া জাকের আলীকে। সৌম্যর বদলি হিসেবে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নেই আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবোরোও। প্রথম ইনিংসে একটু খোঁড়াচ্ছিলেন। ধারাভাষ্যকাররা বলছেন, অতিরিক্ত গরমে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে শুনেছেন তাঁরা। অন ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে শরফুদ্দৌলার সঙ্গে এসেছেন রিজার্ভ আম্পায়ার তানভীর আহমেদ।
চোট আর অদল-বদলের মিছিলে রান তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। তিকশানাকে দিয়ে বোলিং ওপেন করিয়েছেন কুশল মেন্ডিস।
তানজিদ শুরু করেছেন দারুণ। মাদুশানের আগের ওভার কাভার ড্রাইভে চার মেরেছিলেন। সর্বশেষ ওভারে মারলেন তিনটি বাউন্ডারি। দ্বিতীয় বলে চারের পর পঞ্চম বলে আরেকটি, শেষ বলে গিয়ে তানজিদ মেরেছেন ছক্কা।
৪ ওভারে ২৪/০
শর্ট লেংথের বলে পুল করে চার। এরপর সামনে এসে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে মারতে চাইলেও বল গেছে কানায় লেগে থার্ডম্যানের ওপর দিয়ে। লাহিরু কুমারার ওভারের শেষ দিকে চড়াও তানজিদ। ২৩ বলে ৩২ রান করে ফেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার।
৬ ওভারে ৩৭/০
উইকেটের খোঁজে হাসারাঙ্গাকে এনেছেন মেন্ডিস। তাঁকে মিড অফের ওপর চার মেরে স্বাগত জানিয়েছেন তানজিদ। এরপর তাঁর মুখের হাসিটাই বলছিল, হুট করে পাওয়া সুযোগটা দারুণ উপভোগ করছেন তিনি।
৭ ওভারে ৪৩/০
৭.৫ ওভার, ৫০/০। শ্রীলঙ্কার লেগেছিল ১২.৩ ওভার।
মাঝারি রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে দারুণ। ব্যাটিংয়ের পর এবার বোলিংয়েও শুরুতেই চাপে শ্রীলঙ্কা।
কুমারার ফুললেংথের বল। ড্রাইভ করেছিলেন এনামুল। তবে যেভাবে চেয়েছিলেন, সেভাবে হয়নি। কাভারে ধরা পড়েছেন। শুরুতে খোলসবন্দী থাকার পর আগের ওভারে তিকশানাকে চার মেরে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ টিকলেন না। ৫০ রানেই থেমেছে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি।
এ সময়ে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৩৯/২। বাংলাদেশ এগিয়ে পরিষ্কার ব্যবধানেই। এনামুল ফেরার পর তানজিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নাজমুল।
কুমারার বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শরীর থেকে বেশ দূরে ছিল বল। এ আউট নাজমুলকে পোড়ানোর কথা বেশ কিছুক্ষণ। দ্রুত ২ উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা।
এক্সট্রা কাভারে খেলে রান নিয়েছিলেন হৃদয়। এরপর নেন সিঙ্গেল। তবে ফিল্ডারের থ্রো এসে লাগে হৃদয়ের ব্যাটে, দিক পরিবর্তন করে সেটি হয়েছে চার। বেন স্টোকস, ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল?
কুমারার ওভার শুরু হয়েছিল টানা দুটি ওয়াইডে। এরপর আবার হাসারাঙ্গার থ্রো স্টাম্পে লেগে হয়েছে আরেকটি ওভারথ্রো, যাতে এসেছে বাড়তি একটি রান। সে থ্রোয়ে আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্টাম্পক্যাম্প, যে কারণে কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল খেলা।
১৪ ওভারে ৭৩/২
একজন ওপেনার বাদ পড়েছেন। কিন্তু তবুও একাদশে ছিলেন না তিনি। সেই তানজিদ আজ ওপেন করতে নামলেন আরেক ওপেনারের কনকাশন বদলি হিসেবে। হঠাৎ পাওয়া সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগালেন তরুণ ব্যাটসম্যান।
হাসারাঙ্গার বলে লং অনে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। তাঁর লেগেছে ৫১ বল। বেশ আক্রমণাত্মক শুরু করলেও দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সময় নিয়েছেন একটু। আপাতত তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়ার দিকে মনযোগ তাঁর।
১৬ ওভারে ৭৮/২
থ্রো স্টাম্পে লেগেছে। তানজিদ নন স্ট্রাইক প্রান্তে ক্রিজের বাইরেই ছিলেন। এরপরও আউট নন তিনি। কারণ? স্টাম্পের বেল পড়েনি!
হৃদয় ও তানজিদ আপাতত সতর্ক। ভাগ্যও পক্ষে তাঁদের। দুজনের জুটি অবিচ্ছিন্ন ৪৬ বলে ২৮ রানে।
১৮ ওভারে ৮৪/২।
আগের বলের সিমে সমস্যা ছিল কোনো। ‘ভারপ্রাপ্ত’ চতুর্থ আম্পায়ার এনেছেন বলের বক্স। যদিও দুই আম্পায়ার যে বল বেছেছেন, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না শ্রীলঙ্কানরা।
পুরোনো ও নতুন বলে তানজিদ মাদুশানকে মেরেছেন টানা দুটি চার। শেষ বলে আবার তুলে মেরেছিলেন। মিড অফে থাকা বদলি ফিল্ডার সাহান আরাচ্চিগে ডাইভ দিয়ে আটকেছেন সেটি, ক্যাচ নিতে পারেননি অবশ্য।
১৯ ওভারে ৯৪/১
পার্ট টাইমার আসালাঙ্কাকে স্লগ করে চার মেরেছেন তানজিদ। ওই চারে বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ১০০ রান, ২১তম ওভারে। এরপর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তানজিদ, যদিও ঠিকোঠাক মারতে পারেননি। মাঝে একটু চুপচাপ থাকার পর আবার ঝাঁজ তানজিদের ব্যাটিংয়ে।
২১ ওভারে ১০৪/১
কুমারার শর্ট বলে ব্যাট চালালেন। হয়তো নিচে রাখতে চেয়েছিলেন বা পরে সে ভুলটা বুঝতে পেরেছেন। তবে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে ফিরতে হলো হৃদয়কে। তানজিদের সঙ্গে জুটি থামল ৪৯ রানেই। হৃদয় ফিরেছেন ৩৬ বলে ২২ রানে। ১০৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এবং আরেকটি উইকেট কুমারার। এবার শিকার মাহমুদউল্লাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের ভালো চ্যানেলের ডেলিভারি, মাহমুদউল্লাহ খোঁচা দিয়েছেন তাতে। ৪ বলে ১ রান করেই আউট তিনি। ৪ উইকেট হারিয়ে এবার চাপে বাংলাদেশ।
২৩.১ ওভারে ১১৩/৪
আরেক দিকে পরপর ২ ওভারে পড়েছে ২ উইকেট। তবে তানজিদ তাতে বিচলিত হচ্ছেন না ঠিক। কুমারার শর্ট বলে পুল করে আছড়ে ফেললেন স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে। ইনিংসে এটি তাঁর চতুর্থ ছক্কা। ৮০ পেরিয়েছেন। তাঁর সঙ্গী এখন মুশফিক।
হাসারাঙ্গার ওপর চড়াও হয়েছিলেন। তবে শট খেলার পরই বুঝতে পেরেছিলেন, সামনে বিপদ। ৮১ বলে ৮৪ রান করে লং অনে ধরা পড়েছেন তানজিদ। ১৩০ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, ২৫.৫ ওভার হয়েছে খেলা। মুশফিকের সঙ্গী শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
তালিকার ওপরের দুটি নামই সাকিব আল হাসান। দুটি ইনিংসই স্মরণীয়। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে ৬৯ বলে অপরাজিত ৯২ রানের ইনিংসে বাংলাদেশকে ফাইনালে তুলেছিলেন সাকিব। গত বিশ্বকাপে খেলেছিলেন ৬৫ বলে ৮২ রানের ইনিংস। যে ম্যাচ স্মরণীয় হয়ে আছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের টাইমড আউটের কারণে।
এদিকে ভেল্লালাগেকে নিজের প্রিয় স্লগ সুইপে ছক্কা মেরেছেন মুশফিক।
২৯ ওভাএর ১৪৬/৫
একটা শব্দ ছিল। হয়তো তাতেই রিভিউ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। মাদুশানের শর্ট বলে ব্যাট চালালেও লাগাতে পারেননি মিরাজ, আম্পায়ার শরফুদ্দৌলাও আউট দেননি। শ্রীলঙ্কার রিভিউও কাজে আসেনি, আল্ট্রা-এজ ছিল নিশ্চুপ। উল্টো হয়েছে ওয়াইড।
বাংলাদেশ ১৫০ পেরিয়ে গেছে।
৩২ ওভারে ১৫৮/৫
বাংলাদেশের সমীকরণ। জুটি অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানে। নিয়মিত স্ট্রাইক বদল করে যাচ্ছেন দুজন। এ জুটি আরও কিছুক্ষণ থাকলে বেশ স্বস্তিকর অবস্থানে যাবে বাংলাদেশ।
লং হপ ছিল। এমন বলে উইকেট পাবেন, সেটি হয়তো আশা করেননি হাসারাঙ্গা নিজেও। লেগ সাইডের বলে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে ফিরলেন মিরাজ। ভাঙল ৪৮ রানের জুটি। মিরাজ থামলেন ২৫ রান করে। আবার লড়াইয়ে ফিরল শ্রীলঙ্কা।
বুম! নেমেই স্লগ সুইপে ছক্কা রিশাদের। টি-টোয়েন্টি সিরিজ যেখানে শেষ করেছিলেন, ওয়ানডে শুরু করলেন সেখান থেকেই। পরের বলেই অবশ্য এলবিডব্লুর রিভিউ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে দেখিয়েছে আম্পায়ার্স কল, তানভীর আহমেদের সিদ্ধান্ত বদলায়নি তাই। ১ বল ডট দিয়ে ফুললেংথের বল টেনে লং অন দিয়ে চার মেরেছেন রিশাদ। পরের বলে ছক্কা মেরেছেন আবার, এবার স্লগ সুইপে মিডউইকেট দিয়ে।
৭৮ বলে দরকার ৪২ রান।
লেগ সাইডে শর্ট লেংথের বল পেয়ে ঘুরিয়ে মেরেছেন মুশফিক, পেয়েছেন ৪ রান। বাংলাদেশের ২০০ পূর্ণ হয়েছে। রিশাদকেও শর্ট করেছিলেন কুমারা, ভেল্লালাগের ভালো ফিল্ডিংয়ে এ দফা বাউন্ডারি হয়নি। তবে শেষ ২ ওভারে উঠেছে ২৪ রান।
তিকশানার বলে লং অনে হতে পারত ক্যাচ। তবে ক্যাচ নেবেন না বল আটকাবেন, এই দোলাচলে পড়ে একটাও করতে পারেননি ভেল্লালাগে। রিশাদ পেয়েছেন আরেকটি চার। এ ওভারে এসেছে ৭ রান। বাংলাদেশের দরকার ২৭ রান।
রিশাদ ইফতারের আগেই কাজ শেষ করতে চাচ্ছেন! হাসারাঙ্গাকে টানা দুটি ছক্কা, দুটিই স্লগ সুইপে—কাউ কর্নার দিয়ে! তৃতীয় বলে হাসারাঙ্গা লেংথ কমিয়ে এনেছিলেন, রিশাদ এবার টেনে অফ সাইডে মেরেছেন চার। পরের বলে আবার ফুললেংথে করেছিলেন, এবার ওয়াইড লং দিয়ে টেনে চার। পঞ্চম বলে আবার টেনে চার। মুশফিক হাসছেন। বাংলাদেশের ডাগআউট হাসছে।
রিশাদ ১৮ বলে ৪৮ অপরাজিত।
নাজমুল হোসেনের উদ্যাপনই বলে দেয় সব। দুই হাত তুলে ঝাঁকাচ্ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এদিকে রিশাদের মুখের হাসিটা চওড়া হয়েছে আরও। ম্যাচ আর সিরিজ জয়ের হাসি।
তিকশানার অফ স্টাম্পের বাইরের বল। মুশফিক ব্যাট সামনে নিলেন। আউটসাইড-এজে চার। ৪ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ। সিরিজ জিতল ২-১ ব্যবধানে। দ্বিতীয়বার শ্রীলঙ্কাকে সিরিজ হারাল বাংলাদেশ।
২৩৬ রানের লক্ষ্য খুব একটা বড় হওয়ার কথা ছিল না। সৌম্যর জায়গায় কনকাশন-বদলি হিসেবে আসা তানজিদ হাসানের ৮৪ রানের ইনিংসে সে লক্ষ্যকে মনে হচ্ছিল আরও ছোট। কিন্তু গুচ্ছাকারে উইকেট হারিয়ে কয়েক দফা একটু চাপেই পড়েছিল বাংলাদেশ।
প্রথমে এনামুল ও নাজমুল ফেরেন ৬ রানের মধ্যে। এরপর হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ আউট ৮ রানের মধ্যে। সর্বশেষ মিরাজকে আউট করে শ্রীলঙ্কা হয়তো আবার একটু লড়াইয়ের আশা পেয়েছিল। জয় থেকে তখনো ৫৮ রান দূরে বাংলাদেশ।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার সে আশা ভেস্তে দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। মুখোমুখি প্রথম বলেই হাসারাঙ্গাকে ছক্কা মেরে শুরু করলেন তিনি। ব্যাটিং করে গেলেন ওই পঞ্চম গিয়ারে থেকেই। আরেকটু হলে দ্রুততম ফিফটির বিশ্ব রেকর্ডই ছুঁয়ে ফেলতেন। তা হয়নি, তবে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় তাঁর ১৮ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংসেই জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৩৬ বলে ৩৭ রানে।
শেষ ম্যাচে সুযোগ পেলেন প্রথমবার। প্রথম বলেই উইকেট। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস। রিশাদ হোসেন হয়েছেন ম্যাচসেরা।
আলহামদুলিল্লাহ। শেষ করে আসতে পেরেছি। মুশফিক বলছিলেন, “জোনে পেলে মেরে দাও। সমস্যা নাই।”রিশাদ হোসেন
সিরিজ জয়ের ট্রফি নেওয়ার আগে সিরিজসেরাও হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
ট্রফি নিয়ে উদ্যাপনে মুশফিকের হাতে দেখা গেল হেলমেট। স্ট্র্যাপটা খোলা। ইঙ্গিত করলেন, সেটায় সমস্যা। পাশ থেকে একটু অবাক হওয়ার ভঙ্গি নাজমুলের। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর টাইমড-আউট উদ্যাপন করেছিল শ্রীলঙ্কা। এবার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের সেই ত্রুটিযুক্ত হেলমেট এল বাংলাদেশের উদ্যাপনে।