সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২০১১ সালে। সিলেট বিভাগকে জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে তুলে ২০২২ সালে বিদায় নেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকেও। ১৯৯৯ সালে শুরু হওয়া জাতীয় লিগের প্রথম মৌসুম থেকে খেলে আসা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অলক কাপালির সামনে সুযোগ ছিল তুষার ইমরানের গড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙার। কিন্তু তরুণদের সুযোগ দিতে লাল বলের খেলাকে বিদায় জানান তিনি। ইচ্ছা ছিল সাদা বলের ক্রিকেটটা খেলে যাবেন। কিন্তু সিলেট লিগ ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত খেললেও সর্বশেষ মৌসুমে দল পাননি বিপিএলে।
এবারের ঢাকা লিগে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৭ ম্যাচ খেলে ৫ ইনিংসে রান করেছেন ১১৬, উইকেট ৬টি। শুধু তা–ই নয়, ম্যাচ খেললে ৪০ বছর বয়সে এসেও পুরোদমে ফিল্ডিং করছেন। বয়সের ছাপটা যেন পারফরম্যান্সে, অলক সচেতন সেদিকে, ‘এবার ভালো লাগছে প্রিমিয়ার লিগ খেলে। প্রথমে সুযোগ পাব বলে মনে হয়নি। জাতীয় দলের অনেকেই ছিল আমাদের দলে। চোটের কারণে সুযোগ হয়েছে। আমি এখনো চেষ্টা করি পুরো ৫০ ওভার ফিল্ডিং করতে। অনেকে ২-৪ ওভার খেলে মাঠের বাইরে চলে যায়। কিন্তু আমি ম্যাচ খেললে পুরোপুরিই খেলতে চাই।’
কিন্তু অলককে ইদানীং শুনতে হচ্ছে কবে সাদা বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন, সে প্রশ্ন। তিনি নিজেও অবশ্য এই মৌসুমটাকেই নিজের শেষ মৌসুম ধরে নিয়েছিলেন, ‘একটা সময় তো ছাড়তেই হবে। তবে ছাড়তেও খারাপ লাগে। এই বছরই ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এখনো বুঝতে পারছি না, কী করব। লিগে আরও কিছু ম্যাচ বাকি আছে। ম্যানেজমেন্ট, কোচ সালাউদ্দিন স্যারের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করব। এত দিন ক্রিকেট খেলছি, এখন খেলা ছেড়ে দেব...কেমন জানি লাগছে।’
প্রসঙ্গক্রমে অলক বলছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়ার পরের অভিজ্ঞতার কথাও, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছেড়েছিলাম একটা নির্দিষ্ট কারণে। তখন বেশ কয়েকজন নতুন ক্রিকেটার এসেছিল। আমি ভেবেছিলাম সরে গেলে সিলেট দলে ওদের জায়গা হবে, ওরা ওপরে উঠে আসবে। পরে দেখা গেল, যাদের কথা ভেবে ছেড়েছিলাম আমি যাওয়ার পর তারা সুযোগ পায়নি।’
এবার তাই বিদায় বলার সিদ্ধান্তটা ভেবেচিন্তে নিতে চান অলক, ‘এখন যদি সাদা বল ছেড়ে দিই, কোন জায়গায় যাব, কী করব, এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আমার ইচ্ছা ক্রিকেটের সঙ্গে থাকার। সেটা ক্রিকেট বোর্ডে হতে পারে, কোচিংয়ে হতে পারে। যদি ক্রিকেট বোর্ড থেকে ভালো প্রস্তাব আছে, ওটা ভেবে দেখব। আর যদি তা না হয়, তাহলে কোচিংয়ের সুযোগ খুঁজব। অনেক একাডেমি আছে, ক্লাব ক্রিকেট আছে। ওই প্রস্তাবও আছে আমার।’
যে দলেই খেলুক না কেন, একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে অলকের দায়িত্ব শুধু মাঠের খেলাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না। কখনো কোচ, কখনো মেন্টরের ভূমিকাও পালন করতে হয়। তিনি সেটা উপভোগও করেন, ‘যখন যেখানে খেলি, সেখানেই আমি নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করি। ওরা আমার কথা ভালোভাবে নেয়। খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক বড় বড় খেলোয়াড়কে দেখেছি; শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে খেলেছি। জন্টি রোডস, শেন ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই অভিজ্ঞতাগুলোই ভাগাভাগি করি সবার সঙ্গে।’