২৩ নভেম্বর ২০১৯ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সময়টার কথা কি মনে পড়ে বিরাট কোহলির? এ সময়ে সমালোচকেরা কোহলির জীবন ‘দুর্বিষহ’ করে তুলেছিলেন শুধু একটি কারণে—শতক-খরা।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কোহলি ৭০তম শতক পেয়েছিলেন ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেদিন আউট হয়ে ইবাদত হোসেনের স্যালুট দেখার পর সেই যে শতকের খরায় পড়লেন, তা কাটিয়ে উঠতে লেগেছে ১ হাজার ২০ দিন!
গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর টি–টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ৭১তম শতক পূরণের পর থেকে আবারও চেনা রূপে ফিরেছেন কোহলি। এরপর পেয়েছেন আরও সাতটি শতকের দেখা; সর্বশেষটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
পুনেতে গত বৃহস্পতিবার ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শতক তুলে নিয়েছেন কোহলি; ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যা ছিল তাঁর ৪৮তম। গত রোববার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একই মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কোহলি। তবে এবার শতক থেকে ৫ রান দূরে থাকতে ফিরতে হয়েছে। ওই দিনও তিন অঙ্ক ছুঁতে পারলে ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৯ শতকে শচীন টেন্ডুলকারের পাশে বসতেন।
সেদিন টেন্ডুলকারকে ছুঁতে না পারলেও শিগগিরই যে সেটা হয়ে যাবে; এমনকি ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০টি ওয়ানডে শতকের অনন্য কীর্তি গড়বেন, ঘোর কোহলিবিরোধীও সেটা অবিশ্বাস করবেন না। গতকাল কুইন্টন ডি কক বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭৪ রান করার পথে শীর্ষে ওঠার আগে কোহলিই ছিলেন এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।
বিরাট কোহলি ব্যাটিংয়ে নামা মানেই যেন রেকর্ডের হাতছানি। এই বিশ্বকাপেই যেমন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ২৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। তারও আগে আরেকটি কীর্তি গড়েছেন, যেটা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি।
সেটা কী? দলের জয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে শতক। কোহলির ৪৮ ওয়ানডে শতকের ৪০টিতেই জিতেছে ভারত; শতাংশের হিসাবে ৮৩.৩৩%! অর্থাৎ, ব্যাটিং আগে হোক বা রান তাড়ায়, কোহলি তিন অঙ্কের ইনিংস খেলেছেন কিন্তু ভারত হেরেছে, এমন ম্যাচ মাত্র ৮টি।
এ তালিকায় দুইয়ে আছেন টেন্ডুলকার। তাঁর ৪৯ শতকের মধ্যে দল জিতেছে ৩৩টিতে। তিনে থাকা রিকি পন্টিংয়ের ২৫টি শতকে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যৌথভাবে ২৪টি করে শতকের দিন জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ওপেনার হাশিম আমলা, ভারতের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি সনাৎ জয়াসুরিয়া। আর এবি ডি ভিলিয়ার্সের ২১টি শতকে জিতেছে প্রোটিয়ারা।
তিন সংস্করণ মিলিয়ে অবশ্য এগিয়ে পন্টিং। তাঁর ৫৫টি শতকে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে। ভারত জিতেছে কোহলির ৫৪টি শতকে। কোহলি যে ছন্দে আছেন, তাতে বিশ্বকাপেই পন্টিংকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
কোহলির ৪৮ ওয়ানডে শতকের ৪১টিই তাঁর পছন্দের পজিশন তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে। রান তাড়ায় তাঁর শতক ২৭টি; এর মধ্যে ২৩টিতেই ভারত জিতেছে। রান তাড়ায় শতকে কোহলির ধারেকাছেও কেউ নেই। ১৭ শতক নিয়ে দুইয়ে আছেন টেন্ডুলকার। ১৫ শতক নিয়ে তিনে রোহিত।