জয়ের পর হাশমতউল্লাহ–আজমতউল্লাহর উদ্‌যাপন
জয়ের পর হাশমতউল্লাহ–আজমতউল্লাহর উদ্‌যাপন

ডাচদের হারিয়ে সেমিফাইনালের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করল আফগানিস্তান

এই আফগানিস্তান এর আগে পাকিস্তানের ২৮২ রান টপকে গিয়েছিল ৮ উইকেট হাতে রেখে, শ্রীলঙ্কার ২৪১ রান পেরিয়ে গিয়েছিল ৩ উইকেট হারিয়ে। আজ নেদারল্যান্ডসের ১৮০ রানের লক্ষ্যটা তাই ‘ছোটখাটো’ই ছিল আফগানদের জন্য।

শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। লক্ষ্ণৌতে ডাচদের বিপক্ষে ১১১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে হাশমতউল্লাহ শহীদির দল। এই জয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ভালোমতোই এগিয়ে গেছে আফগানিস্তান। ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আফগানদের অবস্থান তালিকার পাঁচ নম্বরে। শেষ দুই ম্যাচ জিতলে তো বটেই, অন্তত একটি ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালের টিকিট কাটার সম্ভাবনা থাকবে আফগানিস্তানের।

একসময় আফগানিস্তানের ‘হোম ভেন্যু’ ছিল লক্ষ্ণৌর একানা স্টেডিয়াম। নিজেদের চেনা এই মাঠে স্পিন জাল বিছিয়েই নেদারল্যান্ডসকে আটকেছে আফগানিস্তান। অবশ্য ডাচ ব্যাটসম্যানদের রানিংয়ে গড়বড় করে ফেলা এতে ‘বড় অবদান’ রেখেছে। টস জিতে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডস প্রথম ওভারে ওয়েসলি বারেসিকে হারালেও ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যানের জুটিতে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়ায়। ১১ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৭২ রান। তবে দ্বাদশ ওভারে একটি ডাবলস নিতে গিয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সরাসরি থ্রোয়ে ও’ডাউড রানআউট হলে ভাঙন ধরে ডাচ ইনিংসে। ১৯তম ওভারে টানা দুই বলে রানআউট হন অ্যাকারম্যান এবং অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসও।

এরপর মোহাম্মদ নবী বাস ডি লিডিকে এবং নুর আহমেদ সাকিব জুলফিকারকে তুলে নিলে ১১৩ রানে ৬ উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। এখান থেকে আর দলটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ৫৮ রান করে অ্যাকারম্যানও রানআউট হয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত ১৭৯ রানে থেমে যায় ডাচ ইনিংস।

রান তাড়ায় ওভারপ্রতি চারেরও কম রান দরকার ছিল আফগানিস্তানের। যদিও রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের উদ্বোধনী জুটিতে ছিল দ্রুত শেষ করার তাড়া। আর সেটা করতে গিয়ে দুই ওপেনার ফিরে যান ৫৫ রানের মধ্যে। তবে রহমত শাহকে নিয়ে এরপর আর বিপদে পড়তে দেননি হাশমতউল্লাহ। তৃতীয় উইকেটে দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৪ রান। টানা তৃতীয় ফিফটি তুলে রহমত ৫৪ বলে ৫২ রান করে ফিরলেও আফগানিস্তান তখন জয় থেকে ৫১ রান দূরে দাঁড়িয়ে।

অর্ধশতকের পর রহমত শাহর উদ্‌যাপন

আজমতউল্লাহকে নিয়ে যা তুলে নেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ। ৩২তম ওভারের তৃতীয় বলে আরিয়ান দত্তকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়কই। অপরাজিত থাকেন ৬৪ বলে ৫৬ রানে। অপর প্রান্তে আজমতউল্লাহ মাঠ ছাড়েন নামের সঙ্গে ২৮ বলে ৩১ রানে।

টুর্নামেন্টে চতুর্থ জয় তুলে পাকিস্তানকে টপকে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এসেছে আফগানিস্তান। দলটির শেষ দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুটিতেই জিতলে সেমিফাইনালে উঠে যাবে তারা, কারণ চারটি বেশি দলের ১২ পয়েন্ট তোলার সুযোগ নেই। আর দুই ম্যাচের একটিতে জিতলে ১০ পয়েন্ট নিয়েও চতুর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নেদারল্যান্ডস: ৪৬.৩ ওভারে ১৭৯ (এঙ্গেলব্রেখট ৫৮, ও’ডাউড ৪২, অ্যাকারম্যান ২৯; নবী ৩/২৮, নুর ২/৩১)।

আফগানিস্তান: ৩১.৩ ওভারে ১৮১ (হাশমতউল্লাহ ৫৬*, রহমত ৫২, আজমতউল্লাহ ৩১*; জুলফিকার ১/২৫)।

ফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ নবী।