ক্রিকেটের দর্শনীয় জায়গাগুলোর একটি ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম। তবে ভেন্যু হিসেবে যতটা দর্শনীয়, ঠিক ততটাই বিপরীত চিত্র এই মাঠের আউটফিল্ডের।
ঘাস ও বালুভরা মাঠটির আউটফিল্ড ফিল্ডিংয়ের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। পা হড়কে যাওয়া, দেবে যাওয়া, শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। শনিবার বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচে দুই দলের ফিল্ডাররাই যার ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার এই মাঠেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে ইংল্যান্ড। আউটফিল্ডের কারণে ফিল্ডাররা চোট–ঝুঁকিতে থাকবেন বলে ইংল্যান্ডকে সতর্ক করে দিয়েছেন আফগানিস্তানের ইংলিশ কোচ জোনাথন ট্রট।
ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়ে ট্রট হতাশা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ ম্যাচের পরই। সেদিন বাউন্ডারিতে বল ধরতে গিয়ে মুজিব উর রেহমান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ঝুঁকিপূর্ণভাবে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ট্রট বলেন, ‘ভাবুন তো, যদি আপনার খেলোয়াড় বল ধরতে গিয়ে ডাইভ দেবে কি না দ্বিধায় ভোগে, পড়ে গেলে চোটে পড়বে বলে আপনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। আমরা সৌভাগ্যবান যে মুজিব গুরুতর হাঁটুর চোট থেকে বেচে গেছে।’
ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, বাংলাদেশ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনেই শুধু নয়, পরে এ নিয়ে ইংল্যান্ড দলের কাছেও উদ্বেগ জানিয়েছেন ট্রট। আফগানদের প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকা ট্রট ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার। জস বাটলারদের দল ধর্মশালায় নামার আগে আউটফিল্ডের বিষয়টি যেন মাথায় রাখেন, এ বিষয়ে তাদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচের আউটফিল্ডকে ‘গড়পড়তা’ হিসেবে প্রতিবেদন দিয়েছেন ম্যাচ অফিশিয়ালসরা। রোববার আইসিসির স্বাধীন পিচ পরামর্শক অ্যান্ডি অ্যাককিনসন সরেজমিনে পরিদর্শনও করেছেন। তবে পরিদর্শন শেষে আউটফিল্ডকে ‘সন্তোষজনক’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে আইসিসির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আইসিসি পিচ অ্যান্ড আউটফিল্ড মনিটরিং প্রক্রিয়ার অধীনে ম্যাচ অফিশিয়ালসরা পিচ ও আউটফিল্ডের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে থাকেন। বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচের আউটফিল্ডকে ‘অ্যাভারেজ’ রেট দেওয়া হয়েছে। উপরন্তু আইসিসির ইনডিপেনডেন্ট পিচ কনসালট্যান্ট আউটফিল্ড দেখেছেন। তিনি এবং পরবর্তী ম্যাচের রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথ আউটফিল্ডের কন্ডিশনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
ক্রিকইনফো জানিয়েছে, শনিবার বাংলাদেশের ম্যাচের পরে এবং রোববার বিকেলে মাঠে পানি দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বোলারের রান–আপ অঞ্চলে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড ম্যাচে নতুন পিচে খেলা হবে।
আম্পায়াররা মাঠের কন্ডিশন ‘বিপজ্জনক অথবা অযৌক্তিক’ মনে করলে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে আলোচনা করে ম্যাচ সাসপেন্ড বা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড ম্যাচে আম্পায়ারিং করবেন আহসান রাজা ও পল উইলসন। ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে জাভাগাল শ্রীনাথ।
বাজে আউটফিল্ডের কারণে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত–অস্ট্রেলিয়া বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্ট ধর্মশালা থেকে ইন্দোরে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুটিসহ মোট ৫টি রাখা হয়েছে ধর্মশালায়। অপর তিন ম্যাচে খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা–নেদারল্যান্ডস (১৭ অক্টোবর), ভারত–নিউজিল্যান্ড (২২ অক্টোবর) এবং অস্ট্রেলিয়া–নিউজিল্যান্ড (২৮ অক্টোবর)।