‘তামিমের ছবি নেন, ওই যে তামিম!’ অনুশীলনে নেমে তামিম ইকবালকে ব্যথায় কাতরাতে দেখে সহকর্মী ক্যামেরাপারসনকে কথাটা বলছিলেন এক সংবাদকর্মী। অবশ্য মাঠে থাকা সব ক্যামেরাই তখন তামিমের দিকে তাক করা।
ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডরমটের ছোড়া একটা বল ধরতে গিয়ে কোমরের ব্যথায় কাতরে ওঠেন তামিম। শরীরী ভাষায় ব্যথার যন্ত্রণা স্পষ্ট। পিঠে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে সে ব্যথা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন তিনি। দূর থেকে তামিমের এ অবস্থা দেখে দৌড়ে আসেন বাংলাদেশ দলের ফিজিও মোজাদ্দেদ আলফা সানি।
পিঠের চোটের সঙ্গে কয়েক দিন ধরেই লড়াই চলছে তামিমের। ব্যথা নিয়ে আজ অনুশীলনে এসেছিলেন ব্যথার অবস্থাটা বুঝতেই। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘আমরা তামিমকে বলেছিলাম ট্রেনিং করতে। ব্যাট করার সময় পিঠের ব্যথাটা কেমন হয়, সেটা আমাদের জানা দরকার ছিল।’
সেই ব্যাটিং অনুশীলনের সময়ও ব্যথায় কাতরেছেন তামিম। মিনিট পাঁচেকের জন্য ফিল্ডিং অনুশীলনে নেমে সেখান থেকেও একপর্যায়ে সরে যান। মিরপুরের ইনডোরে কিছুক্ষণ গা গরম করে নামেন ব্যাটিং অনুশীলনে। একজন নেট বোলারের সঙ্গে খেলেছেন পেস বোলার তাসকিন আহমেদ এবং খালেদ আহমেদের বোলিংও। তাসকিন আর খালেদের গতির সামনে ভালোই ভুগেছেন।
পেসারদের শর্ট লেংথের বলে খেলতে গেলেই তাঁর অস্বস্তিটা বেশি চোখে পড়ছিল। নেট বোলার একটি বল পেছনে করতেই তাঁকে ফুল লেংথে বল করতে বললেন তামিম। তাসকিনকেও দিয়েছেন একই নির্দেশনা। পেসারদের বিপক্ষে ব্যাক–ফুট পাঞ্চ করেছেন বেশ কয়েকবার। প্রায় প্রতিবারই শট খেলার পর এক হাত দিয়ে পিঠ চেপে ধরেছেন। চোখেমুখে যন্ত্রণা। তবে ফুল লেংথ বলে ড্রাইভ খেলতে সমস্যা হচ্ছিল না।
স্পিনারদের নেটেও স্বচ্ছন্দ বোধ করেননি। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ফুল লেংথের বলে সহজেই ড্রাইভ খেলছিলেন। তবে ব্যাকফুটে গেলেই যত ব্যথা। মিরাজের একটা শর্ট বলে পুল শট খেলেই পিঠে হাত দিয়ে উইকেটে বসে পড়েন। তামিমের মিনিট বিশেকের নেট সেশনের সমাপ্তি এর কিছুক্ষণ পরই। ব্যথার সঙ্গে তামিমের এই যুদ্ধ দেখে সংশয় জাগা স্বাভাবিক, ১৪ জুন থেকে শুরু টেস্ট ম্যাচটাতে খেলতে পারবেন তো তিনি!
মেডিকেল বিভাগ অবশ্য এখনই তামিমের খেলার ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। দেবাশীষ চৌধুরী বলেছেন, ‘আজও তার কোমর আর পিঠে ব্যথা ছিল। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না যে তিনি খেলতে পারবেন কি না। ঝুঁকি আছে কি না, সেটি নিয়েও আমরা এখন কিছু বলতে পারব না। আমরা তাকে ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে যাব।’
তামিমকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মেঘ বাড়ছে বলেই বিকল্প ওপেনারদের নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে ব্যাক-আপ ওপেনার হিসেবে আছেন মাহমুদুল হাসান। কয়েক দিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচানো সেঞ্চুরি করেছেন। জাতীয় দলের নেটেও তাঁর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেখা যাচ্ছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের। আরেক ওপেনার জাকির হাসানের ব্যাটিং নিয়েও প্রতিদিনই কিছু না কিছু কাজ করছেন প্রধান কোচ। তামিমকে নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণেই অনুশীলনে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছেন এই দুই ওপেনার।