‘ড্রাগনস ডেন’-এর নাম শুনেছেন?
যুক্তরাজ্যের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শোতে উদ্যোক্তারা আর্থিক বিনিয়োগকারীদের সামনে নিজেদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করে থাকেন। যার মাধ্যমে উদ্ভাবনমূলক ও যথেষ্ট বড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন ব্যবসায়িক ধারণা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে।
এবার ক্রিকেটেও ‘ড্রাগনস ডেন’ ঘরানার উদ্যোগ নিচ্ছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। ক্রিকেটের একসময়ের মূল অভিভাবক ও বর্তমানে আইন প্রণনয়নের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটি ক্রিকেটের বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানদের সহায়তা নেবে।
এর মূল লক্ষ্য ক্রিকেটকে আরও জলবায়ু ও প্রযুক্তিবান্ধব খেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যার অংশ হিসেবে নরম বল তৈরি, ব্যাটে বিকল্প উপাদানের ব্যবহার এবং খেলার পিচ জলবায়ুবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর এসব উদ্যোগ গ্রহণের জন্য এমসিসির একটি গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের কার্যক্রম শুরু হবে এ বছর।
আজ টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এমসিসির পর্যবেক্ষণ বলছে, বর্তমানে ক্রিকেট বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর মধ্যে আছে বৈশ্বিক পর্যায়ে ব্যাট তৈরির প্রধান দুই উপাদান উইলো ও কেনের স্বল্পতা, জলবায়ুর প্রভাব, জরুরিভাবে একটি গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ গঠন।
এ ছাড়া প্রযুক্তিগতভাবেও অন্যান্য খেলার চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে ক্রিকেট। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে এমসিসির আইন উপকমিটি। ‘খেলা হিসেবে ক্রিকেট দীর্ঘকালীন গবেষণায় বেশ পিছিয়ে’ বলে উল্লেখ করা হয় সে প্রতিবেদনে।
সে প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, টেস্ট ক্রিকেটকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলতে দিবারাত্রির টেস্টকে সহায়ক মনে করছে এমসিসি। তবে এ ধরনের ম্যাচে ব্যবহৃত হওয়া গোলাপি বলেরও উন্নয়ন দরকার বলে পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। একই সঙ্গে ওয়ানডে, টি–টোয়েন্টির সাদা বলের মানও বাড়ানো দরকার বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সব পর্যায়ে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে ক্রিকেট সরঞ্জামের দামও নাগালের মধ্যে রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা আছে এতে।
এমসিসি নিজেদের ভূমিকা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়েকটি সম্ভাব্য উপায়ের কথা ভাবছে। এর মধ্যে আছে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা ও গবেষণা প্রতিযোগিতায় অর্থায়ন বাড়ানো এবং বার্ষিকভাবে ক্রিকেট লিডারশিপ কনফারেন্সের আয়োজন। এ ছাড়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ড্রাগনস ডেন আদলে কাজ করা, যেখানে নির্দিষ্ট প্রকল্পে বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য কোম্পানিগুলোর কাছে ব্যবসায়িক ধারণা তুলে ধরা হবে।
২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির বৈঠকে আইন উপকমিটির প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। কমিটি মত দিলে আগামী অক্টোবরের বৈঠকে গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ একটি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তুলে ধরবে।