আলোচনাটা পুরোনো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা টেস্ট খেলতে পছন্দ করেন না, এটা মোটামুটি ক্রিকেট মহলে প্রতিষ্ঠিত সত্য। টেস্টের চেয়ে তাঁদের পছন্দ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ। যে টুর্নামেন্টগুলো দেয় স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের সুযোগ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা এই সুযোগটাই লুফে নেন। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলও মানছেন, তাঁরা টেস্ট খেলতে পছন্দ করেন না। তবে এটার কারণ যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে টাকার অভাব, সেটি মানছেন না এই অলরাউন্ডার।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগ ও ঠাসা সূচির কারণে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটে নিয়মিত ঘটনা। ২০১০ সালেই ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, ডোয়াইন ব্রাভোরা এমন চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ‘ফ্রিল্যান্স’ ক্রিকেটার হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি গেইল সে সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কও ছিলেন।
সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন সাবেক দুই অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও নিকোলাস পুরান এবং অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। যদিও এদের মধ্যে হোল্ডার এখনো টেস্ট খেলছেন। তবে অন্যদের বেশির ভাগই সাদা পোশাকের ক্রিকেটের ধারেকাছেও যান না। রাসেল তো পুরো ক্যারিয়ারে টেস্টই খেলেছেন মাত্র ১টি, সেটাও ২০১০ সালে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টেস্ট খেলে বেশি টাকা পাওয়া যায় না, এটাকেই শুধু কারণ মনে করেন না রাসেল, ‘আমরা মনে হয় না ব্যাপারটা শুধুই টাকাপয়সার, আমি মনে করি না টাকাটাই প্রধান বিষয়। আসলে যে পরিমাণ টি-টোয়েন্টি লিগ সারা দুনিয়ায় হচ্ছে, আমার মনে হয় বেশির ভাগ ক্রিকেটারই এমনিতেই টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয়।’
তিনি যোগ করে বলেছেন, ‘আমি অন্য ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটারদের ব্যাটিং দেখতে রোমাঞ্চকর অনুভব করি, বিশেষ করে যখন তারা একের পর এক বাউন্ডারি মারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি চুক্তির বাইরে থেকে ভালো করবেন, আমার মনে হয় তারা সুযোগটা নেবে। সবাই আসলে বড় মঞ্চে খেলতে চায়। টেস্ট ক্রিকেটে যদি এমন বড় মঞ্চ আসে, আমি জানি তরুণেরা হাসিমুখে খেলবে। আমার মনে হয় না এটার সঙ্গে টাকা বা অন্য কিছুর সম্পর্ক আছে।’
মাত্র একটি টেস্ট খেলা রাসেল নিজের টেস্ট ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট আমার বিষয় নয়। আমার মনে হয় না টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য আমরা প্রস্তুত। এই মুহূর্তে যারা দলে আছে, তারা যথেষ্ট ফিট, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ইংল্যান্ড সিরিজে কিছু মুহূর্ত ছিল যখন তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারত। অবশ্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠে খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য কঠিনই।’