হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন সাকিব
হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন সাকিব

পুরোনো কথাই নতুন করে বললেন সাকিব

প্রশ্নগুলো প্রত্যাশিত, উত্তরও তা–ই। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রতিটি হারের ধরন যেহেতু একই, ম্যাচ শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বটাও এ রকমই হওয়ার কথা। কাল যেমন ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে হারের কারণ জানতে চাইলেন সঞ্চালক রমিজ রাজা। সাকিব উত্তর দেওয়ার আগে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার তাঁর প্রশ্নের সঙ্গে জুড়ে দেন ব্যাটিং–ব্যর্থতার প্রসঙ্গটাও।

সাকিবও সেই সুর ধরেই উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, যথেষ্ট রান ছিল না...।’ এরপর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যা বললেন, সেটা বিশ্বকাপজুড়েই বলে আসছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘উইকেট খুব ভালো ছিল। কিন্তু আমরা আবারও শুরুতে উইকেট হারিয়েছি। সেখান থেকে কিছু জুটি গড়েছি। কিন্তু যথেষ্ট বড় জুটি ছিল না। যেখান থেকে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হতো যেন আমরা শেষ ১০ ওভারে দ্রুত রান তুলতে পারি। হ্যাঁ, ব্যাটিং নিয়ে অবশ্যই হতাশ।’ শেষে বোলারদের পারফরম্যান্সও যে প্রত্যাশিত ছিল না, সাকিব বলেছেন সেটাও, ‘আমাদের বোলিং খুব যে ভালো হয়েছে, তা বলব না। তবে পাকিস্তান যেভাবে বোলিং করেছে এবং প্রথম ১০ ওভারে ব্যাটিং করেছে, কৃতিত্বটা ওদের দিতেই হবে।’

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং–ব্যর্থতার পাশাপাশি বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং পজিশন নিয়েও অনেক আলোচনা হচ্ছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে তিনে ব্যাটিং করে ৬০৬ রান করা সাকিব এবার ৬ ম্যাচে ৬ ইনিংস ব্যাট করে রান করেছেন মাত্র ১০৪। ব্যাটিং করেছেন ৪, ৫ ও ৬ নম্বরে। এমন সদা পরিবর্তনশীল ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে এখন যেন সাকিবের মনেও প্রশ্ন। সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল কি না, তা নিয়ে অধিনায়কের সংশয় প্রকাশ পেল তাঁর কথাতেই, ‘চিন্তা করতে হবে, আমরা ওপরের সারির চার ব্যাটসম্যান থেকে বেশি রান পাচ্ছি না। আমিও ওপরে ব্যাটিং করেছি। কিন্তু আমিও রান করছিলাম না। বুঝতেই পারছেন, আমার আত্মবিশ্বাসও ভালো জায়গায় ছিল না।’

বাংলাদেশকে হারিয়ে জয়ে ফিরেছে পাকিস্তান

গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয়ে নেমেছেন সাকিব। নিচে ব্যাটিং করে এবারের বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। সেই ইনিংসের সূত্র ধরেই সাকিব বললেন, ‘ভাগ্য ভালো আজ (গতকাল) কিছু রান পেয়েছি। কিছুটা ভালো লাগছে।’ তবে বিশ্বকাপের বাকি দুই ম্যাচে যে সাকিবের তিনে উঠে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন আভাস তাঁর কথায়ও, ‘আমরা এ নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এই মুহূর্তে পরিবর্তন আনা কঠিন। অনেকটা বাধ্য হয়েই কিছু করার চেষ্টা করছি, কিন্তু এটা কাজে দিচ্ছে না। তবে আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। এমন কিছু করতে হবে, যা কাজে লাগতে পারে।’

শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাকি দুই ম্যাচে বাংলাদেশের করণীয় একটাই—দল হয়ে পারফর্ম করা। সাকিবও বললেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের এক হয়ে পারফর্ম করতে হবে। একা কেউ জিতিয়ে দেবে, তা নয়। আমাদের দলগত পারফরম্যান্স দরকার। আরও দুটি ম্যাচ আছে। আশা করি, আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’ সমর্থকদের জন্যই এটা করতে চান সাকিবরা, ‘আমরা যেখানেই যাই, দর্শকেরা আমাদের খেলা দেখতে যায়। আমরা ভালো করি কিংবা খারাপ, দর্শকেরা সব সময় আমাদের সমর্থন দিয়ে আসছে। দর্শকেরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমরা তাদের কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই যেন তাদের মুখে হাসি আসে।’