চোটে পড়েছেন গত বছরের জুলাইয়ে। এক মাস পর আগস্টে ইংল্যান্ডে হয় হাঁটুতে অস্ত্রোপচার। এখন চলছে পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া। হাঁটুর সে চোটে ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে থেকেও ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিস করেছেন পেসার ইবাদত হোসেন।
এমনকি হাঁটাচলা করাও হয়েছিল কষ্টের বিষয়। খারাপ সময় অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন এই পেসার। বল হাতে নিজের সামর্থ্যের ৭০-৮০ শতাংশ দিতে পারছেন তিনি। এ সময়ে এসে শুরুর সেই সময়টার কথা ভুলেই যেতে চান ইবাদত।
ইবাদত আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক কষ্টের সময় ছিল। মনে করতেই চাই না। সব সময় একা একা লাগত। খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে থাকব, খেলব, সেটা পারছিলাম না বলেই কষ্ট হচ্ছিল। সঙ্গে হাঁটতেও পারছিলাম না। বাইরে যাব, কারও সঙ্গে দেখা করব, এমন কোনো সুযোগই ছিল না।’
চোটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইবাদত বলেন, ‘আজকে রানিং করলাম, ফিটনেসের কাজ করলাম। ব্যাটিং করেছি, শেষে বোলিং করলাম। বোলিং শুরু করেছি এক–দেড় মাস হলো। বোলিং ইনটেনসিটির ৭০–৮০ শতাংশ দিতে পারতাম, ওভাবেই আছে এখনো। ট্রেইনার একটা প্রোগ্রাম দিয়েছেন, শেষ অংশে কীভাবে বোলিং করতে হয়, কেমন ফিটনেস বজায় রাখতে হবে। ওটা মেনে অনুশীলন করছি। আশা করছি, আগামী এক–দুই সপ্তাহের মধ্যে ফুল ছন্দে বোলিং করতে পারব।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজ দিয়েই ফেরার আশা করছেন ইবাদত, ‘আমার লক্ষ্য আছে যেন ভারতের সঙ্গে খেলতে পারি। ভারত সিরিজের আগে নিজেদের মধ্যে একটা চার দিনের ম্যাচ খেলার সুযোগ আছে। ওখানে খেলার সুযোগ থাকলে নিজের ফিটনেসটা বুঝতে পারব। টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য কতটুকু ফিট, বুঝতে পারব। দেখা যাক।’
এক বছরের বেশি সময় ধরে মাঠের বাইরে ইবাদত। স্বাভাবিকভাবেই নতুন করে পুরোনো ছন্দ পাওয়া কঠিন। তবে ইবাদত আশাবাদী, ছন্দটা দ্রুতই খুঁজে পাবেন। তিনি বলেন, ‘বোলিংয়ে ছন্দ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন যে ছন্দে বোলিং করছি, আমার কাছে ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে, আমি আমার ছন্দটা খুঁজে পাচ্ছি। এটা একটা ইতিবাচক বিষয়। এই সময়ে আমি আমার দ্বিতীয় স্কিল ব্যাটিং ও ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করছি। আমার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো যেখানে খেলাটা শেষ করেছি, ওখান থেকে যেন আরও ভালো জায়গায় যেতে পারি। ওখান থেকে যেন মানটা আর নিচে না নামে। ওইটাই আমার মূল উদ্দেশ্য।’
টেস্ট দিয়ে ফেরাটা তাঁর জন্য কঠিন হবে কি না, এই প্রশ্নে ইবাদত বলেন, ‘ম্যানেজমেন্ট ভাবছে কোন সংস্করণ দিয়ে ফেরা আমার জন্য ভালো হয়। ভারত সিরিজের আগে চার দিনের একটা ম্যাচ খেলতে পারলে আমি আমাকে বিচার করতে পারব। তখন বুঝতে পারব, টেস্টের জন্য আমি কতটুকু ফিট।’
ইবাদত এরপর পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ার সময়ের কথা বলেন, ‘এক বছর হয়ে গেল ক্রিকেট খেলতে পারছি না। ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিস করলাম, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিস করলাম। অপারেশন যখন করি, তখন ভাবতেই পারিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিস করব। কিন্তু বড় সার্জারি হওয়ার কারণে..., খুব কষ্টদায়ক। পুনর্বাসনপ্রক্রিয়াটা অনেক কষ্টের, যারা করেছে, তারাই জানে। সেদিন বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম। উনিও বলছিলেন, “রিহ্যাব আমিও করেছি, যারা করে, তারাই বোঝে।”’