বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানে হেরে যাওয়ার পর ভারত দলের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আসছে ভিন্ন প্রসঙ্গও। এর আগে সাবেক স্পিনার হরভজন সিং বলেছিলেন, স্পিন-সহায়ক উইকেটে খেলে মেকি আত্মবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে ভারতের। এবার আসছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘ঔদ্ধত্য বাসা বাঁধা’র প্রসঙ্গও। দারুণ সব খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলটিকে নিয়ে নানা ধরনের মূল্যায়ন হচ্ছে, সেটি ঘরে কিংবা ঘরের বাইরেও।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অ্যান্ডি রবার্টস যেমন মনে করেন, ভারতীয় দলটার মধ্যে যথেষ্ট ঔদ্ধত্য কাজ করে। তারা প্রতিপক্ষকে অবমূল্যায়ন করে। সে কারণেই তাদের আজ এই অবস্থা। মিড ডে পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সত্তর ও আশির দশকের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার রবার্টস মন্তব্য করেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে একধরনের ঔদ্ধত্য বাসা বেঁধেছে। এ কারণেই তারা প্রতিপক্ষকে পাত্তা দিতে চায় না। বাকি দুনিয়াকে তারা কিছুটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।’
রবার্টসের মতে, ভারতীয় দলকে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে একটা নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে হবে, ‘ভারতীয় ক্রিকেটকে ঠিক করতে হবে, তারা কোন সংস্করণে জোর দেবে। তারা কি টেস্টে গুরুত্ব দেবে, না সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিজের মতো করে চলতে থাকবে। সেখানে ব্যাট ও বলের মধ্যে সত্যিকারের কোনো লড়াই নেই।’
ভারতীয় দলে যে মানের ক্রিকেটার আছে, তাতে দলটির কাছ থেকে আরও মানসম্মত ক্রিকেট প্রত্যাশা করেন রবার্টস। তিনি মনে করেন, এ মুহূর্তে ভারত প্রত্যাশামাফিক মানসম্মত ক্রিকেট খেলতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে, ‘আমার প্রত্যাশা, ভারতীয় দল তাদের ব্যাটিংয়ের মান অনুযায়ী পারফর্ম করুক। আমি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অজিঙ্কা রাহানের লড়াই ছাড়া ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের কোনো উজ্জ্বল দিক দেখতে পাইনি। শুবমান গিল যখন শট খেলে, তখন দেখতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু সে লেগ স্টাম্পের ওপর দাঁড়িয়ে খেলে। তাই সে বেশি বোল্ড ও কট বিহাইন্ড হয়। বিরাট কোহলি অবশ্য প্রথম ইনিংসে মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত এক বলে আউট হয়েছে। মনে রাখতে হবে, ভারতীয় দলের দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে। কিন্তু তারা মোটেও বিদেশের মাটিতে তাদের মান অনুযায়ী খেলতে পারে না।’
ফাইনালে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বসিয়ে রাখার ব্যাপক সমালোচনা চলছে। শচীন টেন্ডুলকার থেকে শুরু করে সুনীল গাভাস্কার—প্রায় সবাই দলের সেরা স্পিনারকে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বসিয়ে রাখার কড়া সমালোচনা করেছেন।
রবার্টসও একমত তাঁদের সঙ্গে। তাঁর মতে, সিদ্ধান্তটা ছিল খুবই বাজে। ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণে যেকোনো দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারটি বুঝে উঠতে পারছেন না ক্যারিবীয় কিংবদন্তি, ‘রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটা খুবই বাজে ছিল। আপনি আপনার দলের সেরা স্পিনারকে কীভাবে বাদ দেন?’