ম্যাচের আগে বিশাখাপট্টনমের গ্যালারিতে দেখা গেল ব্যানারটা। ঋষভ পন্তের ছবির পাশে লেখা, ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’—লিভারপুলের বিখ্যাত ওই মন্ত্র।
কারও যদি সমর্থন প্রাপ্য হয়, সেটি তো পন্তই।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভয়ংকর সেই দুর্ঘটনার পর ক্রিকেটে কেন, আগের মতো জীবনে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েই সংশয় ছিল। সে সব পেরিয়ে পন্ত ফিরলেন এবারের আইপিএল দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে। প্রথম ম্যাচে ১৩ বলে ১৮ রানের পর ২৬ বলে ২৮ রান। ঠিক আগের সে পন্তকে খুঁজে পাওয়া যায়নি তাতে।
গতকালও চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচটিতে একসময় পন্তের স্কোর ছিল ২৩ বলে ২৩ রান। পন্ত লাফ দিলেন সেখান থেকে। পরের ৮ বলে করলেন ২৮ রান। পেলেন ফিফটির দেখা। যে ম্যাচটি পরে দিল্লি জিতেছে ২০ রানে।
এমন ম্যাচের পর পন্ত বলেছেন, ক্রিকেটে তাঁকে ফিরতেই হতো। ক্রিকেটে ফেরা নিয়েও নাকি সংশয় ছিল না তাঁর, ‘আমার মনে হয়, আত্মবিশ্বাসটা সব সময়ই ছিল—যা-ই ঘটুক না কেন জীবনে, আমাকে মাঠে ফিরতে হবে। এভাবেই ভেবেছি, এর বাইরে অন্য কিছু ভাবিনি।’
কত দিন বাইরে ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আরও বলেছেন, ‘আমি মাঠে প্রতিটি দিন উপভোগ করি। কারণ, আমার জীবন এর ওপর সঁপে দিয়েছি।’
গতকাল পন্ত উঠে এসেছিলেন ৩ নম্বরে। ১৫তম ওভারে মাতিশা পাতিরানার ৩ বলের মধ্যে মিচেল মার্শ ও ট্রিস্টান স্টাবস বোল্ড হওয়ার পর দায়িত্বটা বেড়ে যায় দিল্লি অধিনায়কের। সেটি তিনি পালন করেন দারুণভাবেই। ম্যাচের পর পন্ত বলেছেন, ‘দেখুন, ক্রিকেটার হিসেবে ফিরে এলাম বা এমন কিছু ভাবছি না। তবে প্রতিদিন শতভাগ দিতে হবে আমার। ফলে আমি যা করেছি, প্রাথমিকভাবে সময় নিয়েছি। কারণ, গত দেড়-দুই বছরে তেমন খেলিনি। নিজেকে তাই একটু সময় দিতে হতো।’
নিজের ওপর বিশ্বাসও ছিল তাঁর, ‘একই সময়ে আমি বিশ্বাস রেখেছি, ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারব।’
সেটি তিনি পেরেছেনও। ম্যাচের পর দিল্লির ডিরেক্টর অব ক্রিকেট সৌরভ গাঙ্গুলি টুইট করেছেন, ‘দারুণ খেলেছো, ঋষভ পন্ত। এ ইনিংসটি আজীবন মনে রাখবে তুমি। অনেক দারুণ ইনিংস খেলেছো এবং এর চেয়ে ভালো আরও খেলবে। তবে এর গল্পটি তোমার সঙ্গে থেকে যাবে আজীবন।’
এ ইনিংস দিয়েই যে আরেকবার ক্রিকেটে ফিরলেন পন্ত!