ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক এনামুল হক
ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক এনামুল হক

ঢাকাকে ১০ উইকেটে হারিয়ে এনামুলের খুলনার চারে চার

৮.৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৫ রান—সিলেটে আজ দুর্দান্ত শুরুই করেছিল দুর্দান্ত ঢাকা। কিন্তু ২০ ওভার শেষে সেই ঢাকাই কিনা ইনিংস শেষ করল ৯ উইকেটে ১৩০ রানে! বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো খুলনা টাইগার্স ৩২ বল হাতে রেখে ওই রান টপকে গেছে কোনো উইকেট না হারিয়েই। চার ম্যাচে চার জয়, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে টপকে আবারও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে এনামুল হকের খুলনা। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য শীর্ষে উঠেছিল চট্টগ্রাম

রান তাড়ায় সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন এনামুল। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেওয়া খুলনা অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫৮ রানে। ৪৮ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এভিন লুইসকে নিয়ে ৪.৩ ওভারেই দলকে ৫০ রান এনে দেন এনামুল। ১৩ বলে ২৬ রান করা লুইস পঞ্চম ওভারে সাইড স্ট্রেইন চোটের কারণে উঠে যান। তাঁর বদলি হিসেবে নামা আফিফও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ২৭ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকা আফিফ মেরেছেন ৩টি ছক্কা। ৩ ছক্কার দুটিই আফিফ মেরেছেন ১২তম ওভারের শেষ দুই বলে আরাফাত সানিকে।

উদ্বোধনী জুটিতে ২৭ বলে ৫০ রান করেছেন এভিন লুইস ও এনামুল হক

এর আগে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান সাইম আইয়ুবকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৫ রান তুলে ফেলেন মোহাম্মদ নাঈম। এর ১৭-ই আসে আফিফ হোসেনের করা নবম ওভারের প্রথম পাঁচ বলে। ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে একস্ট্রা কাভার ও বোলারের মাথার ওপর দিয়ে দুটি ছক্কা মারার পর পঞ্চম বলে চার মারেন নাঈম। ওভারের শেষ বলে আফিফ হোসেনকে আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এবার ছক্কা নয়, একস্ট্রা কাভারে এভিন লুইসের হাতে ক্যাচ তোলেন নাঈম।

২১ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ রান করা নাঈম বিদায় নিতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ঢাকার ইনিংস। পরের ওভারেই বিদায় নেন পাকিস্তানি ওপেনার আইয়ুব। শানাকার বলে উইকেটের পেছনে এনামুলের শিকার হওয়া পাকিস্তান জাতীয় দলের ব্যাটসম্যান ৩৭ বলে করেছেন ৩৫ রান।

৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা মোহাম্মদ নেওয়াজ

দ্রুত আরও ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭তম ওভারে ১১৪/৯ হয়ে যায় ঢাকা। ঢাকা অলআউট হয়নি শেষ দুই ব্যাটসম্যান আরাফাত সানি ও শরীফুল ইসলামের সৌজন্যে। শেষ ২০ বল টিকে থেকে ১৬ রান যোগ করেন দুজন। শরীফুল অবশ্য ৭ বলে করেছেন মাত্র ১ রান। সানি ১৪ বলে করেন অপরাজিত ১৫ রান।

শেষের এই প্রতিরোধের আগে আফিফের শুরু করা ধ্বংসযজ্ঞে নেতৃত্ব দেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। পাকিস্তানি বাঁহাতি স্পিনার ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। তবে সবচেয়ে মিতব্যয়ী ছিলেন আরেক পাকিস্তানি মোহাম্মদ ওয়াসিম। ডানহাতি পেসার ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

দুর্দান্ত ঢাকা: ২০ ওভারে ১৩০/৯ (আইয়ুব ৩৫, নাঈম ৪১, নাইব ৩, মেহেরব ৩, রস ২১, ইরফান ৩, মোসাদ্দেক ০, তাসকিন ৪, কাদির ১, আরাফাত ১৫*, শরীফুল ১*; নাহিদুল ২-০-২০-০, ওয়াসিম ৪-০-১৩-২, শানাকা ২-০-১৫-১,  নেওয়াজ ৪-০-১৫-৩, আফিফ ২-০-২৬-১, মুকিদুল ৩-০-২৩-২, নাসুম ৩-০-১৭-০।
খুলনা টাইগার্স: ১৪.৪ ওভারে ১৩১/০  (এনামুল ৫৮*, লুইস আহত অবসর ২৬*, আফিফ ৩৭*; তাসকিন ২-০-১৯-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৯-১, আইয়ুব ১-০-১২-০, শরীফুল ২-০-১৯-০, নাইব ২-০-১৭-০, কাদির ৩-০-১৪-০, আরাফাত ২-০-২৫-০, মেহেরব ০.৪-০-৪-০।
ফল: খুলনা টাইগার্স ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ নেওয়াজ।