সিরিজের শেষ টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং ছিল হতশ্রী
সিরিজের শেষ টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং ছিল হতশ্রী

রিতু-শরিফার রেকর্ড জুটির পরও ভারতের কাছে ধবলধোলাই বাংলাদেশ

সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির পর সর্বোচ্চ স্কোর—দুটিই এল এ ম্যাচে। কিন্তু ১৫৭ রানের লক্ষ্যে সেসব যথেষ্ট হয়নি বাংলাদেশের। ষষ্ঠ উইকেটে রিতু মনি ও শরিফা খাতুনের রেকর্ড ৫৭ রানের জুটি ছাপিয়ে সিলেটে শেষ ম্যাচে ২১ রানে জিতে ৫ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশকে ধবলধোলাই করেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারত—এ নিয়ে টানা দুটি সিরিজে ধবলধোলাই হলো বাংলাদেশ।

রান তাড়ায় প্রথম ৬ ওভারে ৩৬ রান তুলতে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে পূজা বস্ত্রকরকে ৩টি চার মারা সোবহানা থামেন তিতাস সাধুর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলে, পয়েন্টে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন রাধা যাদব। দিলারা স্বছন্দ ছিলেন না, পরের ওভারে রাধাকে টেনে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন তিনিও।

দ্রুত ২ উইকেট হারানো, পাওয়ার প্লে ব্যবহার করার তাড়না, সঙ্গে আবার বড় লক্ষ্যের চাপ—নিগার সুলতানা ও রুবাইয়া হায়দারের ওপর ছিল বড় দায়িত্ব। তবে দুজনের জুটিটা বড় হয়নি, রাধার ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন অধিনায়ক নিগার। ১৪ বলে ৭ রান তাঁর, এ নিয়ে টানা চার ম্যাচে বোল্ড বা এলবিডব্লু তিনি। তিন বল পর অধিনায়ককে অনুসরণ করেন এলবিডব্লু হওয়া রুবাইয়াও।

৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া বাংলাদেশকে টানেন রিতু ও শরিফা। ৪১ বলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান, শুধু এ সিরিজে যেকোনো উইকেটে নয়, ষষ্ঠ উইকেটে যেকোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গেই বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ জুটি। লেগ স্পিনার আশা সোবহানার স্লোয়ারে রিতু বোল্ড হলে ভাঙে সেটি। শরিফা যদিও টিকে ছিলেন শেষ পর্যন্ত, রাবেয়াকে নিয়ে গড়েন ২৬ রানের জুটি। তবে সেগুলো হয়ে থেকেছে সান্ত্বনা।

এর আগে চতুর্থ ম্যাচের মতোই ভারতকে বড় স্কোর এনে দিতে অবদান রাখেন স্মৃতি মান্ধানা, দয়ালান হেমলতা, হারমানপ্রীত কৌরের পর রিচা ঘোষ। দুই স্পিনার নাহিদা আক্তার ও রাবেয়া খান মাঝে লড়াইটা না করলে ভারতের স্কোর হতে পারত আরও বেশি। আবার বাংলাদেশের ধারাবাহিক হতশ্রী ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনীটা আজও না চললে ভারত আটকে যেতে পারত আরও আগেই।

ম্যাচে এমন আনন্দময় মুহূর্ত কমই পেয়েছে বাংলাদেশ

পাওয়ার প্লেতে শেষ ২ ওভারের ঝড়ে ভারত তোলে ৫১ রান, হারায় শেফালি বর্মার উইকেট। নাহিদা ও রাবেয়ার আঁটসাঁট বোলিংয়ে ভারতের রানের গতিটা কমে আসে এরপর। নিজের প্রথম ওভারে স্মৃতিকে ফেরান নাহিদা, ঠিক পরের বলে হেমলতার উইকেট পেতে পারতেন রাবেয়া। কিন্তু লং অফে সহজতম সুযোগ ফেলেন ফারিহা ইসলাম। ১ বল পর হেমলতা আবার ক্যাচ তুলেছিলেন, সেবার অবশ্য ঠিক নাগাল পাননি শরিফা। শুরুতে শেফালি ও স্মৃতিও দিয়েছিলেন এমন সুযোগ।

হেমলতার উইকেট সে সময় বদলে দিতে পারত চিত্রটা। উইকেট না পেলেও সে সময় বাউন্ডারি দেয়নি বাংলাদেশ, ২৩ বলে যে খরা কাটে ডিপ মিডউইকেটে রাবেয়ারই মিসফিল্ডে। এর আগে স্বর্ণাও দেন অমন একটি বাউন্ডারি। এবার পরের ২৩ বলে আসে ৪৪ রান। হারমানপ্রীতের সঙ্গে হেমলতার ৬০ রানের জুটি ভাঙেন নাহিদা, ভারত অধিনায়ককে এলবিডব্লু করেন।

পরের ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে হেমলতা ও সজীবন সাজানার উইকেট নেন রাবেয়া, ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিকে রিচা ঘোষের ১৭ বলে ২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভারত পেরোয় ১৫০।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত নারী দল : ২০ ওভারে ১৫৬/৫ (স্মৃতি ৩৩, কৌর ৩০, হেমলতা ৩৭, রিচা ২৮*; রাবেয়া ২/২৮, নাহিদা ২/২৭, সুলতানা ১/২৬)।

বাংলাদেশ নারী দল : (সোবহানা ১৩, রুবাইয়া ২০, রিতু ৩৭, শরিফা; রাধা ৩/২৪, সোবহানা ২/২৫, তিতাস ১/২৭)।

ফল: ভারত নারী দল ২১ রানে জয়ী।
সিরিজ: ভারত নারী দল ৫-০-তে জয়ী।