বিরাট কোহলি-ফাফ ডু প্লেসিরাও হয়তো সতীর্থ বোলারদের থেকে এতটা আশা করেননি। তবে রাজস্থান রয়্যালস ৩১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর নিশ্চয় মোহাম্মদ সিরাজ–ওয়েন পারনেলদের কাছে আরও ভালো বোলিংয়ের প্রত্যাশায় ছিলেন!
আইপিএল ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড যে কোহলি–ডু প্লেসিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর! ২০১৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ৪৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরু। ব্রিবতকর সেই রেকর্ড থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ মিলেছিল আজ। কিন্তু অল্পের জন্য হলো না।
বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে জস বাটলার–সঞ্জু স্যামসনদের রাজস্থান অলআউট হয়েছে ৫৯ রানে; যা আইপিএল ইতিহাসের তৃতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। জয়পুরের সাওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ১৭১ রান তোলা বেঙ্গালুরু জিতেছে ১১২ রানের বিশাল ব্যবধানে।
আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহটাও রাজস্থানের। ২০০৯ সালে এই বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেই ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে সেবার টুর্নামেন্ট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়।
দুর্দান্ত এ জয়ে নেট রান রেটে অনেক এগিয়ে গিয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এসেছে বেঙ্গালুরু। রাজস্থান নেমে গেছে ছয়ে। দুদলেরই পয়েন্ট সমান ১২ করে। তবে বেঙ্গালুরু রাজস্থানের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছে।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বেঙ্গালুরুকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন কোহলি ও ডু প্লেসি। উদ্বোধনী জুটিতে তাঁরা তোলেন ৫০ রান। কোহলি ১৯ রানে আউট হলেও গ্লেন ম্যাকওয়েলকে নিয়ে আরেকটি বড় জুটি গড়েন অধিনায়ক ডু প্লেসি। দুজনই পেয়ে যান ফিফটি। শেষ দিকে অনুজ রাওয়াতের ১১ বলে ২৯ রানের ‘ক্যামিও’তে লড়াইয়ের মতো সংগ্রহ পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু।
বৃহস্পতিবার নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে কলকাতার দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্য ৪১ বল আর ৯ উইকেট অক্ষত রেখে টপকে গিয়েছিল রাজস্থান। সে রাতে আইপিএল ইতিহাসে দ্রুততম ফিফটির (১৩ বলে) কীর্তি গড়েছিলেন যশস্বী জয়সোয়াল। সে হিসেবে ঘরের মাঠে আজ ১৭২ রানের লক্ষ্যটা নিজেদের নাগালেই থাকার কথা রাজস্থানের।
কিন্তু দুই দিনের ব্যবধানে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখে ফেললেন কুমার সাঙ্গাকারা–লাসিথ মালিঙ্গার শিষ্যরা। জয়সোয়াল আউট হয়েছেন ০ রানে। তাঁকে ‘কপি–পেস্ট’ করেছেন বাটলারও। আইপিএলে এ নিয়ে ১১বার কোনো দলের দুই ওপেনার ০ রানে আউট হলেন। রাজস্থানের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার।
শুরুর ধাক্কা সামলে আইপিএলে জয়ের রেকর্ড বহু আছে। তবে আজকের দিনটা বোধ হয় বেঙ্গালুরুর বোলারদের নামেই লেখা ছিল। শিমরন হেটমায়ার ও জো রুট ছাড়া কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেনি। বাকিদের স্কোর দেখলে মনে হবে ফোন নম্বরের ডিজিট— ০,০,৪,৪,১,০,২,০*,০! বেঙ্গালুরুর হয়ে বোলিং করেছেন পাঁচজন, উইকেট পেয়েছেন প্রত্যেকেই।
রাজস্থানের গ্লানিমাখা দিনে আরেকটি রেকর্ড সঙ্গী হয়েছে বেঙ্গালুরুর। প্রথম দল হিসেবে আইপিএলে চারবার ১০০ রানের বেশি ব্যবধানে জয়ের কীর্তি গড়েছেন কোহলিরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু : ২০ ওভারে ১৭১/৫
(ডু প্লেসি ৫৫, ম্যাক্সওয়েল ৫৪; জাম্পা ২/২৫, আসিফ ২/৪২)
রাজস্থান রয়্যালস : ১০.৩ ওভারে ৫৯
(হেটমায়ার ৩৫, রুট ১০; পারনেল ৩/১০, ব্রেসওয়েল ২/১৬)
ফল : রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১১২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ওয়েন পারনেল।