দ্য হানড্রেডে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন স্টুয়ার্ট ব্রড
দ্য হানড্রেডে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন স্টুয়ার্ট ব্রড

ভুলে খেলোয়াড় হিসেবে লর্ডসে ঢুকতে গিয়ে আটকে গিয়েছিলেন ব্রড

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্টুয়ার্ট ব্রডের শেষ দিন ছিল গত ৩১ জুলাই, সোমবার। ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজের শেষ ম্যাচে স্মরণীয় বিদায় নেন ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম পেসার। এক দিন পরই বুধবার লন্ডনের আরেক ভেন্যুতে নতুন ভূমিকায় গিয়েছিলেন ব্রড। তবে সেখানে পড়েন বিড়ম্বনায়।

স্কাই স্পোর্টসের হয়ে দ্য হানড্রেডে ধারাভাষ্য দেবেন এবার, সেটি ঠিক করা ছিল আগেই। এর আগেও ধারাভাষ্য দিয়েছেন ব্রড। ২ আগস্ট লর্ডসে ছিল হানড্রেডের ‘লন্ডন-ডার্বি’—ওভাল ইনভিনসিবলসের মুখোমুখি হয়েছিল লন্ডন স্পিরিট। সে ম্যাচে ধারাভাষ্য দেন ব্রড। তবে লর্ডসে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন ইংল্যান্ডের সদ্য সাবেক ক্রিকেটার। তিনি যে পাস নিয়ে ঢুকতে চেয়েছিলেন, সেটি ছিল মূলত খেলোয়াড়ের। তবে অবসরে গেছেন বলে ব্রডের কার্ড কাজ করেনি আর। ঢুকতে গেলে তাঁর প্রয়োজন ছিল স্কাই স্পোর্টসের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড।

ব্রড শেষ পর্যন্ত সে ম্যাচে ধারাভাষ্য দিতে পেরেছেন ঠিকঠাকই। এ মৌসুমে অন্তত ১২ দিন হানড্রেডে ধারাভাষ্য দেওয়ার কথা আছে তাঁর। ক্রিকেট ছাড়ার পর এ পেশাতেই পুরোপুরি আসছেন ব্রড, সেটিও ধরে নিয়েছেন অনেকেই। ধারাভাষ্য ক্যারিয়ারই দীর্ঘ মেয়াদে শুরু করবেন কি না, সেটি অবশ্য নিশ্চিত করেননি তিনি।

দীর্ঘ মেয়াদে ধারাভাষ্যে আসতে পারেন ব্রড

অবশ্য এ মৌসুমের শেষে স্কাই স্পোর্টসের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ মেয়াদের চুক্তির খবর শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য টেলিভিশনেও কাজ করার প্রস্তাব পাচ্ছেন তিনি, তবে সেগুলোর বেশির ভাগই রিয়েলিটি শোতে। অবসরের ঘোষণার পর থেকে ‘স্ট্রিক্টলি কাম ড্যান্সিং’ নামের শোতে ব্রড যাবেন কি না—সে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ শোতে মূলত তারকারা নাচেন। তবে শুরু থেকেই এটি নাকচ করে আসছেন ব্রড। সম্প্রতি ডেইলি মেইলকে তিনি বলেছেন, ‘এক, আমি নাচতে পারি না। দুই, নতুন কোনো কিছুর জন্য অনুশীলন না করার ভাবনাটাই আপাতত পছন্দ হচ্ছে আমার।’

এবারের অ্যাশেজে একমাত্র ইংলিশ পেসার হিসেবে পাঁচটি টেস্টই খেলেছিলেন ব্রড। ৩৭ বছর বয়সী এ পেসারের অবসর-সংক্রান্ত তেমন কোনো আলোচনাও ছিল না। তবে ওভালে শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলাশেষে হুট করেই অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। ব্রড জানিয়েছিলেন, আগে থেকেই এমন ভাবনা ছিল তাঁর।

এমনিতেও আগামী বছরের জানুয়ারির আগে ইংল্যান্ডের টেস্ট নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটও খেলেন না ব্রড। তবে পেশাদার ক্যারিয়ার অ্যাশেজেই শেষ করতে চেয়েছিলেন বলে অমন সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর। ব্রডের বিদায়টাও হয় রূপকথার মতো

দ্বিতীয় টেস্ট শেষে ২-০-তে সিরিজে পিছিয়ে পড়ার পর ড্র করতে গেলে শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার শেষ ২ উইকেট নিয়ে সে জয় নিশ্চিত করেন ব্রড। ২-২ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে ইংল্যান্ড। যদিও ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্ট বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরই অ্যাশেজ ধরে রাখা নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।

অবশ্য ক্যারিয়ার নিয়ে কোনোই আক্ষেপ করতে চান না ব্রড, অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েও না। সে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদায়ী ম্যাচ খেলার পর তিনি বলেছেন, ‘আমার সবসময়ই একটা ভয় কাজ করত। এক দিন হয়তো ২০ বছর বয়সী কেউ এসে বলবে, “শুনেছিলাম তো ঠিকঠাকই খেলে, কিন্তু আসলে তো জঘন্য!” ফলে আমি কাজটি করতে পারি—লোকে এমন ভাবার সময়ই আমি বিদায় বলতে চেয়েছি। দুজন মানুষ আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে এতে। ইংল্যান্ড দল থেকে অ্যালেস্টার কুক যেভাবে সরে দাঁড়িয়েছিল, আর নটিংহামশায়ার থেকে ক্রিস রিড। রিডকে তো তার প্রতিটি সতীর্থই বলছিল, “আরও এক বছর সহজেই খেলতে পারতে”।’