রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ফিফটি, কুলদীপ যাদবের ৪০ রান, অষ্টম উইকেটে দুজনের ৯২ রানের জুটির পর উমেশ যাদবের ১০ বলে ১৫ রানের ক্যামিওতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০৪ রান তুলেছে ভারত। দ্বিতীয় দিন ৪ উইকেটে আরও ১২৬ রান যোগ করেছে তারা। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৪টি করে উইকেট।
জবাবে প্রথম ইনিংসে চা-বিরতির আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার নাজমুল হোসেন ও তিনে আসা ইয়াসির আলীর উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। ২৬ বলে ২৪ রান করা লিটনের সঙ্গী ১৬ বলে ৯ রান করা জাকির হাসান। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ এখন পিছিয়ে ৩৬৭ রানে।
বাংলাদেশ প্রথম ধাক্কা খায় ইনিংসের প্রথম বলেই। মোহাম্মদ সিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটকিপার ঋষভ পন্তের হাতে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন। এ নিয়ে ১৩তম বার কোনো বাংলাদেশ ওপেনার ‘গোল্ডেন ডাক’ পেলেন। তবে ইনিংসের প্রথম বলেই কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের আউট হওয়ার ঘটনা এর আগে ছিল সাতটি। উমেশ যাদবের করা দ্বিতীয় ওভারে শরীর থেকে দূরে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে আনেন ইয়াসির।
দ্রুত ২ উইকেট হারানোর চাপ অবশ্য আক্রমণে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এরপর লিটন দাস ও অভিষিক জাকির হাসান। অষ্টম ওভারে উমেশকে টানা দুটি চার মেরেছেন লিটন, পরের ওভারে অশ্বিনকে ৩ বলের মধ্যে ২টি মেরেছেন জাকির। বিরতির ঠিক আগে উমেশকে টানা তিন চার মেরেছেন লিটন।
এর আগে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ পায় শুধু শ্রেয়াস আইয়ারের উইকেট। আগের দিন ইবাদতই ফেলেছিলেন শ্রেয়াসের সহজতম ক্যাচ, ইবাদতের বল স্টাম্পে লাগলেও বেঁচে গিয়েছিলেন বেল না পড়াতে। আজ সেই ইবাদতের বলেই আরেকবার বেঁচে যান ডিপ ফাইন লেগে লিটন দাস ক্যাচ ফেলায়। শ্রেয়াস তবুও সেঞ্চুরির দেখা পাননি, থেমেছেন ১৪ রান দূরেই। আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে মাত্র ৪ রান যোগ করেই ফেরেন তিনি।
শ্রেয়াসকে ফিরিয়ে আরেকবার ভারতকে আগেভাগেই আটকে দেওয়ার সম্ভাবনা ভালোভাবেই তৈরি করে বাংলাদেশ। তবে অশ্বিন ও ‘প্রমোশন’ পাওয়া কুলদীপ হতাশ করে গেছেন স্বাগতিকদের। ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শুরু করেছিলেন তাঁরা। শিগগির ভাঙেনি সেটি। তাইজুলকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছয় মেরে ৪৯ রানে যাওয়া অশ্বিন ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি পান ঠিক পরের বলেই, সিঙ্গেল নিয়ে।
অশ্বিন-কুলদীপের জুটি অবশেষে ভেঙেছে মিরাজের বলে। তাঁকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন অশ্বিন, যেটি অনেকটা সময় নিয়ে করেছেন নুরুল। অষ্টম উইকেট জুটিতে উঠেছে ৯২ রান, বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের যেটি সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ড ছিল অজিত আগারকার ও সুনীল যোশির ৫৬ রান, ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো দলেরই অষ্টম উইকেটে এর চেয়ে বেশি রানের জুটি আছে চারটি।
অশ্বিনের ঠিক পরের ওভারেই ফেরেন কুলদীপও। ১১৪ বলে ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৪০ রান করে তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউ হন এ বাঁহাতি। উমেশ যাদবকে ক্যাচ বানিয়ে ইনিংস শেষ করেন মিরাজ। এর আগে অবশ্য উমেশ মারেন ২টি ছক্কা। মিরাজ ৪ উইকেট নেন ১১২ রানে, তাইজুল খরচ করেন ১৩৩ রান। দ্বিতীয় দিন বোলিংয়ে আসেননি সাকিব আল হাসান। দিনে সব মিলিয়ে চারটি রিভিউ করেছিল বাংলাদেশ, ব্যর্থ হয়েছে সব কটিই। দুটিতে অবশ্য ছিল আম্পায়ার্স কল।