বাবর আজম (ডানে) ও শাহিন আফ্রিদি
বাবর আজম (ডানে) ও শাহিন আফ্রিদি

বাবর-শাহিন বিরোধ নিয়ে ওয়াহাব, ‘...যেন ওরা একে অপরকে মেরেই ফেলত’

পাকিস্তান দলের ভেতরে বিভেদ, বিরোধের খবর নতুন কিছু নয়। এবার সেটা বেশ চাউর হয়েছে অধিনায়ক বদলের ঘটনায়। মার্চের শেষ সপ্তাহে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদিকে সরিয়ে বাবর আজমের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিয়েছে পিসিবি। এর সঙ্গে যুক্ত হয় শাহিনের নামে চালিয়ে দেওয়া পিসিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও ইনস্টাগ্রামে শাহিনের ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট।

সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবর-শাহিনের বিরোধের আলোচনা বেশ চাঙা হয়ে ওঠে। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম নির্বাচক ওয়াহাব রিয়াজ বলেছেন, দুই ক্রিকেটারকে ঘিরে চারদিকে এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যে তাঁরা বুঝি একে অপরকে মেরেই ফেলবেন।

পিসিবি যখন বাবর আজমকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ঘোষণা করে, পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ২৯ ক্রিকেটার তখন কাকুলের সামরিক একাডেমিতে ক্যাম্প করছিলেন। ১১ দিনের ক্যাম্প চলাকালেই পিসিবি বিবৃতি দিয়ে জানায়, শাহিন নতুন অধিনায়ক বাবরকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করবেন বলে মন্তব্য করেছেন। তবে শাহিনের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, পিসিবি নিজেদের মনগড়া কথা বিবৃতিতে জুড়ে দিয়েছে।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি ক্যাম্পে খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা করে আসার পর বোর্ড যে ছবি প্রকাশ করে, সেখানে নাকভির সঙ্গে করমর্দনরত শাহিনকে জোর করে মুখে হাসি আনার চেষ্টা করতে দেখা যায়। গুঞ্জনের পালে হাওয়া লাগে শাহিন ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করলে, যেখানে বলতে শোনা যায়, ‘ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ো না, কতটা নির্মম হতে পারি ভাবতেও পারবে না।’

পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রশিদ লতিফ, রমিজ রাজাও শাহিনকে এক সিরিজ পরই নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা তাঁকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গনে আলোচিত হয়ে ওঠা বাবর-শাহিন বিরোধের গুঞ্জনের প্রসঙ্গটি ওঠে মঙ্গলবার পাকিস্তানের নিউজিল্যান্ড সিরিজের দল ঘোষণার সময়ও। নির্বাচক ও সাবেক ক্রিকেটার ওয়াহাব দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকার ঘটনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে, ‘আশপাশে প্রচুর গুঞ্জন। এসব আমাদের কারণেই তৈরি হচ্ছে। বিষয়গুলো পরিষ্কার না করলে বিরোধের কথা বলে একেকজন তাঁর মতামত দিতে থাকেন। এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল যে আমরা (দল নিয়ে) যদি কাকুলে না যেতাম, ওরা একে অপরকে মেরেই ফেলত।’

ক্যাম্পের সময় অধিনায়কত্বে বদল এলেও এ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান ওয়াহাব, ‘আমরা সেখানে যে পরিবেশ দেখেছি, এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। সবাই একসঙ্গে ইফতার করেছে, ইনডোর গেমসে অংশ নিয়েছে, খেলা দেখেছে, ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করেছে। এ ধরনের (অন্তর্দ্বন্দ্ব) খবর ছড়ানোর আগে আমাদের অন্য দিকগুলোর দিকেও তাকানো উচিত।’

শাহিনকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওয়াহাব বলেন, ‘শাহিন আফ্রিদি আমাদের প্রধান বোলার এবং পাকিস্তানের ব্র্যান্ড নেম। বড় টুর্নামেন্টে দলের জন্য ওকে চনমনে এবং চাপহীন পাওয়া দরকার।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের পাঁচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ১৮ এপ্রিল। ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্বকাপের দল ঠিক করে ফেলবেন বলে জানান ওয়াহাব।