জাতীয় দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা, এশিয়া কাপের আগে সিলেটে অনুশীলনে
জাতীয় দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা, এশিয়া কাপের আগে সিলেটে অনুশীলনে

সাক্ষাৎকারে নিগার সুলতানা

‘প্রত্যাশাই নতুন স্বপ্ন দেখায়’

দল ভালো করছে, রান পাচ্ছেন নিজেও। ২০২৩ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব জিতে এসে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার লক্ষ্য এবার এশিয়া কাপ জয়। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে কাল শুরু হতে যাওয়া সাত দলের টুর্নামেন্টের আগে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে কথাই বলেছেন নিগার সুলতানা—

প্রশ্ন

আপনার দল টানা জয়ের মধ্যে থেকে এশিয়া কাপ খেলতে যাচ্ছে। অধিনায়ক হিসেবে বিষয়টি নিশ্চয়ই স্বস্তির...

নিগার সুলতানা: দল যখন ভালো করে তখন সেটার চেয়ে স্বস্তিদায়ক আর কিছু হতে পারে না। অধিনায়ক হিসেবে আমার বিশ্বাস, দলটা এশিয়া কাপের আগে খুব ভালো একটা জায়গায় আছে। আর এই দল অনেক দিন ধরে একসঙ্গে খেলছে। তাই আমাদের বোঝাপড়াও বেশ ভালো। দিনে দিনে আমরা পারফরম্যান্সে ভালো উন্নতি করেছি। দলটা ঐক্যবদ্ধ, সবাই ভালো করার জন্য মুখিয়ে আছে।

প্রশ্ন

এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রত্যাশার চাপ কতটা অনুভব করছেন?

নিগার: আমি মনে করি, মানুষের প্রত্যাশা কখনো চাপ নয়। কারণ, প্রত্যাশাই নতুন স্বপ্ন দেখায়। এখন সবাই এশিয়া কাপ নিয়ে ইতিবাচক আছে। আমি এবারও টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখব। দেশের মাটিতে এশিয়া কাপ, আমাদের চেষ্টা থাকবে আমরা যেন ঘরের মাটিতে ট্রফি রাখতে পারি।

প্রশ্ন

ভারত বরাবরই এশিয়া কাপের ফেবারিট দল। এবারও ইংল্যান্ড থেকে তারা আসছে সিরিজ জিতে। ভারতের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?

নিগার: শুধু ভারতকেই কিন্তু ভালো দল বলা যাবে না। শ্রীলঙ্কা আছে, পাকিস্তান আছে। থাইল্যান্ডও টি-টোয়েন্টিতে ভালো ক্রিকেট খেলছে। বাকি যে দুই দল আছে, তারাও খারাপ করছে না। টি-টোয়েন্টিতে কখন কী হয়ে যায় আপনি বলতে পারবেন না। নির্দিষ্ট দিনে যারা ভুল কম করে, তারাই কিন্তু জিতবে। আমি নিজেদের ফাইনালে দেখতে চাইব। তারপর যে-ই আসুক না কেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

প্রশ্ন

ব্যক্তিগতভাবে আপনি ভালো ছন্দে আছেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ছিলেন...

নিগার: ব্যাটিং নিয়ে কোচদের সঙ্গে কাজ করেছি। বিশেষ করে এই সংস্করণে কীভাবে দ্রুত রান করা যায় এবং লম্বা ইনিংস খেলা যায়, সেসব নিয়ে। আমি অনেক দিন ধরেই ভালো ছন্দে আছি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও কিছু রান করেছি, যেটা আমাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। জাতীয় লিগ এবং প্রস্তুতি ম্যাচেও রান করেছিলাম। আশা করি, এশিয়া কাপেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব।

‘আমি অনেক দিন ধরেই ভালো ছন্দে আছি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও কিছু রান করেছি, যেটা আমাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।’
প্রশ্ন

দলের ব্যাটিং নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা ছিল। টপ অর্ডার থেকে ধারাবাহিকভাবে রান আসা কতটা স্বস্তির?

নিগার: টি-টোয়েন্টিতে টপ অর্ডারের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কারণ, ওপরের দিকে তিন-চারজন ব্যাটার যখন রান করে দেবে তখন মিডল অর্ডার বা ফিনিশারদের দ্রুত রান তোলা সহজ হয়ে যায়। এটা দলের জন্য ভালো। যারা টপ অর্ডারে খেলছে তারা এখন ভালো অবস্থায় আছে।

প্রশ্ন

বাংলাদেশের মূল শক্তি তো বোলিং। ধারাবাহিক জয়ের পেছনে বোলিংয়ের অবদান কতটা দেখেন?

নিগার: আমাদের বোলিং আসলে সব সময়ই প্রশংসার দাবিদার। কারণ, বোলাররা সব সময় পারফর্ম করে যাচ্ছে। এটা আমাদের শক্তির জায়গা। আগে দেখতাম ব্যাটাররা ভালো রান করতে পারছে না বলে বোলাররা যত ভালো বলই করুক না কেন, আমরা ম্যাচগুলো হেরে যাচ্ছি। সেটা কিন্তু এখন আর হচ্ছে না। এটা দলের বড় অর্জন। এই ফরম্যাটে যদি ভালো স্কোর দাঁড় করানো যায়, যদি ১৪০–এর বেশি রান করা যায় তাহলে আমাদের যে বোলিং-ফিল্ডিং আছে, প্রতিপক্ষ দলের জন্য সেটা তাড়া করা কঠিন হবে।

প্রশ্ন

এশিয়া কাপে চমক দেখাতে পারেন কে?

নিগার: অনেকের নামই বলা যায়। তবে ধারাবাহিকভাবে ভালো করে যাচ্ছে সানজিদা আখতার। খুবই ভালো বোলিং করছে ও। হয়তো খুব বেশি উইকেট নিচ্ছে না, কিন্তু ইকোনমিক্যাল বোলিং করেছে। আশা করি, সে এই এশিয়া কাপেও ভালো করবে। ব্যাটারের নাম বলতে হলে বলব ফারজানা হকের কথা। সে ভালো করতে পারলে প্রতিপক্ষের জন্য ম্যাচ জেতা কঠিন হবে।