স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫ উইকেটে ১৪৫ রান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রাতের ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এ রান যথেষ্ট হবে তো? প্রতিপক্ষ যখন অভিজ্ঞতায় ঠাসা ফরচুন বরিশাল, তখন শঙ্কাটা স্বাভাবিকই। কিন্তু আল আমিন হোসাইন, শহীদুল ইসলামরা তা উড়িয়ে দিলেন নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। রান তাড়ার শুরুতেই বরিশালের ৩ উইকেট তুলে নিলে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি তামিমরা। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১২৯ রানে থেমেছে বরিশাল। ১৬ রানের জয়ে বিপিএলে পয়েন্ট তালিকায় দুইয়ে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম।
রান তাড়ায় যেমন শুরু দরকার, তা পায়নি বরিশাল। পাওয়ার প্লেতেই চট্টগ্রামের আল আমিন হোসাইনের বোলিং বিপদে ফেলে চট্টগ্রামকে। আহমেদ শেহজাদ, সৌম্য সরকারকে আউট করেন তিনি। ওমানের বিলাল খানের বলে আউট হন ফর্মে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ২৯। তামিম ও মুশফিকুর রহিম ৩৯ রানের জুটি গড়ে সে ধাক্কাটা সামলে নেন। তবে দুজনের জুটিটি এসেছে ৩৫ বলে। স্বাভাবিকভাবেই দুজনের মন্থর ব্যাটিং বরিশালের চাপ বাড়িয়েছে।
মুশফিক ও তামিম বাউন্ডারি মেরে চাপ সরাতে চেয়েছেন। কিন্তু মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন দুজনই। সৈকত আলীর মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে মুশফিক ক্যাচ তোলেন ১৩ বলে ৯ রান করে। তামিম এবারের বিপিএল তাঁর সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেছেন ৪৬ বলে। ৪টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল তাঁর ১০৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে।
শেষ ৪ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের দরকার ছিল ৫০ রান। দুই অভিজ্ঞ ফিনিশার মাহমুদউল্লাহ ও শোয়েব মালিক ক্রিজে থাকার পরও জিততে পারেনি বরিশাল। মালিক ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হয়েছেন। মাহমুদউল্লাহর ৩ রান এসেছে ৮ বলে। চোট থেকে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ১৮ বলে অপরাজিত ৩০ রান করে বরিশালের রানটাকে নিয়ে যান ৮ উইকেটে ১২৯–এ। শহীদুল সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন, আল আমিন ২টি।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং মানেই বিদেশি আধিপত্য। এ দলে স্থানীয়দের দায়িত্ব শুধু পার্শ্বনায়কের। আজ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষেও তা-ই দেখা গেল। উদ্বোধনে নামা তানজিদ হাসান ধরে খেললেন। আভিস্কা ফার্নান্ডোর জায়গায় বিপিএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা অস্ট্রেলীয় ওপেনার জশ ব্রাউন দায়িত্ব নিলেন মেরে খেলায়। দুজনের উদ্বোধনী জুটি থেকে এসেছে ৩৯ রান। এর মধ্যে তানজিদের ১০ রান এসেছে ১৯ বলে। অন্যদিকে ব্রাউন ১ চার ও ৪ ছক্কায় ২৩ বলে করেছেন ৩৮ রান, স্ট্রাইক রেট ১৬৫।
বিগ ব্যাশ কাঁপিয়ে আসা ব্রাউনের সৌজন্যে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে দাপট দেখিয়েছে চট্টগ্রাম। কিন্তু মাঝের ওভারে ঘুরে দাঁড়ায় বরিশাল। নিউজিল্যান্ডের টম ব্রুস এ সময় টিকে থাকলেও দ্রুত রান আসছিল না। চট্টগ্রাম দলে দ্রুত রান তোলার দায়িত্বটা আফগান নজিবউল্লাহ জাদরানের। কিন্তু আজ তিনি ২ বলে ৪ রান করে।
নজিবউল্লাহ আউট হওয়ায় ডেথ ওভারে দ্রুত রান পায়নি চট্টগ্রাম। তবে ব্রুস টিকে থাকায় রক্ষা, তাঁর ৪০ বলে ৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস চট্টগ্রামের রানটাকে দেড় শর কাছাকাছি নিয়ে যায়। পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইমরান ছিলেন বরিশালের সেরা বোলার। তিনি ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৪৫/৫ (ব্রুস ৫০*, ব্রাউন ৩৮, শাহাদত ১৫, তানজিদ ১০; ইমরান ২/৩১, সাইফউদ্দিন ১/২৪, আফ্রিদি ১/২৬, তাইজুল ১/২১)
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১২৯/৮ (তামিম ৪৯, সাইফউদ্দিন ৩০*, শেহজাদ ১৬, মালিক ১৪, মুশফিক ৯ ; শহীদুল ৩/১৩, আল–আমিন ২/৩১, বিলাল ১/২১, সৈকত ১/২৮, নিহাদুজ্জামান ১/২৪)
ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: শহীদুল ইসলাম (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)