পাকিস্তানের অধিনায়ক হওয়াটাই যেন ক্রিকেটের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ চাকরি। দল ব্যর্থ হলেই প্রতি সিরিজ শেষেই শোনা যায় অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারের পর শান মাসুদ ও বাবর আজমের জায়গায় মোহাম্মদ রিজওয়ানকে তিন সংস্করণের অধিনায়ক করার গুঞ্জন শোনা গেছে।
তবে এবার মিলেছে অন্য খবর। পিসিবির সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বাবর ও শান মাসুদকে আরও সময় দিতে চান পাকিস্তান দলের দুই কোচ গ্যারি কারস্টেন ও জেসন গিলেস্পি।
পাকিস্তানের অধিনায়ক নিয়ে এত কথা হওয়ার কারণ মূলত দলের ব্যর্থতা। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে লিগ পর্ব থেকেই দলটি বিদায় নেওয়ার চাপে বাধ্য হয়ে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাবর।
এরপর আবার অনুরোধ করে সাদা বলের সংস্করণে পাকিস্তান অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে বাদ পড়ে প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ার আবারও শুরু হয় গুঞ্জন।
আর টেস্ট অধিনায়ক শান মাসুদের শুরুটা হয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩-০ তে সিরিজ হেরে। সিরিজটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হওয়ায় এই নিয়ে সমালোচনা কমই হয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ধবলধোলাইয়ের পর দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যায়। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন শান মাসুদ। মাসুদের টেস্ট ক্যারিয়ারও খুব একটা ভালো নয়। টেস্টে গড়টা এখনো ৩০-এর নিচে—২৮.৫৩। তবে আপাতত কোচদের কথাতে কিছুটা নির্ভার হতে পারেন দুজনই।
বোর্ডের সূত্রের বরাতে পিটিআই এমন উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘অধিনায়কত্ব পরিবর্তন নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি অধিনায়কত্ব নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার দুই কোচ ও নির্বাচকদের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। শান মাসুদ ও বাবর আজম কেমন অধিনায়ক সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে তাদের লম্বা সময় দেওয়ার বিষয়ে দুই কোচ একমত।’
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পিসিবির পক্ষ থেকে কানেকশন বা সংযোগ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। যে ক্যাম্পের মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের পর্যালোচনা করা। এখানে পাকিস্তানের দুই কোচ গ্যারি কারস্টেন, জেসন গিলেস্পিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। থাকবেন পিসিবি চেয়ারম্যানসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা।
সাদা বলের অধিনায়ক বাবর ও লাল বলের অধিনায়ক শান মাসুদসহ থাকবেন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা। এই ক্যাম্পেও অধিনায়কত্ব ইস্যুতে কোনো আলোচনা হবে না বলে নিশ্চিত করেছে বোর্ডের সেই সূত্র, ‘সব স্টেকহোল্ডারদের মতামতের জন্যই কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে, বিশেষ করে ঘরোয়া দলগুলোর কোচ, নির্বাচক ও কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের। এর উদ্দেশ্য ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানের পার্থক্য কমিয়ে আনা।’
ক্যাম্পে অনলাইনে যুক্ত হতে পারেন গিলেস্পি। আর কারস্টেন সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। এরা দুজনই পিসিবি চেয়ারম্যানকে দীর্ঘ মেয়াদে ফল পাওয়ার জন্য ধৈর্য ও পলিসি পরিবর্তন না করার জন্য কথা জানিয়েছেন।