এসএলসির সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান ফার্নান্দো
এসএলসির সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান ফার্নান্দো

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট প্রশাসকদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বললেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী

শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী দেশের শীর্ষ ক্রিকেট প্রশাসকদের আজ ‘বিশ্বাঘাতক ও দুর্নীতিপরায়ণ’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। এর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের অফিশিয়ালদের সঙ্গে সরকারের বিরোধ নতুন মাত্রা পেল।

শ্রীলঙ্কার ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট বোর্ডই (এসএলসি) সবচেয়ে ধনী। দুর্নীতির অভিযোগে কয়েক মাস ধরে এসএলসির সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান ফার্নান্দো। এ০ বিরোধের কারণে শ্রীলঙ্কাকে নিষিদ্ধ করতে পারে আইসিসি। তাতে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ হারাতে পারে শ্রীলঙ্কা। রোশান ফার্নান্দো বলেছেন, ‘অর্থের পেছনে ছোটা কিছু মানুষের কারণে খেলাটির চেতনা চাপা পড়েছে। আমি মনে করি, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের প্রতি বর্তমান ক্রিকেট অফিশিয়ালরা লজ্জাহীন, বিশ্বাসঘাতক ও অবিশ্বস্ত।’

গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা ২৬০ পাতার সরকারি নিরীক্ষায় (অডিট) তুলে ধরা হয়েছে। ক্রিকেট প্রশাসনে অসদাচরণের তদন্তে ক্রীড়ামন্ত্রী তিন সদস্যের একটি প্যানেল নিয়োগ দিয়েছেন।

আইসিসিকে পাঠানো একটি চিঠিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। ক্রিকেট বোর্ডের মন্ত্রীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে এর আগে আইসিসি এসএলসিকে নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিল। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা ২৬০ পাতার সরকারি নিরীক্ষায় (অডিট) তুলে ধরা হয়েছে। ক্রিকেট প্রশাসনে অসদাচরণের তদন্তে ক্রীড়ামন্ত্রী তিন সদস্যের একটি প্যানেল নিয়োগ দিয়েছেন। এসএলসির প্রশাসকদের থেকে অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে এবং তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতিও জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে আইসিসির নিয়মবালিকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়েছেন এসএলসির প্রশাসকেরা। ফার্নান্দো এরপর তদন্ত প্রত্যাহার করে নেন।

এবারের বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে দুটিতে জিতেছে শ্রীলঙ্কা

দুর্নীতি মোকাবিলায় আইসিসির সাহায্য চেয়ে পাঠানো চিঠিতে শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী বলেছেন, সরকারি নিরীক্ষার পরও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অফিশিয়ালদের স্বপদে থাকাটা তাঁদের অনৈতিক ও লজ্জাহীন আচরণের পরিষ্কার বহির্প্রকাশ। ম্যাচ পাতানো ও ঘুষের অভিযোগে অনেক দিন ধরেই জর্জরিত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। আইসিসি এর আগে কিছু অফিশিয়াল ও খেলোয়াড়কে শাস্তিও দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কা ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছে। কিন্তু তারপর আর ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের মান পড়ে যাওয়ার জন্য বোর্ডকে দুষেছেন ফার্নান্দো। শ্রীলঙ্কার আইন সভায় গত আগষ্টে আরেকজন মন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গা বলেছিলেন, ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয় ছিল ‘অভিশাপ’ এবং তা দুর্নীতিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। প্রসন্ন রানাতুঙ্গা ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার ছোট ভাই। প্রসন্ন বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপ জয় ছিল আমাদের ক্রিকেটের জন্য বড় অভিশাপ। ১৯৯৬ সালের পর ক্রিকেট বোর্ডে টাকা উড়তে শুরু করে এবং তারপর টাকা চুরি করতে চাওয়া লোকজনও এসেছে।’