গৌতম গম্ভীর নিজের নামের মতোই গম্ভীর। মুখে হাসি দেখা যায় না বললেই চলে। একটু হাসার চেয়ে এখনো মাঠে নেমে প্রিয় ইনসাইড আউট খেলাটাই বোধ হয় গম্ভীরের জন্য সহজ কাজ।
ভারতের বিদায়ী কোচ রাহুল দ্রাবিড় এক বার্তায় গম্ভীরকে এ কঠিন কাজই করতে বলেছেন। কষ্ট হলেও যেকোনো পরিস্থিতি মুখে হাসিটা রাখতে বলেছেন ভারতকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো এই কোচ।
চুক্তি নবায়ন না করায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে দ্রাবিড়ের। তাঁরই স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন গম্ভীর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ শুরু হবে ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজ, যেটি হতে যাচ্ছে গম্ভীরের অধীন ভারতের প্রথম। এর আগে বিসিসিআই প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় গম্ভীরকে শুভকামনার সঙ্গে উপদেশও দিয়েছেন দ্রাবিড়। তাঁর কাছ থেকে এমন বার্তা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়েছেন গম্ভীরও।
গম্ভীরের উদ্দেশে দ্রাবিড় বলেছেন এভাবে, ‘সতীর্থ হিসেবে দেখেছি, কীভাবে মাঠে তুমি সর্বোচ্চটা দাও। ব্যাটিং সঙ্গী হিসেবে, একসঙ্গে ফিল্ডিং করার সময়ে আমি তোমার দৃঢ়তা ও হার না মানা মানসিকতা দেখেছি। আইপিএলের মৌসুমগুলোতে তোমার জেতার ক্ষুধা চোখে পড়েছে, কীভাবে তুমি তরুণ খেলোয়াড়দের সাহায্য করেছ, দলের থেকে সর্বোচ্চটা বের করে নাও, তা দেখেছি। আমি জানি, ভারতের ক্রিকেট নিয়ে তুমি কতটা নিবেদিত, আবেগপ্রবণ। আমি নিশ্চিত নতুন দায়িত্বে তুমি তোমার সামর্থ্যকে কাজে লাগাবে।’
ক্রিকেটে ভারতীয় দলকে কোচিং করানো কঠিন কাজগুলোর একটি। এর বড় কারণ দলটিতে ঘিরে সে দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রত্যাশা। এই দিকটি গম্ভীরকে মনে করিয়ে দিয়েছেন দ্রাবিড়, ‘এটা তুমি জানো, প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকবে। কাটাছেঁড়াও অনেক বেশি হবে। কিন্তু খুব খারাপ সময়েও তুমি একা থাকবে না, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফসহ সংশ্লিষ্ট সবাই পাশেই থাকবে।’
গত মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জেতার পর ভাগ্যের সহায়তার কথা বলেছিলেন দ্রাবিড়। গম্ভীরেরও ভাগ্য প্রসন্ন হোক, সেটাই প্রত্যাশা করছেন দ্রাবিড়। তিনি বলেছেন, ‘তুমি কিছুটা ভাগ্যবানও যেন হও, সেই প্রত্যাশাও করি। তুমি জানো, আমরা কোচরা যতটা না স্মার্ট ও বুদ্ধিমান তার চেয়ে বেশি দেখানোর দরকার হয়।’
গম্ভীরকে হাসার উপদেশ দিয়ে দ্রাবিড় বলেছেন, ‘কাজটা যদি তোমার জন্য কঠিনও হয় তবু হেসো। ফল যাই হোক না কেন, এটা মানুষকে অবাক করবে।’
দ্রাবিড়ের এমন বার্তায় আবেগ ছুঁয়েছে গম্ভীরকেও। তিনি বলেছেন, ‘সাধারণত আমি আবেগপ্রবণ হই না। কিন্তু আমার মনে হয় এই বার্তা আমাকে অনেক আবেগপ্রবণ করে তুলেছে, যেটা সাধারণত হওয়ার কথা না। দারুণ একটা বার্তা। ভারতের ক্রিকেটে যা প্রয়োজন ছিল, রাহুল ভাই সেটাই করেছেন। আমার মনে হয়, তার কাছে থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। শুধু আমার না, বর্তমান ও পরবর্তী দুই প্রজন্মেরই অনেক কিছু শেখার আছে।’
গম্ভীর আরও বলেছেন, ‘জানি না কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব। কারণ, এটা আমার কাছে অনেক বড় কিছু। এটা এমন একজনের কাছ থেকে এসেছে, যার পথ আমি অনুসরণ করেছি, সে কারণে নয়। কারণটা হলো, যখন খেলেছি, তখন সবচেয়ে বেশি তাকেই সম্মান করেছি। আমি মনে করি, অনেক সাক্ষাৎকারেও বলেছি, আমি যাদের সঙ্গে খেলেছি, তার মধ্যে তিনি সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার।’