অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জয়ের পর
অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল জয়ের পর

চক্রপূরণের পর কামিন্স বললেন, ‘টেস্ট জয়ই সবচেয়ে তৃপ্তির’

১৯৮৭ সালের ৮ নভেম্বর ইডেন গার্ডেনসে চতুর্থবারের চেষ্টায় ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে বিশ্বকাপকে এরপর এক রকম নিজেদের সম্পত্তিই বানিয়ে ফেলেছিল তারা। ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭—পরপর তিনবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৮ সালে শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অবশ্য প্রথমবার তারা জেতে ২০০৬ সালে গিয়ে। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষা অস্ট্রেলিয়ার পূরণ হয় ২০২১ সালে। বাকি ছিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরে ওভার রেট পেনাল্টির হিসাবে শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলা হয়নি। সে আক্ষেপ ঘুচতে খুব লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হলো না অস্ট্রেলিয়াকে, ঠিক পরের আসরে ফাইনালে এসেই চ্যাম্পিয়ন তারা। পুরুষ ক্রিকেটের প্রথম দল হিসেবে আইসিসির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব শিরোপাই জেতা হয়ে গেল দলটির। পুরুষ ক্রিকেটে তাই অস্ট্রেলিয়ার অপূর্ণতা বলে আপাতত কিছু নেই।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এ ধারণা তুলনামূলক নতুন। সেটিও হচ্ছে এমন সময়ে, যখন নানামুখী চাপে এ সংস্করণের ভবিষ্যই পড়ে গেছে শঙ্কায়। তবে ফাইনাল জেতার পর অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স আরেকবার বললেন, সবচেয়ে তৃপ্তিটা তাঁরা পান এ সংস্করণে জিতেই।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া

২০২১ সালে প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এবারও তাসমানপারেই যাচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গদা। ওভালে পাঁচ দিনজুড়েই দর্শক সমাগম ছিল লক্ষণীয়, যদিও ভারতীয় সমর্থকদের সংখ্যায় অস্ট্রেলিয়ানরা পাত্তা পায়নি সেভাবে।

এমন ফাইনালে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য কেমন তাৎপর্যপূর্ণ, ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালক অ্যালিসন মিচেলের এমন এক প্রশ্নের জবাবে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার কথাটাই আরেকবার বলেছেন কামিন্স, ‘এটি আমাদের প্রিয় সংস্করণ। আমরা টেস্ট ক্রিকেট দেখেই বেড়ে উঠেছি। এটি আপনাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে। যখন জিতবেন, এ সংস্করণে জিতেই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তিটা পাওয়া যায়। আমরা টেস্ট খেলতে ভালোবাসি।’

ফাইনালে ভারত মাঝে মাঝেই লড়াই করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে, তবে প্রথম দিন থেকেই এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। ক্যাচ মিস, নো বলে উইকেট হারিয়েও তাই শেষ হাসি তাদেরই। কামিন্স বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে এগিয়ে এসেছে তাঁর দল, ‘প্রথম দিনের শেষেই মনে হয়েছে আমরা এগিয়ে ছিলাম। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা ভালো খেলেছি। বেশির ভাগ সময় আমাদেরই নিয়ন্ত্রণ ছিল।’

প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রানের ইনিংসে ম্যাচসেরা হয়েছেন ট্রাভিস হেড। তাঁর প্রশংসা তো করেছেনই, তবে কামিন্স আলাদা করে বলেছেন স্কট বোল্যান্ডের কথাও। জশ হ্যাজলউড ফিট থাকলে এ টেস্টে খেলারই কথা ছিল না বোল্যান্ডের। তবে অ্যাশেজের আগে দুর্দান্ত বোলিংয়ে একটা বার্তাই দিয়েছেন এ পেসার। তাঁকে নিয়ে কামিন্স বলেছেন, ‘বোল্যান্ড—আমার প্রিয় খেলোয়াড়। সে আমার প্রিয় খেলোয়াড় হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। তবে সবাই নিজেদের ভূমিকা সত্যিই ভালোভাবে পালন করেছে।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের উদ্‌যাপন অবশ্য খুব একটা দীর্ঘ হবে না অস্ট্রেলিয়ার। ১৬ জুন থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজ। লম্বা সে সিরিজের আগে অবশ্য টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের উদ্‌যাপনের সুযোগটা হাতছাড়া করতে চান না অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক, ‘অ্যাশেজে মনোযোগ ঘোরানোর আগে এ উপলক্ষটা কয়েক দিন ধরে রাখতে চাই।’