টেস্টে বাংলাদেশের বছর শুরু হয়েছিল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ঐতিহাসিক জয়ে। এ বছর এ সংস্করণে সে জয় বাদ দিলে বাংলাদেশের চিত্রটি বিবর্ণই। এরপর খেলা সাত টেস্টের ছয়টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ, ড্র করেছে একটি।
বছর শেষে প্রতিপক্ষ ভারত আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় দল। প্রথম টেস্টটি তাদের সঙ্গে আবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে, যে মাঠের উইকেট বরাবরই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় ব্যাটসম্যানদের দিকে। দল হিসেবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্যই থাকবে ম্যাচ পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়া, এমনই জানিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ।
এ বছর যে একটি টেস্ট বাংলাদেশ ড্র করেছে, সেটি এ মাঠেই। গত মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটিং ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। তবে এমন উইকেটে বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, চেতেশ্বর পূজারা, ঋষভ পন্তের বিপক্ষে বোলারদের কাজটা মোটেও সহজ হবে না, সেটি জানেন তাসকিন।
পেসারদের কাজ কতটা কঠিন, এমন প্রশ্নের জবাবে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানালেন তাসকিন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে চট্টগ্রামই একমাত্র মাঠ, যেটিকে ব্যাটিং–স্বর্গ বলা যেতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটে পেস বোলারদের জন্য কখনই সহজ হয়নি (উইকেট)। যদিও আল্লাহর রহমতে উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু কখনোই কিন্তু আমরা সহায়ক উইকেট পাইনি। বেশির ভাগ কন্ডিশনে আমাদের সঙ্গে ব্যাটিং ট্র্যাকই বানানো হয়। এটা আমাদের জন্য সব সময় চ্যালেঞ্জিং। ভালো দিক যে উন্নতি করছি। আমরা যতগুলো টেস্ট জিতেছি, দেখা গেছে পঞ্চম দিনে খেলা নিয়ে গেছি। এখানে লক্ষ্য থাকবে—যত ভালো উইকেটই থাকুক, পঞ্চম দিনে যেতে পারলে ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যায়।’
এমন উইকেটে টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার দিকেই আপাতত মনোযোগ তাঁদের, ‘ম্যাচ তো এখনো শুরু হয়নি। চাইব যে পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়ন করতে পারি। ১১০ শতাংশ দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। পঞ্চম দিন পর্যন্ত গেলে ভালো কিছু হওয়ার চেষ্টা থাকবে। সেটিই লক্ষ্য থাকবে—পাঁচ দিন খেলা।’
ফ্ল্যাট উইকেটে বোলিংয়ে ‘বেসিক’ ঠিক রাখাই গুরুত্বপূর্ণ, তাসকিন মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘বেসিক জিনিসটাই ঠিক রাখতে হবে। যেহেতু তেমন কিছু থাকবে না। ডিসিপ্লিন বোলিং, পুরোনো বলে রিভার্স সুইংয়ের চেষ্টা (ছাড়া কিছু করার নেই)। আমরা যদি শৃঙ্খলা ও ধৈর্য নিয়ে বোলিং করি, ভালো কিছু করার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
সংস্করণ যখন টেস্ট, বাংলাদেশ তখন খুব একটা স্বস্তিতে থাকে না বেশির ভাগ সময়ই। তাসকিনও স্বীকার করে নিলেন সেটি, ‘টেস্টে সত্যি কথা বলতে আমাদের পরিসংখ্যান খুব ভালো না। আমরা সবাই জানি, আপনারাও জানেন। আমাদের লক্ষ্য একটাই—উন্নতি করা সব সংস্করণে। আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে ওয়ানডে। টি-টোয়েন্টি, টেস্টেও আমাদের লক্ষ্য উন্নতি। কাজ করছি নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য। এই উইকেটেও বেসিকের বাইরে তেমন কিছু করার নাই।’
তাসকিনের আগে ভারত দলের সংবাদ সম্মেলনে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার বার্তা দিয়ে গেছেন ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিকল্পনা করবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটানোর দিকেই, ‘নির্দিষ্ট দিন ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে পরিকল্পনা আছে, সে সময়ে তা প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি ওরা আগ্রাসী খেলে, আমাদের রক্ষণাত্মক থেকে ওদের ধৈর্য ভাঙতে হবে। সেটি নির্ভর করবে ওরা সে সময়ে কী ধরনের খেলতে চাচ্ছে।’