রংপুরের খেলোয়াড়দের ম্যাচ জয়ের উচ্ছ্বাস
রংপুরের খেলোয়াড়দের ম্যাচ জয়ের উচ্ছ্বাস

বিপিএল

রেকর্ড গড়া রনির ঝড়ে জয়ে শুরু নুরুলদের

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সাবেক চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের প্রত্যাবর্তন হলো বিপিএলে। দিনের প্রথম ম্যাচের মতো লড়াইটা অতটা একপেশে না হলেও রংপুর শেষ পর্যন্ত পেল বড় জয়ই। যে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করা রংপুরের ওপেনার রনি তালুকদার। রংপুরের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কুমিল্লা থেমেছে ১৪২ রানেই।

শিশিরের প্রভাবে সন্ধ্যার ম্যাচটিতে ব্যাটিং তুলনামূলক সহজ, বিপিএলে এর আগেও দেখা গেছে এমন। রনির ব্যাটিং দেখে অবশ্য কাজটিকে শুধু সহজ নয়, মনে হচ্ছিল খুব সহজ। টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ নবিকে টানা দুই চার মেরে শুরু করেন রনি, সে ঝড় চলে আরও কিছুক্ষণ।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে অভিষিক্ত আশিকুর জামানকে মারেন টানা চারটি চার, যার মধ্যে তৃতীয়টি দিয়ে ফিফটি হয়ে যায় রনির। মাইলফলকে যেতে তাঁর লাগে মাত্র ১৯ বল। বিপিএলে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটি এটিই। সে সময় অবশ্য কুমিল্লা বোলাররা ক্রমাগত শর্ট লেংথে বল করে গেছেন, স্টাম্পের দুই দিকে রনি জায়গাও পেয়েছেন অনেক।

১৯ বলে ফিফটি করে বিপিএলে নতুন রেকর্ড গড়েছেন রনি তালুকদার

রনির ঝড়ে পাওয়ার প্লেতেই ৬৪ রান তোলে রংপুর, সে সময় তাঁর সঙ্গী মোহাম্মদ নাঈমের রান ছিল ১৫ বলে ৭! রনি অবশেষে থামেন খুশদিল শাহর বলে স্টাম্পিং হয়ে, ৩১ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা।

মাঝের ওভারগুলোতে অবশ্য রানের গতিটা ঠিক ধরে রাখতে পারেনি রংপুর, পাওয়ার প্লের পরের ১০ ওভারে ওঠে মাত্র ৬৪ রান। সে সময়ে ফেরেন ৩৪ বলে ২৯ রান করা নাঈম ও ১০ বলে ১২ রান করা সিকান্দা রাজা। নাঈম শর্ট বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দেন ফজলহক ফারুকির বলে, রাজা ধরা পড়েন মোসাদ্দেকের বলে।

শোয়েব মালিক ও নুরুল হাসান মিলে অবশ্য শেষটা ভালোই করেন, শেষ ৪ ওভার রংপুর তোলে ৩৯ রান। ১৯তম ওভারে রানআউট হওয়ার আগে মালিক করেন ২৬ বলে ৩৩ রান, নুরুল অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১৯ রানে। আশিকুর শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে দেন ৪৭ রান।

ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা বিনিময়

রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ৫১ রান তোলে কুমিল্লা, তবে হারিয়ে ফেলে লিটন দাস ও ডেভিড ম্যালানের উইকেট। দুটি চারে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও লিটন ফেরেন বাঁহাতি স্পিনার রকিবুলকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সিকান্দার রাজার বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের হাতে ক্যাচ দেন মুখোমুখি প্রথম বলেই ছক্কা মারা ম্যালান, যিনি শেষ পর্যন্ত ৯ বলে করেন ১৭ রান।

ওপেনার সৈকত আলী ও পাঁচে আসা মোসাদ্দেক হোসেনের ধীরগতির ব্যাটিং কুমিল্লার চাহিদা মেটাতে পারেনি মোটেও। ২১ বলে ১৬ রান করে রাজার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন সৈকত, বেনি হাওয়েলের বলে নুরুল হাসানের দারুণ স্টাম্পিংয়ের শিকার ২৫ বলে ১৫ রান করা মোসাদ্দেক। এ দুজনের মাঝে ফেরেন ২৩ বলে ৩৫ রান করা ইমরুল কায়েসও।

শেষ ২৪ বলে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ৫৪ রান। তবে সে সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে যায় হাসান মাহমুদ ও রবিউল হকের বোলিংয়ে। মোহাম্মদ নবী, খুশদিল শাহ ফেরেন আগেভাগেই, ১৩ বলে ১৯ রান করা জাকের আলীও করতে পারেননি অসম্ভব কিছু। হাসান ও রবিউল মিলে নেন ৫ উইকেট। হাসান ২০ রানে ৩টি আর রবিউল ২ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রান দিয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৭৬/৫ (রনি ৬৭, মালিক ৩৩, নাঈম ২৯, নুরুল ১৯*; মোসাদ্দেক ১/১৩, খুশদিল ১/২৫, ফারুকি ১/২৮, মোস্তাফিজুর ১/৩১)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৯.১ ওভারে ১৪২ অলআউট (ইমরুল ৩৫, জাকের ১৯, ম্যালান ১৭; হাসান ৩/২০, রাজা ২/২৩, রবিউল ২/৩৩)।

ফল: রংপুর ৩৪ রানে জয়ী।